ভার্সিটির ইংলিশ টিচার যখন স্বামী পর্ব : ০২

নিরা —— তুই না ভয় পাস না।

আফরা —— হ্যা,,,,,,পাই না তো ভয়।আমি কি বলছি আমি ভয় পাচ্ছি।

স্যারের দিকে ক্লাসের সব মেয়েরাই হা করে তাকিয়ে আছে।দেখে মনে হচ্ছে সবাই স্যারের উপর ক্রাশ খাইছে।কিন্তু সবাই এই খাম্বাটার কি দেইখা ক্রাশ খাইলো বুঝতাছে না আফরা।

নিরা —— স্যারটা কি হ্যান্ডসাম তাই নারে,,,,,আমিতো পুরাই ফিদা।

আফরা —— তোর চোখ আছে নাকি গেছে রে?

নিরা —— মানে,,,,,

আফরা —— তোর কোনদিক দিয়ে এইটারে হ্যান্ডসাম মনে হয়।আমার কাছেতো খাম্বার মতো লম্বা লাগে।মূলার মতো সাদা লাগতাছে।চোখ গুলা ট্যাড়া ট্যাড়া লাগতাছে।তোর কি দেইখা এইটারে ভালো লাগলো।

নিরা —— তুই সত্যি কানা।কতো সুন্দর স্যারটারে তুই কি বানাইয়া দিলি।

আফরা —— চুপ করতো তুই।যে যেমন তারে তেমনই বললাম।

তারপর স্যার তার পরিচয় দিলো।স্যারের নাম আশরাফ খান।আরো অনেক কিছুই বলল।এরপর আশরাফ একে একে সবার সাথে কথা বলছে আর পরিচয় নিচ্ছে।এবার আফরার পালা।আফরা বই খুলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।আশরাফ আফরাকে ডাকছে তা আফরা শুনেও না শুনার ভান করে বসে আছে।সবাই আফরার দিকে তাকিয়ে আছে।অনেকক্ষণ ডাকার পর আফরা দাঁড়াই। আফরা দাঁড়িয়েই আছে।আফরার পরিচয় বলাতো দূর একটু মুখ ও খুলছে না।চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।আর বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।আশরাফ তা দেখে রাগে ফেটে যাচ্ছে।কিন্তু আফরার ডোন্ট কেয়ার ভাব।

এরপর আশরাফ আফরাকে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে আফরার পাশে নিরাকে নাম বলতে বললে আফরা নিরাকে ইশারা করে চুপ থাকতে বললো।বেচারি নিরা জানে আফরার কথার বাইরে কথা বললে আফরা ওর কি অবস্থা করবে।তাই,,,,ও চুপ করে আছে।আশরাফ তা দেখে আরো রেগে তাদের দুইটারেই ক্লাস থেকেই বের করে দিয়ে বাইরে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলল।আফরার মাথা এবার সত্যিই গরম হয়ে গেছে।জিবনে কোনদিন দাঁড়ায় থাকেনি আফরা।আর আজকে সোজা কানে ধরে দাঁড়ায় থাকতে বললো।তাও আবার ক্লাসের বাইরে।আফরা সবসময় সবাইকে কানে ধরাইয়ে রাখছে আর আজকে আফরা নিজেই কানে ধরলো।আফরা মনে মনে বলছে ,,,,খাম্বার মতো লম্বা তোরে আমি দেইখা নিমু,,,,,,(রেগে)

নিরা —— কিরে কি ভাবোছ,,,,,,সব তোর জন্য হইছে।তুই যদি প্রথমেই স্যার কি বলছে তা বলতি আর আমারেও বলতে দিতি।তাহলে আর আমাগো দুইটারে এভাবে বাইরে দাঁড়ায় থাকতে হইতো না।

আফরা —— চুপ করতো। একদম কানের সামনে প্যানপ্যান করবি না।প্যান প্যান করলে আমার ভালো লাগে না।

তখনই পাশ দিয়ে থার্ড ইয়ারের একটা ছেলে আসলো।ওর নাম রাকিব। ও ভার্সিটির শুরু থেকেই আফরার পিছে পরে আছে।প্রপোজ ও করছে তখন আফরা বলে,,,,আমি তোর মতো হাবলা রাকিবরে ভালোবাসমু,,,,হু,,,,,দেখতে কেমন হাবলা হাবলা দেখায়।তোরে আমি একদম সহ্য করতে পারিনা।এতো কিছু বলার পরও আফরার পিছে পরে আছে।রাকিব আফরাকে বলল,,,,,

রাকিব —— আফরা,,,,তুমি এভাবে দাঁড়ায় আছো কেনো?

আফরা —— ইচ্ছা হইছে তাই,,,,

রাকিব —— ইচ্ছা হইলে কেউ এভাবে কানে ধইরা দাঁড়ায় থাকে নাকি?

আফরা —— হ,,,থাকে।তোর সমস্যা কিরে।আমার ইচ্ছা হইছে তাই আমি কানে ধইরা দাঁড়ায় আছি।আবার আমার ইচ্ছা হইলে নাচঁবো।বুঝছোস।

তখনই আশরাফ চলে আসে আর বলে,,,,

আশরাফ —— কি হচ্ছেটা কি এখানে,,,,,,এতো চিল্লাচিল্লি হচ্ছে কেনো?

আফরা —— আপনি বাইরে কান ধরে থাকতে বলছেন আমি কান ধরেইতো আছি।তাহলে আবার আপনি এইখানে আসছেন কেন?

আশরাফ —— কান ধরে থাকতে বলছি কথা বলতে না।তাই চুপ চাপ কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকো।

রাকিব —— ও আচ্ছা তাহলে এই ব্যাপার।

আফরা —— তুই যাবি নাকি আমি তোরে পিটামু।

রাকিব —— ওকে যাচ্ছি।

তারপর রাকিব চলে যায়।আফরা মনে মনে বলছে ,,,,,দাড়া খাম্বার মতো লম্বা,তোরে আমি যে কি করমু,,,,,তা আমি নিজেও জানি না।তুই আমারে অপমান করছিস। আমাকে জিবনে কেউ অপমান করার সাহস পায়নি।কিন্তু তুই করছিস, এবার বুঝবি মজা।বজ্জাত খাম্বা।আর এদিকে আশরাফ মনে মনে রেগে বোম হয়ে আছে।যেকোন সময় ফেটে যাবে।কারন আজকে তাকেও আফরা ক্লাসে অপমান করছে তার প্রশ্নের উওর না দিয়ে।এরপর ক্লাস শেষ হলে আফরা আর নিরা দুইজন মিলে ক্যান্টিনে গিয়ে কিছু খেয়ে নেই।তারপর আর কিছু ক্লাস করে বাড়ি গিয়ে রুমে এসে এক ঘন্টা শাওয়ার নিয়ে বাইরে এসে ঘুমিয়ে পড়লো আফরা।কারন আফরার মাথা এখন প্রচুর ব্যথা করছে।রাতে আফরার বাবা বাসায় আসলে আফরাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে।

আফরার বাবা —— মামনি,,,,উঠো।সন্ধ্যা হয়ে রাত হয়ে গেছেতো।

আফরা —— আব্বু,,,,,তুমি কখন আসছো?

আফরার বাবা —— একটু আগে মামনি! তুমি নাকি আজকে ভার্সিটি থেকে এসেই ঘুমিয়ে পড়ছো।

আফরা —— হুম,,,,

আফরার বাবা —— কেনো?আজকে কি ওখানে কোন ঝামেলা করছো তুমি?

আফরা —— নাহ,,,,,ঝামেলা করবো কেনো।কোন ঝামেলা হয়নি আব্বু।

আফরার বাবা —— আমি তোমাকে চিনি মামনি।কি হইছে বলো আব্বুকে?

আফরা —– কিছুনা আব্বু।আচ্ছা বাদ দাওতো।তুমি আমার জন্য চকলেট আনোনি,,,,,

আফরার বাবা —— আমার মামনির জন্য চকলেট আনতে কি আমি ভুলে গেছি কখনো।হুম,,,,,এই নাও।

আফরা —— থ্যাংক ইউ আব্বু।উম্মাহ,,,,,,,,,,,

তারপর আফরা চকলেট খেতে শুরু করে।চকলেট আফরার খুব প্রিয়।আফরার বাবা ছোটবেলা থেকেই অফিস থেকে ফিরার সময় আফরার জন্য চকলেট নিয়ে আসে।কখনো মিস হয়না।বলা যায় এটা আফরার বাবার প্রতিদিনের অভ্যাস ।ওইদিকে আশরাফ মাথা গরম করে বাসায় গিয়ে বসে আছে।তখন আশরাফের মা রুমে এসে বলে,,,,,

আশরাফের মা —— কিরে বাবা । তুই এতো রেগে আছিস কেন?

আশরাফ —— কই মা।আমি রেগে নেই।

আশরাফের মা —— তুই আমার কাছে লুকাচ্ছিস কেনো?আমি কিন্তু তোকে চিনি।

আশরাফ —— এমনি মা।সত্যি কিছু হয়নি।প্লিজ আমায় খেতে দাও।আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে?

আশরাফের মা —— আচ্ছা ঠিক আছে দিচ্ছি।তুই যখন বলতে চাইছিস না তখন বলিস না।এখন যা তুই ফ্রেশ হয়ে আস।আমি খাবার বাড়তেছি।

চলবে ……………………………..

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *