আপুর ননদ যখন রোমান্টিক বউ শেষ পর্ব

জয়ঃ কেমন আছো তোমরা?
নিধীঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,
তোমরা সবাই কেমন আছো?
জয়ঃ আমরাও ভালো আছি।
হিয়াঃ তা হানিমুন টা কেমন কাটলো?
আমিঃ অনেক ভালো।
রানাঃ সালা তুই বিয়ে করে ফেললি,, আর আমার আম্মু বলে আমি নাকি এখন ও অনেক ছোট প্রেম করার ও বয়স হয় নি।।
প্রিয়াঃ ঠিকি বলছে।

আমরা সবাই আড্ডা দিতে লাগলাম,,, আড্ডা দিয়ে নিধীকে বাসায় দিয়ে আমি একটু মার্কেটে চলে গেলাম। নিধীর জন্য এক জোরা নুপুর কিনে বাসায় ফিরলাম। আমি আমার রুমে চলে গেলাম দেখি নিধী নেই বেলকনি থেকে কথা বলার আওয়াজ আসছে। আমি গিয়ে নিধীর পিছনে দাড়ালাম।

নিধী কারো সাথে ফোনে কথা বলছে হেসে। আমি ভাবলাম হয়তো কোনো বান্ধবীর সাথে হয়তো কথা বলছে। আমি চলে আসতে যাবো তখনি নিধী বললো,,

নিধীঃ অনেক মিস করি তকে মেঘ
ওপাশ থেকে কি বলছে শুনা যাচ্ছে না
নিধীঃ কখনো ভাবি নি তকে ছেরে আমার দুরে থাকতে হবে।।
ওপাশ থেকেঃ,,,,৷
নিধীঃ লাভ ইউ টু মেঘ। খোব জলদি আমাদের দেখা হবে।।
ওপাশ থেকেঃ উম্মাহ ।

এসব কথা শুনে আমি রুমে চলে আসলাম৷ এসব কি নিধী আমাকে এভাবে ঠকালো। অন্য কাউকে যদি ভালোবাসে তাহলে আমাকে কেন বিয়ে করলো। নানার প্রশ্ন মাথায় গুরপাক খাচ্ছে।।।

নিধী রুমে আসলো, রাগে আমার চোখ লাল হয়ে আছে,,কি করে পারলো ও আমার সাথে।

আমিঃ কার সাথে কথা বললে।।।
নিধীঃ ফ্রেন্ড দের সাথে।
আমিঃ কেমন ফ্রেন্ড যাকে কিস পর্যন্ত করো।
নিধীঃ ও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।।
আমিঃ বেস্ট ফ্রেন্ড কে কেউ কিস করে লাভ ইউ বলে। কেন এভাবে ঠকালে আমাকে।
নিধীঃ এসব কি বলছো নীল।

আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, নিধী আমার চোখের পানি মুছে দিতে আসলো। আমি হাত টা সরিয়ে দিলাম।

আমিঃ চরিত্রহীন কোনো মেয়ের হাত আমার শরীরে পরুক আমি চাই না।
নিধীঃ নীল এখন কিন্তুু বেশি হয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ ফোনে লুতুপুতু করতে আমি বললেই বেশি হয়ে যায় তাই না।
নিধীঃ আমার কথা টা শুন প্লিজ
আমিঃ তর কোনো কথা শুনতে চাই না, প্লিজ আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা। এবং কি এই বাসা থেকেও।
নিধীঃ কি বলছো এসব নীল আমি তোমাকে ছারা থাকতে পারব না৷
আমিঃ আমি ঠিকি পারব। আমি বাসার বাহিরে যাচ্ছি বাসায় এসে যদি তকে দেখি,,তাহলে কিন্তুু আমি কিছু করে ফেলব।

নিধী এসে আমাকে জড়িয়ে দরলো,, আমি নিধীকে ছারিয়ে নিলাম। নিধী কাঁদতে লাগলো। আমি বাসার বাহিরে চলে আসলাম। এসে জয় কে কল করলাম, সবাইকে বলে দিলাম ক্লাবে চলে আসতে।
আমি ক্লাবে চলে গেলমা। ক্লাবে গিয়ে বসে আছি জয় রানা রাজু আসলো, ওদের আমি সব কিছু বলতে লাগলাম।।

আর এদিকে নিধী ব্যগ গুছাচ্ছে। সব কিছু গুছিয়ে নিধী আম্মুর রুমে চলে গেলো। আম্মুকে বলে বাসা থেকে বের হয়ে পড়লো, আম্মু নিধীকে অনেক আটকানোর চেষ্টা করলো বাট পারলো না। আম্মু বার বার আমার ফোনে কল দিচ্ছে। আমি মোবাইল টা সাইলেন্ট করে রাখলাম।।

নিধী বাসায় পৌছে গেলো। নিধীর বাসার মানুষকে নিধীকে দেখে অবাক হলো। সবাই একটার পরে একটা প্রশ্ন করতে লাগলো।। নিধী রুমের ভিতরে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। দুই বাসার মানুষ ই প্রচুর চিন্তিত রয়েছে।

এদিকে আমি ওদের সব কিছু খুলে বললাম।। ওরা আমার কথা কেউ বিশ্বাস ই করতে চাইতেছে না।।
ওধের শুধু এক কথায় নিধী তকে অনেক ভালোবাসে ও তর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করতে পারেই না।।। আমার মোবাইলে ফোন আসতেই লাগলো,, এবার তাকিয়ে দেখি আপু কল দিয়েছে।
আমি এইবার রিসীভ করলাম।

আপুঃ কোথায় তুই?
আমিঃ আছি এক যায়গায়।
আপুঃ তর আর নিধীর মধ্যো কি হয়েছে।
আমিঃ সেটা তোমার ননদ ই ভালো করে বলতে পারবে।
আপুঃ নিধী কারো সাথেই কোনো কথা বলছে না আসছে থেকে শুধুই কেঁদে চলেছে।
আমিঃ কি হয়েছে তোমার ননদ কে জিঙ্গাস কর,

এই বলে কল টা কেটে দিলাম। আমি রাত বারোটা পর্যন্ত বাসার বাহিরে থাকলাম। এবং কি আজকে ড্রিংকস ও করলাম। রাত বাজে সারে বারোটা, আমি বাসায় গিয়ে কলিংবেল বাজালাম। আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো।

আমি আমার রুমে চলে আসলাম। আম্মু আর আব্বু আমার পিছনে পিছনে রুমে আসলো। আমি এসেই বিছানায় শুয়ে পড়লাম।।।

আম্মুঃ কি হয়েছে নীল প্লিজ বল।।
আমিঃ সেটা তোমাদের গুণধর বউমা কে জিঙ্গাস করো।
আব্বুঃ আমরা ব্যপারটা না জানলে সমাধান করবো কি করে।।
আমিঃ প্লিজ তোমরা এখন রুম থেকে যাও।।

আম্মু আব্বু চলে গেলো,, সারারাত ঘুমাতে পারলাম না। নিধীকে জড়িয়ে দরে ঘুমিয়ে অব্যাশ হয়ে গেছে এখন ওকে ছারা ঘুম আসেই না।। সারারাত ছটফট
করতে করতে করতে কেটে গেলো। এভাবে কেটে গেলো চারটি দিন। নিধীর সাথে এর মাজে একদিন ও কথা হয় নি।

আমি এখন আগের চাইতে অনেক চুপচাপ হয়েছে। এই চারদিনে একবার বাসার বাহিরে যায় নি, এমনি কি রুমের বাহিরেও না।।

রাতে শুয়ে আছি ঘুম আসছে না। ঘ্যলারি তে থাকা আমার আর নিধীর পিক দেখতেছি। তখন ই আমার ফোনে একটা কল আসলো।। আননন নাম্বার।

আমিঃ আসসালামু ওয়ালাইকুম
ওপাশ থেকেঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আমিঃ কে আপনি??
ওপাশ থেকেঃ ভাইয়া আমি আপনার বউ য়ের বেস্ট ফ্রেন্ড মেঘা।
আমিঃ ওহ আচ্ছা কিছু বলবেন।
মেঘাঃ ভাইয়া আপনি কিন্তুু নিধী কে ভুল বুজছেন।
আমিঃ তারপর।
মেঘাঃ ওইদিন নিধী আমার সাথে কথা বলছে আর নিধী আমাকে মেঘ বলে, তাই হয়তো আপনি ভাবছেন ও একটা ছেলের সাথে কথা বলছে।
আমিঃ সত্যি বলছেন আপনি।
মেঘাঃ একদম সত্যি।
আমিঃ ধন্যবাদ।।

এরপর আমি আর কিছু না ভেবে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম৷ গন্তব্যস্থান শশুর বাড়ি।। আমি নিধীর বাসার সামনে চলে আসলাম। দেওয়াল টপকে ভিতরে আসলাম। এতো রাতে কাউকে ডিস্টাব করতে চাই না। নিধীর রুমেই ওইখানে একটা গাছ আছে ওইটা বেয়ে বেয়ে খোব কষ্ট করে রুমে আসলাম।।। দেখি নিধী এখনো জেগে আছে মোবাইলে কি জানো দেখছে।

নিধী অন্যদিকে ঘুরে শুয়ে আছে,, আমি গিয়ে নিধীর পিছনে দাড়ালাম। দেখি নিধী আমার ছবি দেখতেছে ফোনে। আর শুধু বলতেছে ফিরে আসো নীল, তোমাকে ছারা থাকতে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে।।

আমিঃ নিধী

আমার ডাক শুনে নিধী এদিকে তাকালো,, আমাকে দেখে আর কিছু না ভেবে শক্ত করে জড়িয়ে দরলো।

নিধীঃ প্লিজ নীল আমাকে ভুল বুজো না তোমাকে ছারা থাকতে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।।
আমিঃ স্যরি নীল।
নিধীঃ কেন?
আমিঃ তোমাকে এতো কষ্ট দেওয়া জন্য।
নিধীঃ ইটস ওকে এরপর পড়ের বার এমন করলে না তোমার খবর আছে।
আমিঃ আর হবে না।
নিধীঃ আগে কানে দরে দশবার উঠবস করো।
আমিঃ এ্য
নিধীঃ এ্য নয় হ্য।
আমিঃ পারবো না।
নিধীঃ তাহলে কাছেও আসে দিব না।

আর কি করার বউয়ের কাছে যেতে হলে ত এটা করতেই হবে৷ আমি কান দরে উঠবস করতে লাগলাম। আর নিধী হাসতে লাগলো। সারাজীবন আমার পাগলিটাকে এভাবেই হাসিখুশি দেখতে চাই শুধু আপনারা দোয়া করবেন।।।

সমাপ্ত

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *