বড় লোকের মেয়ে যখন হুজুর ছেলের প্রেমে পর্ব_০৪

অপর পাশ থেকেঃ আচ্ছা bye ভালো থেকো!

আমিঃ ok bye, আপনি ও ভালো থাকবেন! (বলে facebook থেকে বের হয়ে গেলাম! বের হয়ে ভাবতে লাগলাম কি গুন্ডি মেয়েরে বাবা, এই মেয়েকে যে বিয়ে করবে তার জীবন তেজপাতা বানিয়ে দিয়ে ছাড়বে!)

এসব ভাবতেছি তখনই আমার ফোন টা বেজে উঠলো ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি রোহানের ফোন এসেছে , তারপর ফোন টা রিসিভ করে!

আমিঃ হে দোস্ত বল!

রোহানঃ হ্যা মামা শুন, তানজিলা আজ বিকালে ৪:০০টার তোর সাথে দেখা করবে, * পার্কে থাকিস!

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে! এখন রাখ মাদ্রাসায় যাবো।

রোহানঃ ok bye ভালো থাকিস!

আমিঃ ok তুই ও ভালো থাকিস,, (বলে ফোন কেটে দিলাম তার পর বেলাল কে ফোন দিয়ে,)।

আমিঃ হেলো!

বেলালঃ হ্যা দোস্ত বল!

আমিঃ আজকে কি মাদ্রাসায় যাবি?

বেলালঃ হুম যাবো, তুই যাবি?

আমিঃ হুম যাবো, আচ্ছা তুই বের হ আমি আসছি!

বেলালঃ আচ্ছা আয়!

(ফোন কেটে দিলাম তারপর আম্মু আসলো,)

আম্মুঃ কিরে বাবা মাদ্রাসায় যাবি না??

আমিঃ হুম আম্মু যাবো!

আম্মুঃ আচ্ছা তুই আয় আমি খাবার দিচ্ছি!

আমিঃ আচ্ছা তুমি যাও, আমি আসছি!

(তার পর আম্মু চলে গেল এর কিছুক্ষন পর আমিও গেলাম খাবার খেতে, খাবার খেয়ে আমি আর বেলাল মাদ্রাসায় চলে গেলাম)

ঐ দিকে তানজিলা আর মেঘলা কলেজে চলে গেল, (ও আপনাদের কে তো বলাই হয় নি, তানজিলা আর মেঘলা উভয়ে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে)

তানজিলা আর মেঘলা কলেজ শেষে আসার সময়, মেঘলা তানজিলাকে বলল!

মেঘলাঃ কিরে তানজিলা ইমন ভাইয়া নাকি বলছে তার সাথে দেখা করতে?

তানজিলাঃ হুম!

মেঘলাঃ তো কখন দেখা করবি?

তানজিলাঃ বিকেল ৪ টার দিকে!

মেঘলাঃ ও আচ্ছা, তাহলে ভাইয়া মনে হয় রাজি হয়ে গেছে।

তানজিলাঃ জানি না রে!! আচ্ছা তোকে Many many thanks!

মেঘলাঃ ঐ thanks কেন??

তানজিলাঃ তুই আমার অনেক উপকার করছিস তাই,, আচ্ছা আরেক টা উপকার করবি?

মেঘলাঃ ঐ বন্ধু বান্ধুবিদের মধ্যে thanks নাই। আর কি উপকার করতে হবে সেটা বল!

তানজিলাঃ তুই একটু আমার সাথে যাবি প্লিজ?

মেঘলাঃ নারে আজকে পারমু না, আম্মুকে নিয়ে একটু ডাক্তারের কাছে যাবো, (আসলে মেঘলার আম্মু কিছুদিন ধরে অসুস্থ)।

তানজিলাঃ আচ্ছা ঠিক আছে, (মন খারাপ করে)।

তারপর তানজিলা আর মেঘলা কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলো, এসে দরজার বেল বাজানো মাত্রই তানজিলার আম্মু দরজা খুলে দিয়ে বলল!

তানজিলার আম্মুঃ কিরে মা আজকে তোর কলেজ কেমন কাটলো?

তানজিলাঃ এইতো আম্মু ভালো! আব্বু কোথায়?

তানজিলার আম্মুঃ তোর আব্বু এখনো অফিস থেকে ফিরে আসে নাই!

তানজিলাঃ ও আচ্ছা! আম্মু খাবার দেও আমার একটু বাহিরে যেতে হবে!

তানজিলার আম্মুঃ আচ্ছা তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার দিচ্ছি।

তানজিলাঃ আচ্ছা( বলে ফ্রেশ হতে চলে গেল)।

এই দিকে

আমি আর বেলাল মাদ্রাসা ছুটির পর, উভয় গল্প করতে করতে বাসায় চলে আসলাম, বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে একটু facbook এ লগইন করলাম, কিছুক্ষন facebook চালিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৩:৩০ বাজে, আর মাত্র ৩০ মিনিট আছে ৪:০০ বাজতে তাই তারাতারি কাপড় পড়ে বের হলাম পার্কে যাওয়ার জন্য, হয়ে রোহান আর বেলাল কে ফোন দিলাম,, কিন্তু শালাদের ফোনটা বন্ধ কি আর করার নিজে একাই যেতে লাগলাম,,

ঐ দিকে

তানজিলা ও ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে কিছুক্ষন রেস্ট নিলো, কিছুক্ষন পর ও ঘড়ির দিকে তাকিয়ে তো পুৃরাই অবাক,

তানজিলাঃ হায় আল্লাহ গো আমি একি দেখছি ৪ টা বাজতে আর মাত্র ১০ মিনিট আছে! এখন না জানি কি হয়,, আরে শাকচুন্নী আজকে তো তোর কপাল পুড়েছে, না জানি কতক্ষন বসে থাকবে, আর কি ভাববে তোকে,, (মনে মনে নিজেকে এতক্ষন একথা গুলো বলল)

তানজিলা তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে কাপড় পড়ে বের হয়ে আসে ।

  >>এই দিকে 

আমি পার্কে এসে একটা ব্রেঞ্চ এ বসে পড়লাম! বসে বসে facebook এর ঐ মেয়েটা কে নিয়ে ভাবতে লাগলাম,, ও কে? আর আমার থেকে কি চায়? আর কেনই বা আমাকে স্বামী বলে? আর কেনই বা আমার উপর অধিকার খাটায়? কিছুই তো মাথায় ডুকছে না! ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ পিছন থেকে আমার কাদে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম, আমি তাড়াতাড়ি পিছনে তাকিয়েই তো ৪০০০ হাজার বোল্ডের শক খেলাম, কারন আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে দাড়িয়ে, আর ওর মাথা থেকে পা পর্যন্ত কালো বোরকা দিয়ে ডাকা, এমন ভাবে ডাকা কেও চিনবে না যে এটা যুবতী মেয়ে নাকি বৃদ্ধা মহিলা,, আমি ওর দিকে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি, হঠাৎ ওর ডাকে আমার হুশ ফিরলো,

পর্দাশীল মেয়েঃ ঐ হাবলার মত কি দেখছ??

আমিঃ (ওর কথা শুনে লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম,)

আমিঃ কিছু না। আচ্ছা আন্টি আপনি কে??

পর্দাশীল মেয়েঃ ঐ হারামি কে তোর আন্টি?

আমিঃ কেন আপনি,(মজা করে কারন ওর গলার আওয়াজ শুনেই আমি চিন্তে পেলাম এটাই তানজিলা)

পর্দাশীল মেয়েঃ ঐ আমি তোর কোন দিক দিয়ে আন্টি হই??

আমিঃ না কোন দিক দিয়ে নয়,, তবে বলুন আপনি কে,,(মজা করে যদিও চিনি)

পর্দাশীল মেয়েঃ ঐ হারামি আমি তানজিলা,।

আমিঃ কি আপনি তানজিলা?? (অবাক হওয়ার ভান করে)

তানজিলাঃ হুম, কেন তোমার কোন দিক দিয়ে সন্দেহ হয়??

আমিঃ না, আসলে আপনি যে ভাবে বোরকা গায়ে দিছেন, এতে কেও চিনবে না, আপনি যুবতী মেয়ে নাকি বৃদ্ধা মহিলা,!( মুসকি হেসে)

(তানজিলা আমার কথা শুনে হেসে দিয়ে বলল)

তানজিলাঃ কেন খারাপ দেখায়??

আমিঃ হুম অনেক খারাপ।

তানজিলাঃ (আমার কথা শুনে মন খারাপ করে মুখ টা কালো করে ফেলল)

তানজিলাঃ যা বাবা যার জন্য আমি এমন হইছি সেই বলে খারাপ (মনে মনে)।

আমিঃ (আমি বুঝতে পেরেছি ও মন খারাপ করে ফেলেছে, তখন আমি বললাম)

আমিঃ দেখুন আল্লাহ মেয়েদের সৌন্দর্য দিছে, শুধু তার স্বামীর জন্য, অন্য কোন পুরুষের জন্য নয়,, আর আপনার সৌন্দর্য কেন পর পুরুষে দেখবে বলেন ?? কেন আপনার সৌন্দর্য দেখে তাদের মনে খারাপ চিন্তা ডুকাবেন? একটা নারীর শরীর শুধু তার স্বামীর জন্য অন্য কারো নয়,,কেনই বা পর পুরুষ আপনার শরীর দেখে মজা নিবে?? প্রত্যেক নারীর সম্মান তার পর্দার ভিতর,, আর যদি কেও আপনাকে দেখে আন্টি বা চাচি ইত্যাদি বলে,, তাহলেই বুঝবেন আপনার পর্দা সঠিক পর্দা, আপনি আপনার স্বামীর হক রক্ষা করতে পেরেছেন,, আপনি নিজেকে কেনো কুকুরের কু নজর থেকে রক্ষা করতে পেরেছেন,(কেও মাইন্ড করবেন না প্লিজ, আসলে যারা মেয়েদের প্রতি কু নজর দেয়,, তারা হিংশ্র কুকুরের নেয়)

আমি যখন ওকে এসব কথা গুলা বলছিলাম তখন ও এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমিঃ এই যে মেডাম কি দেখছেন? আর এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন??

তখন ও আমার কথা শুনে লজ্জা পেয়ে নিছের দিকে তাকিয়ে বলল)

তানজিলাঃ‌ আসলে এই পর্যন্ত কেউ এতো সুন্দর করে আমাকে বুঝায়নি তো তাই( একটু লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে)

আমিঃ আসলে আপনার এই রূপটাই হলো শরিয়তে সঠিক পর্দা। আপনাকে তো কোন দিন পর্দা করতে দেখি নাই তা হলে কি করে এতো পরিবর্তন?? কি ভাবে সম্ভব??(যদি ও জানি এতো কিছু আমার জন্য হি হি হি, একটু মজা করলাম আর কি)।

তানজিলা আমার কথা শুনে একটু খুশি হয়ে বলল যে!

তানজিলাঃ এসব কিছু তোমাকে পাওয়ার জন্য করছি! তোমার সব পছন্দ, অপছন্দ, ইচ্ছা অনিচ্ছা সব বিষয় নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি,, শুধু তোমার জন্য!

আমিঃ আচ্ছা আমার জন্য যে এত কিছু করলেন,, সত্যি কি আমাকে পাবেন??
( তানজিলা আমার এ কথা শুনে এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলল)

তানজিলাঃ কেন পাবো না? তুমি কি আমাকে পছন্দ করো না??

আমিঃ দেখুন সব কিছু আর পছন্দ অপছন্দ দিয়ে হয় না!

তানজিলাঃ তো কেন বললে পাবো না?

আমিঃ আরে আমি তো বলি নাই যে পাবেন না! আমি তো বলছি পাবেন কি না?

তানজিলাঃ তো পাবো না কেন?

আমিঃ কারন আমার তো আপনাকে পাওয়ার মত কিছুই নাই।

তানজিলাঃ কি নাই হে? সব আছে! আর তুমি যে গুলার কথা বলছো ও গুলা আমি কিছুই চাই না! আমি শুধু তোমাকে চাই।

আমিঃ দেখুন আপনি হয় তো চান না কিন্তু আপনার বাবা মা তো চায় তাই না? তারা তো আমার মত গরীব ছেলে কে মেনে নিবে না,, আর কোন বাবা মা তো আর চায় না তার মেয়ে কষ্টে থাকুক তাই না?

তানজিলাঃ না আমি কষ্টে থাকবো না, আমি তো তোমার সাথে অনেক happy থাকবো!

আমিঃ আপনি এখন যে কথা গুলা বলছেন সব আবেগ আর মোহ। যেভাবে ঘুম ভাঙ্গলে স্বপ্ন কেটে যায় তেমনি ভাবে বাস্তবতা সামনে আসলে আবেগ আর মোহ কেটে যায়।

তানজিলাঃ দেখ আমি সত্যি তোমাকে…………(পুরা কথা বলে শেষ করার আগেই আমার ফোন টা বেজে উঠলো! আমি ফোনটা হাতে নিয়েই দেখি আম্মুর ফোন, আমি ফোন টা ধরে)

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম আম্মু!

আম্মুঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম।

আমিঃ কিছু বলবা আম্ম?

আম্মুঃ বাবা তুই কই?

আমিঃ কেন আম্মু কি হইছে? আমি একটু বাহিরে!

আম্মুঃ বাবা তুই তাড়াতাড়ি বাসায় আয়, তোর আব্বুর পেশার উঠছে!

আমিঃ আচ্ছা আমি আসতেছি, আর ভাইয়া কই?

আম্মুঃ তোর ভাইয়া মাদ্রাসায়!

আমিঃ ওকে আমি আসতেছি! (বলে ফোন কেটে দিলাম, তারপর তানজিলা বললো)

তানজিলাঃ কিছু কি হইছে??

আমিঃ হুম, আব্বুর পেশার উঠছে, এখন আমাকে যেতে হবে আল্লাহ হাফেজ পরে কথা হবে! বলে চলে আসলাম, বাসায় এসে দেখেই তো

আমি হা হয়ে গেলাম……………………

চলবে—————–

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *