বড় লোকের মেয়ে যখন হুজুর ছেলের প্রেমে পর্ব_০৫

তানজিলাঃ কিছু কি হইছে??

আমিঃ হুম, আব্বুর পেশার উঠছে, এখন আমাকে যেতে হবে আল্লাহ হাফেজ পরে কথা হবে! বলে চলে আসলাম, বাসায় এসে দেখেই তো হা হয়ে গেলাম, দেখলাম আম্মু আব্বুর পাশে বসে কাদছে আর আব্বুর হাত পা চিপছে,, তারপর আমি আম্মুকে বললাম,,,,,,,,,,

আমিঃ আম্মু তুমি কাঁদো না, আব্বুর কিছু হবে না আমি আব্বুকে ডাক্টারের কাছে নিয়ে যাই তুমি ভাবি কে নিয়ে বাসায় থাকো, আর ভাইয়াকে কিছু জানিয়ো না।

আম্মুঃ ok বাবা, ভালো ভাবে নিয়ে যাস, আর একটু পর তোর আপু আসবে।

আমিঃ ok মিতুকে বাসায় আসতে বলিও হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন নাই।

আম্মুঃ আচ্ছা বাবা,, তুই এবার যা।

আমিঃ আচ্ছা দোয়া করো আব্বুর কিছু হবে না,,(বলে দ্রুত আব্বু কে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম, নিয়ে আসার পর আব্বুকে দ্রুত আইসিউ তে নেওয়া হলো, — কিছুক্ষন পর ডাক্টার বের হয়ে আসলো আমি এক দৌড়ে ডাক্টারের কাছে গিয়ে,,,,,

আমিঃ ডাক্টার আব্বুর কি অবস্তা??

ডাক্টারঃ দেখুন শান্ত হন,,আপনার বাবা এখন বিপদ মুক্ত, ( এ কথা শুনে আবার বুক থেকে যেন কয়েকশ কেজির একটা পাথর শরে গেল) ডাক্টার আবার বলল!

ডাক্টারঃ দেখুন ওনাকে কিছু ঔষধ লিখে দিবো, ও গুলা ওনাকে ঠিক মত খাওয়াবেন,!

আমিঃ জ্বী ইনশাআল্লাহ, আচ্ছা আমি কি এখন আব্বুকে বাসায় নিয়ে যেতে পারি??

ডাক্টারঃ হুম নিতে পারেন, তবে এখন না, ওনাকে এখন ঘুমের ইনজেকশন দিছি,, ঘুম ভাঙলে নিয়ে যেতে পারবেন।

আমিঃ আচ্ছা ধন্যবাদ ডাক্টার!

ডাক্টারঃ এখানে ধন্যবাদের কিছুই নেই, এটা আমাদের কাজ!( বলে ডাক্টার চলে গেলেন)

তারপর আমি আব্বুর কাছে গিয়ে বসে,, হাতে ফোন নিয়ে facebook এ লগইন করলাম, লগইন করা মাত্রই রুপুসি রাজকন্না আইডি থেকে আবার sms আসলো,, sms টা দেখে তো আমি বোকা হয়ে গেলাম, sms টা ছিল এরকম,, ঐ কুত্তা আব্বু ওসুস্থ হইছে তুই আমাকে বলিস নি কেন? (আমি তো ওর sms এর কি উত্তর দিব বুঝতেই পারি না,)

আমিঃ কে আপনি আর কেনইবা আপনাকে বলবো? আর আপনি কি ভাবে জানলেন আব্বু অসুস্থ?? (অবাক হয়ে কথা গুলো বললাম)

অপর পাশ থেকেঃ কেন তুমিই ত বললা?? (এবার আরো বড় শক খেলাম, এই মেয়ে বলে কি কখন আমি ওকে বললাম)

আমিঃ কি?? আমি আপনাকে কখন কবে কোন সময় বললাম??

অপর পাশ থেকেঃ না না কেও না, আমি অন্য কারো কাছ থেকে শুনলাম!

আমিঃ তো ম্যাম আমার কথা বললেন কেন??

অপর পাশ থেকেঃ এমনেই দুষ্টামি করে,, আচ্ছা বলো আব্বুর কি অবস্থা??

আমিঃ আপনার আব্বুর কি অবস্থা আমি বলবো কি ভাবে?? (বুঝেও না বুঝার ভান ধরে)

অপর পাশ থেকেঃ আরে বুদ্ধু তোমার আব্বু!

আমিঃ ও আচ্ছা, কিন্তু আপনি তো আপনার আব্বুর কথা জিজ্ঞাসা করছেন!

অপর পাশ থেকেঃ আরে গাধা তোমার আব্বুই তো আমার আব্বু!

আমিঃ কিহহ আমার আব্বু আপনার আব্বু হয় কি ভাবে??

অপর পাশ থেকেঃ আরে তুমি আমার স্বামী হলে, তোমার আব্বুও তো আমার আব্বু, তাই না?

আমিঃ এই যে ম্যাম আমি আপনার স্বামী না বুঝলেন?

অপর পাশ থেকেঃ এই কুত্তা আমি তোর ম্যাম না বউ বুঝলি??

আমিঃ এ্যা বললেই হল, আপনি আমার বউ??

অপর পাশ থেকেঃ হুম, আচ্ছা শুনো আব্বুকে কখন বাসায় নিয়ে যাবে??

আমিঃ এইতো এখন আব্বু ঘুমায়, ঘুম থেকে উঠলেই নিয়ে যাবো,, (বলতে না বলতেই আব্বু ঘুম থেকে উঠে গেল,)।

আমিঃ আচ্ছা বায় ভালো থাকবেন আব্বু উঠে গেছে, আব্বুকে নিয়ে বাসায় যাবো।

অপর পাশ থেকেঃ আচ্ছা ভালো ভাবে নিয়ে যেও।

আমিঃ আচ্ছা (বলেই ফেসবুক থেকে বের হয়ে গেলাম, আর আব্বু কে বললাম)

আমিঃ আব্বু এখন কেমন লাগছে?

আব্বুঃ আলহামদুলিল্লাহ এখন ভালো লাগতেছে বাবা!

আমিঃ আচ্ছা আব্বু তুমি বসো, আমি হাসপাতালের টাকা পরিশোধ করে আসতেছি, তারপর তোমাকে বাসায় নিয়ে যাবো!

আব্বুঃ আচ্ছা বাবা, তারপর হাসপাতালের টাকা পরিশোধ করে আব্বুকে নিয়ে বাসায় আসলাম, বাসায় এসে দেখি আব্বুর বন্ধু (মিষ্টার হাম্মাদ চৌধুরী) সোফায় বসে আছে, আমি ওনার কাছে গিয়ে, আসসালামু আলাইকুম আংকেল কেমন আছেন??

আংকেলঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আচ্ছা বাবা তোমাকে তো চিনলাম না? (না চিনার কারন হল ওনি আমাকে ছোট কালে একবার দেখছে)

পাশে থেকে আব্বু বললো!

আব্বুঃ আরে হাম্মাদ ও হল আমার ছোট ছেলে ইমন।

আংকেলঃ মাশাআল্লাহ, দোস্ত আমার জামাই বাবু তো দেখতে অনেক সুন্দর! (ওনার কথা শুনে আমি তো ১০০০০ ভোল্ডের শক খেলাম, এই লোক বলে কি আমি ওনার জামাই, কখন? কি ভাবে হলাম? তা হলে কি ফেসবুকের ঐ মেয়েটা ওনার না মানে আব্বুর বন্ধু হাম্মাদ চৌধুরীর মেয়ে? ভাবতেছি হঠাৎ আংকেলের ডাকে আমার চিন্তার ঘোড় কাটলো,,

আংকেলঃ তো বাবা তুমি কোন ক্লাশে পড়ো?

আমিঃ জ্বী আংকেল হেদায়া জামাতে পড়ি!

আংকেলঃ বাবা বুঝলাম না একটু বুঝিয়ে বলবে??

আমিঃ জ্বী আংকেল বিএ ফাস্ট ইয়ার।

আংকেলঃ মাশাআল্লাহ, খুশি হলাম!

তারপর আমি ওখান থেকে চলে আসলাম, দূর থেকে দেখলাম আব্বু আর আংকেল কি যেন বলছে! আমি ঐ দিকে মন না দিয়ে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম,, তারপর ফজরের আজানের আওয়াজে ঘুম ভাঙলো, আমি ফজরের নামাজ পড়ে এসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে আসলাম! বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে গেলাম, নাস্তা করে এসে খাটের উপর বসা মাত্রই ফোন টা বেজে উঠলো! ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা আননোন নাম্বার, ফোন ধরা মাত্রই!

অপর পাশ থেকেঃ মেয়েলি কন্ঠে আসসালামু আলাইকুম।

আমিঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম, কে বলছেন?

অপর পাশ থেকেঃ আমাকে চিনতে পারো নি??

আমিঃ জ্বী না, কে বলছেন জানতে পারি??

অপর পাশ থেকেঃ আমি তানজিলা,,
(আমি তো ওর কথা শুনে অবাক হলাম,, এই মেয়ে আমার নাম্বার পেল কই)

আমিঃ আপনি আমার নাম্বার পেলেন কই??

তানজিলাঃ বারে বর্তমানে নাম্বার জোগার করা কি কঠিন কাজ??

আমিঃ তা না, তবে বলুন না কোথায় পেলেন??

তানজিলাঃ আগে বলো, তাকে কিছু করবে না তো??

আমিঃ আগে বুলুন তার পর দেখা যাবে!!

তানজিলাঃ না আগে বলো কিছু বলবে না তো??

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে বলবো না!!

তানজিলাঃ ওয়াদা দেও!!

আমিঃ আচ্ছা ওয়াদা দিলাম ওকে কিছু করবো ও না, আর বলবো ও না!!

তানজিলাঃ আচ্ছা শুনো ঐ দিন যখন আমি রোহান ভাইয়ার কাছ থেকে তোমার সব বিষয় জেনেছি? তখন আমি তার কাছ থেকে তোমার নাম্বার টাও নিয়ে নিছি!!
(আমি আগেই ভাবছি ঐ হারামিই ওকে আমার নাম্বার দিছে)

আমিঃ ও আচ্ছা তো কি জন্য ফোন দিছেন?

তানজিলাঃ কেন আমি কি ফোন দিতে পারি না? (অভিমানি কন্ঠে)

আমিঃ আমি ও ভাবে বলতে চাইনি!”

তানজিলাঃ আসলে তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো!!

আমিঃ জ্বী বলুন!

তানজিলাঃ তুমি কি আমাকে মেনে নিবে??

আমিঃ দেখুন আমার পক্ষে আপনাকে মেনে নেওয়া সম্ভব, কিন্তু আপনাদের পক্ষে আমাকে মেনে নেওয়া সম্ভব না! কারন কোথায় আপনি আর কোথায় আমি?? একটু ভেবে দেখেছেন?? আপনার কি নাই সব আছে, টাকা পয়সা গাড়ি বাড়ি, আর আমার তো এগুলা কিছুই নাই, আর আমি যে টাকা কামাই করবো তা দিয়ে আপনার মেকাব কিনার টাকাও হবে না,, আর এতে তো আপনার পরিবার কখনো আমাকে মেনে নিবে না!

তানজিলাঃ ঐ তোকে কতবার বলবো আমি এগুলো কিছুই চাই না, শুধু তোর বুকে একটু ঘুমাতে দিলেই চলবে! শুধু তিন বেলা খাবার দিলেই হবে, আমি টাকা পয়সা গাড়ি বাড়ি কিছুই চাই না! (একদমে অনেক রেগেই কথা গুলো বললো)
(আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না ও আমাকে এতো ভালোবাসে)

আমিঃ আপনি কি সত্যি বলছেন? ও সব কিছুই চান না?

তানজিলাঃ না না না না না নাআআআআ, আর কত বার বলবো তোকে?
(আরেব্বাস এই মেয়েতো কম গুন্ডি না, হায় আল্লাহ আমার কপালে কি সব গুন্ডি মেয়ে রাখছো)

আমিঃ আচ্ছা আপনি যদি আপনার পরিবার কে মানিয়ে নিতে পারেন? তবে আমার কোন সমস্যা নাই!

তানজিলাঃ কি সত্যি ?? (অনেক খুশি হয়ে)

আমিঃ হুম সত্যি!

তানজিলাঃ আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি দেইখো আমি ঠিকি আব্বু আম্মু কে মানিয়ে নিবো!!

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে, তাহলে এখন রাখি, আল্লাহ হাফেজ!

তানজিলাঃ ok আল্লাহ হাফেজ!

বলে ফোন কেটে দিলাম! তার পর বসে বসে ভাবতে ছিলাম, ওকি সত্যি আমাকে ভালোবাসে?? নাকি আবেগ? না আবেগ হবে না, কারন ও আমার জন্য নিজেকে অনেক পরিবর্তন করছে,, যদি আবেগ হতো তাহলে এমন করতো না,, না ও সত্যি আমাকে ভালোবাসে, ওকে ফিরিয়ে দেওয়া আমার ঠিক হবে না,, ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম জানি না,, ফজরের আজনের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গলো, তরপর অজু করে মসজিদে চলে গেলাম নামাজ পড়তে, নামাজ শেষে আগের নিয়মের মত বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গেলাম!

ঐ দিকে রাত্রে তানজিলা মনের আনন্দে ঘুমিয়ে গেলো তারপর ফজরের নামাজ পড়ে আগের নিয়মে কোরআন তেলাওয়াত করে বিভিন্ন ইসলামিক কিতাব পড়ে তার আম্মুর কাছে গিয়ে!

তানজিলাঃ আসসালামু আলাইকুমআম্মু! (খুশিতে হেসে হেসে বললো)

তানজিলার আম্মুঃ অবাক হয়ে, একি তানজিলা? নাকি স্বপ্ন দেখছি, দেখি স্বপ্ন দেখছি কি না, বলে নিজের হাতে একটা চিমটি দিলাম, না তো আমি স্বপ্ন দেখছি না, বাস্তবেই তো আছি,, তাহলে তানজিলার কি হলো? যার জন্য এতো পরিবর্তন হাসি খুশি? আর ও তো কোন দিন এতো সকালে উঠেনি, আরো আশ্চর্য এর কথা হলো ও তো কোন দিন আমাকে সালাম দেয় নি,, তাহলে ওর কি হলো? আর এর ভিতর রহস্য টা কি? এক দৃষ্টিতে তানজিলার দিকে তাকিয়ে ভাবতেছে!)

তানজিলা তার আম্মুকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মনে মনে বলে কি হলো আম্মুর এভাবে কি দেখছে? মনে হয় আর কোন দিন দেখে নি, নাকি ভিনগ্রহের এলিয়েন মনে করছে,,!

তানজিলাঃ কি হলো আম্মু? এভাবে হা করে কি দেখছো? মুখে মশা ডুকবে তো, ( হেসে দিয়ে) আর সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব, তো উত্তর দেওনা কেন? উত্তর দেও!

তানজিলার আম্মুঃ (এবার তো আরো বড়ো শক খেলো, ওর কি হলো, যে মেয়ে ঠিক মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে না, সেই মেয়ের এত পরিবর্তন কি ভাবে?)

তানজিলাঃ আম্মুম্মুম্মুম্মুম্মুম্মু, (চিৎকার দিয়ে)।

তানজিলার আম্মুঃ (তানজিলার কথায় বাস্তবে ফিরে বলল) এই কি হলো এমন ষাড়ের মত চেচাচ্ছিস কেন??

তানজিলাঃ তো কি করবো? তুমি যে ভাবে তাকিয়ে আছো মনে হয় আকাস থেকে কোন এলিয়েন জমিনে এসেছে আর তুমি তা দেখছো!!

তানজিলার আম্মুঃ তা মহারানি আপনি আজ এত তারাতারি ঘুম থেকে উঠলেন, আবার খুশিও কারন টা কি?? হুম!

তানজিলাঃ পরে বলবো আগে সালামের উত্তর দেও!

তানজিলার আম্মুঃ আচ্ছা, ওয়ালাইকুম আসসালাম,, তা এখন বল কারন টা কি?

তানজিলাঃ আসলে আম্মু আমজাদমন আমাকে মেনে নিবে যদি তোমরা তাকে মনে নেও,, (খুশিতে লাফাতে লাফাতে কথা গুলো বললো)

তানজিলার আম্মুঃ যদি না মেনে নেই??
(কথাটা শুনা মাত্রই তানজিলার হাসি মুখটা কালো কান্না ভেজা হয়ে গেলো)

তানজিলার আম্মুঃ (একটা মুসকি হাসি দিয়ে) আরে পাগলি আমি তো মজা করলাম!

তানজিলাঃ তোমরা পচা, শুধু আমাকে কষ্ট দেও,(জরিয়ে ধরে কান্না করে)।

তানজিলার আম্মুঃ আচ্ছা পাগলি আর কান্না করে না, তোর আব্বুকে খুশির খবর টা বলে আসছি,,!

তানজিলাঃ খুশির খবর মানে? তাহলে তোমরা কি ওকে মেনে নিবে?

তানজিলার আম্মুঃ হুম আমরা তো ওকে আগেই মেনে নিছি তুই তো জানিসই?

তানজিলাঃ হুম,! (এই বলে তানজিলা তার রুমে চলে আসলো)

এই দিকে

আমি আর হারামি বন্ধু গুলা আড্ডা দিতেছি,, রোহান বললো,,,,,,,,,

রোহানঃ —————

চলবে—————–

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *