লাবন্যর মার খাচ্ছি৷আর ভাবছি আজকেই বলব আর না বললে তো উপায়ও নেই
যেই খেপা খেপছে,না জানি আমাকে মেরেই ফেলে?
তখনই লাবন্যকে বললাম….
–ওরে বাবা রে,মরে গেলাম,প্লীজ এবার ছেড়ে দাও লাবন্য!
–না ,ছাড়ব না,তোকে তো আজ আমি শেষই করে দিব,তোর সাহস কত বড়,তুই আমার প্রিয় মানুষকে নিয়ে বাজে কথা বলিস?তাও আবার আমার সামনে
-এতটা খেপছে,বুঝতেই পারিনি(মনে মনে)
–বল,আরও বলবি এগুলো?(গলার মধ্যে টিপে ধরল)
–সেই সাহস,আমার নেই গো,যার এমন একটা পাগলি ফ্রেন্ড আছে,সেই ছেলেকে আর কেউ কি কিছু বলতে পারবে নাকি?(কোনোমতে বললাম)
–হুম৷এবারের মত ছেড়ে দিলাম৷ভবিষ্যতে যদি কখনও ভুলে এমন বাজে কথা বলিস তোর নাক আমি ফাটিয়ে ফেলব।
–এই কান ধরে বলছি,আর কখনোই বলব না।
–হুম৷এবারের মত ছেড়ে দিলাম।
বলেই লাবন্য আমাকে ছেড়ে দিল৷আর ভাবতে লাগলাম,আমি তো কোনো বাজে কথা বলিনি,শুধু একটু মজাই তো করছিলাম৷তাই বলে এত কিছু?
লাবন্যকে নিয়ে তখন চুপচাপ সমুদ্রের পাড় দিয়ে হাটছিলাম৷কারও মূখে কোনো কথা নেই৷
আর লাবন্য তখনও আমার উপর রাগ করেই আছে৷
তখনই আমি ভাবতে শুরু করলাম৷পাগলিটা কে বলেই দিই৷
ঠিক দুপুর তখন৷মাথার উপরে সূর্য,আর শীতের দিনে সমুদ্রের পাড়ে সুর্যের তাপ কিছুই না৷ঠান্ডায় গা কাপতে লাগল৷আর সেই সময় সূর্যের আলোর কারনে সমুদ্রটা আরও সুন্দর আর উজ্বল হয়ে ছিল৷আর সাথে এমন একজন থাকলে তো আরও ভালো লাগবেই৷
মনে মনে ভাবতে লাগলাম আর দেড়ি নয়৷লাবন্যকে বলতেই হবে৷
যেই ভাবা সেই কাজ,
–লাবন্য?ও লাবন্য(মধুর সুরে)
–হুম বলো(রেগে )
–ভুল করেছি তো৷আর বলব না তো।
-হুম
–এবার একটু হাসো!
-দেখো,এমনিতেই একটা মানুষ আজকে আমাকে ধোকা দিছে,তাই মনটাই খারাপ।
–কে ,ধোকা দিছে,শুধু একটি বার তার নাম বলো,একদম খু*ন করে ফেলব(ওর সাপোর্ট টানতে লাগলাম)
–ওই তুই কি বললি?তুই তাকে খু*ন করবি মানে?তোকে কিন্তু এখনই শেষ করে দিব(অনেক রেগে)
–যাক বাবা,আমি তো তোমার পক্ষেই কথা বলছি।
–লাগবে না
–আচ্ছা লাবন্য একটা কথা বলব!
–হুম
–রাগ করবে না তো?
–রাগ করার মত হলে তো করবই
–লাবন্য,আমি তোমাকে অনেক আগেই বলতে চেয়েছিলাম৷
–কি বলতে চেয়েছো?
–আসলে লাবন্য,আমি তোমাকে ভালোবাসি
–হুম,আমি জানি৷কিন্তু সেটা কখনই সম্ভব না(স্বাভাবিক ভাবেই)
-কিন্তু কেন?
–কারন আমি…..
–রাজপুত্রকে ভালোবাসো তাই তো?
–তুমি জানলে কিভাবে?(অবাক হয়ে )
–আর আমি এটাও জানি,আজকে তোমাকে রাজপুত্রই বলে ছিল ও কক্সবাজারে আছে,আর আজকে তোমার সাথে দেখা করবে,আর তোমাকে এখানে আসতে বলেছে৷আর এই কারনেই প্রথমবার আমি তোমাকে এখানে আসতে বলার পরও না এসে !পরবর্তীতে ওর কথায় তুমি আমাকে নিয়ে এসেছো,তাই তো?(এক দমেই বললাম)
–হুম৷কিন্তু তুমি জানলে কিভাবে?( অবাক হয়ে)
–লাবন্য তুমি কি এখনও বুঝতে পারছো না?
–কি বুঝতে পারব?আমি তো এটা এখনও বুঝতে পারছিনা তুমি কিভাবে এগুলো জানলে?তোমাকে তো এগুলো কিছুই বলিনি(অবাক হয়েই)
–লাবন্য,তুমি এখনও বুঝলে না?
–আমি বুঝতে পারিনি আরমান,প্লিজ তুমি বলো,তুমি কি তাকে চিনো?ওর সাথে তোমার কোনো যোগাযোগ আছে(একটানা বলতেই লাগল)
–হা হা হা
–প্লীজ আরমান,তুমি বলো,তুমি কি তাকে চিনো?প্লিজ আমাকে তার কাছে নিয়ে যাও,আমি ওকে প্রান ভরে দেখব,প্লিজ আরমান,তোমার পায়ে পড়ি,ওর কাছে আমাকে নিয়ে যাও প্লিজ(খুশিতে কান্নাই করে দিছে)
–হুম,আমি তোমার রাজপুত্র কে চিনি।
–সত্যি বলছো আরমান,প্লিজ ওর কাছে আমাকে এখনই নিয়ে যাও,আমি যে আর দেড়ি করতে পারছি না।
–লাবন্য,তুমি এখন যার সামনে দাড়িয়ে আছো,সেই রাজপুত্র।
–যার সামনে দাড়িয়ে আছি মানে?কোথায় সে?আমি তো দেখতে পারছি না(চারিদিকে খুজে)…
আমি তখন খেয়াল করলাম,অনেক দামী একটা জিনিস হারিয়ে গেলে,মানুষ যেভাবে খুজে,ঠিক লাবন্যও তেমনভাবে খুজতে লাগল৷আমি মনে মনে খুশিতে তখন আবারও নতুন করে ওর প্রেমে পড়ে গেলাম)
–কি হলো আরমান,তুমি চূপ কেন?বলো সে কই?
–লাবন্য,এতদিন তুমি যাকে আরমান হিসাবে জানতেছো,সেই তোমার স্বপ্নের রাজপুত্র।
–দেখো আরমান,মজা করবা ভালো কথা,দয়া করে ওকে নিয়ে একদমই মজা করবা না৷
–আমি মজা করছি না লাবন্য,আমি ই তোমার রাজপুত্র অর্থাৎ আরমান।
–আরম্মম্মান,,ঠাসসসসসসসসস
তোকে বলছি না,ওকে নিয়ে মজা করবি না৷
(থাপ্পরটা দেবার পরই সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেলো,ও আমাকে মারল?ও কিভাবে আমর গালে থাপ্পর দিল৷ভাবতেই বুকটা কষ্টে ফেটে যেতে লাগল৷এটা কি হলো?অতিরিক্ত মজা করতে গিয়ে এমনটা হবে ভাবতেই পারিনি৷এখন কিভাবে বলব আমিই তার রাজপুত্র!তখন আবারও বললাম)
–লাবন্য বিশ্বাস করো,আমি রাজপুত্র
–ঠাসসস,তোকে বলছি না,ওকে নিয়ে কিছু বলবি না?আমাকে ভালোবেসে যখন আমার কাছ থেকে আমার ভালোবাসা পাচ্ছিস না,তখনই ওকে নিয়ে তুই মজা করবি?মিথ্যা কথা বলে আমাকে তোর করে নিতে চাস(অনেক রেগে)
–লাবন্য,তুমি বিশ্বাস করো,
–তোকে বিশ্বাস করব?দেখ আরমান,তোকে এতদিন ভালো জেনেছি,তাই বলে তুই শেষ মেষ এভাবে আমাকে ঠকাতে চাচ্ছিস?যদি এটা ভেবে থাকিস,তাহলে তুই সেটা সবচেয়ে বড় ভুল করবি৷আর আমি তাকে হয়ত বাস্তবে দেখিনি,তবে আমি তার দেওয়া ছবিতেই তাকে দেখেছি।
–কোথায় সেই ছবি?
তখই লাবন্য আমাকে একটা নিগ্রো দের মত দেখতে একটা ছেলের ছবি দেখালো?যেই ছবিটা আমি মজা করে ওকে দিয়ে ছিলাম।
–এই দেখ আমার রাজপুত্রকে,
–লাবন্য,ও সে না,আমি তো সেদিন ফান করে তোমাকে এই ছবিটা মেসেজে দিয়েছিলাম৷
–চুপ কর,একদম মিথ্যা বলবি না
–দেখো লাবন্য, আমি মিথ্যা বলছি না
–তুই যদি সে হয়ে থাকিস,তাহলে তার প্রমান কি?
–আমাকে ফেসবুকে না পেয়ে,তুমি হাজার হাজার মেসেজ করেছিলে৷আর আমি আসলে তোমাকে যেন ফোন দেই,সেজন্য তোমার ফোন নাম্বার দিয়েছিলে
এর পর লাবন্যকে ফেসবুকের সব কথা বললাম৷তখনই লাবন্য বলে উঠল..
–এই,তুই এত কিছু জানলি কিভাবে?
-কারন আমি ই যে তোমার রাজপুত্র।
তখনই খুশিতে লাবন্য আমাকে জড়িয়ে ধরল৷আর আমিও খুশিতে সব কিছু ভুলে গেলাম৷কিন্তু এই ভুলে থাকাটা বেশিক্ষনের জন্য হলো না৷কারন লাবন্য হঠাৎ ই তখন বলে উঠল..
–না না,তুই আমার সে না।
–আমি তোমার রাজপুত্র,আর নয়ত এগুলো বললাম কিভাবে?
–তুই বলতে পেরেছিস,কারন ওইদিন তুই আমার আইডি ডুকেছিলি৷আমি প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝে ছিলাম সেদিন তুই আমার আইডি ছিলি৷আর ওইখানে আমার আইডির জিমেইল আর পাসওয়ার্ড দেখে ফেলেছিস৷আর তুই এভাবেই সব কিছু জেনে গেছিস
–না,আমি এমনটা করিনি।
–তুই এমনটাই করেছিস,হারামি ছোটলোকের বাচ্ছা,তুই এক্ষনি আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা।
–প্লিজ লাবন্য বুঝার চেষ্টা করো!
হঠাৎ তখনই মনে পড়ে গেল,আরে আমি যে রাজপুত্র ,সেটা তো খুব সহজেই ওকে দেখাতে পারি৷এখন আমার আইডিতে ডুকলেই তো চলে৷আর ওকে আমার আইডি দেখালেই তো ও বুঝতে পারবে৷তাই তখনই পকেট থেকে ফোন বের করলাম৷আর বের করেই বললাম
–এই দেখো লাবন্য,আমার ফোনে আমাদের সব কিছুই আছে,আমাদের মেসেজ,আর আমার আইডি
ফোনে প্রমানগুলো দেখানোর জন্য ওর দিকে ফোনটা নিয়ে এগিয়ে যাবো৷ঠিক তখনই ও আমার হাত থেকে ফোনটা ও একটা হেচকা টান দিয়েই ওর হাতে নিয়ে নিল৷আর সাথে সাথে ডিল মেরে সমুদ্রের পানিতে ফোনটা ফেলে দিল৷আমি তখন অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম৷লাবন্য এটা কি করলো?এখন ফোন ছাড়া ওকে আমি কিভাবে দেখাবো?আমি ই সে?
–লাবন্য,তুমি এটা কি করলে?সব কিছু এভাবে শেষ করে দিলে?
-একদম চুপ,তোর মত অবিশ্বাসি,বেইমানের মুখে আমার নাম শূনতে চাইনা৷আর হ্যা আমি নিজেই আমার মানুষকে খুজে বের করে নিবো৷আর তুই আমার সামনে থেকে এই মূহূর্তে চলে যা
কি বলব বুঝতেই পারছিনা৷অতিরিক্ত মজার ফল এটা৷যদি আগেই বলে দিতাম তাহলে এমনটা কখনোই হতো না৷আগে যদি ওকে পরিচয় বলে দিতাম তাহলে আজকে এমন দিন দেখতে হতো না৷চোখ দিয়ে তখন এমনিতেই পানি বের হতে লাগল৷আর ভাবতে লাগলা,এটা কি হলো?এটা কি করলাম?
-কি হলো,তুই এখনও যাসনী কেন?আর হ্যা এখান থেকে ভুলেও হোটেলে উঠবি না৷আমাদের থেকে অনেক দূরে চলে যাবি৷তোর মূখটাও এখন দেখতে ইচ্ছে করছে না,বেইমান কোথাকার
–আম মমম মি চ চ চলে গেলে,আ রাজ..কে পাবে(কান্না করতে করতে,তোতলিয়ে)
–হ্যা,তার ছবি আমার কাছে যেহেতু আছে,আমি ওকে খুজে বের করবই..
–পারবে না লাবন্য,কখনোই পারবে না,কারন সে তো আর কেউ না,আমি নিজেই৷আর আমি চলে গেলে আর কখনোই আমাকে পাবে না
–ঠাসসস,একদম চুপ করে থাকবি,হারামির বাচ্ছা,তোকে রাস্তা থেকে তুলে এনে আমাদের বাসায় এনে স্থান দিয়েছিল আমার বাবা৷আর তাদের সাথেই তুই আজ এত বড় বেইমানি করতে পারলি৷আর একটা কথাও শুনতে চাইনা৷চলে যা বলছি চলে যা!
তখন আর কিছুই মুখ দিয়ে আসছিলো না৷তখন মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে বড় অসহায়দের মধ্যে আমিও একজন৷কারন নিজের আপন মানুষ এভাবে ভুল বুঝবে ভাবতেই পারিনি৷আর সবই নিজের ভুল৷নিজের মজার কারনেই এটা হলো৷
সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে,লাবন্যকে শেষবারের মত বললাম
–লাবন্য,তোমাকে কিছুই বলার নেই আমার কারন তোমাকে আগেই যদি সব বলে দিতাম,আর তোমার সাথে পরিচয় গোপন না করতাম৷তাহলে আজকের এই দিনটা দেখতে হতো না৷তবে একটা কথা কি জানো?তোমার অতিরিক্ত ভালোবাসা যেমন আমাকে অনেক পাগল করেছিল,আর আজ সেই অতিরিক্ত ভুল ভালোবাসাটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাড়ালো৷আর হ্যা ভালো থেকো৷তোমাকে আমি প্রমান দিয়েই দিবো৷আমি ই সেই ছেলে যাকে তুমি রাজপুত্র হিসাবেই জানো৷কিন্তু যখন প্রমান করে দিবো তখন আমি তোমার থেকে অনেক দুরে চলে যাবো৷আর কখনোই খুজে পাবে না৷ভালো থেকো৷
আল্লাহ হাফেজ
বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম৷আর কষ্টে তখনও বুকটা ফেটে যাচ্ছিল,কেন ওর সাথে পরিচয় গোপন করে মজা করতে গেলাম৷যদি এমন না করতাম তাহলে আজ আমার লাইফ থেকে লাবন্যকে হারাতাম না৷সমুদ্রের তীর দিয়ে হাটছি৷আর চোখের নোনা পানি তখনও গাল বেয়ে বেয়ে চোখ থেকে গড়াচ্ছিল৷আর সমুদ্রের তীরে ঢেউয়ের সাথে তা মিশে যাচ্ছে৷সমুদ্রের নোনা পানি চোখের নোনা পানিকে ঠিকই চিনতে পেরেছে৷দুটোই নোনা পানি৷কিন্তু লাবন্য আমাকে চিনতে পারল না?
চোখের পানি বের করতে করতেই সেদিন বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিলাম৷কত স্বপ্ন ছিল লাবন্যকে নিয়েই একেবারে আমার বাসায় যাবো৷আর তাকে সেখানে বিয়ে করব কিন্তু তা আর হলো না৷আমাকে আজ একাই যেতে হচ্ছে৷হয়ত এখানে আর কেউ আমাকে না খূজলেও লাবন্যর বাবা আমাকে ঠিকই খুজবে কিন্তু হয়ত আর আমাকে পাবে না৷
বাস স্টেশন থেকে বাঁশখালীর বাসে ঊঠলাম৷আর বাসে তখন দিন গড়িয়ে ভোর রাত পর্যন্ত শেষ হয়ে গেল৷আর বাঁশখালীর বাস স্টেশনে পৌছে গেল৷আর বাস থেকে নামতেই নিজের গ্রামের মাটিতে পা পড়ল৷বাস স্টেশন থেকে বাসায় যেতে মাত্র ১৫মিনিট লাগবে৷
দীর্ঘ ৬ বছর পর নিজের গ্রামের মাটিতে পা রাখলাম৷
আস্তে আস্তে ঘুটি ঘুটি পায়ে আমাদের বাড়ির দিকে গেলাম৷বাসায় ডুকতেই কত পরিবর্তন৷আর তখনই আজানের ধ্বনি ভাসতে লাগল৷ফজরের আযান দিচ্ছে৷আর আমি তখন বাসায়৷বাসার সামনে যেতেই দেখলাম৷কেউ এই শিতের রাত্রে হয়ত অজু করছে৷একটু একটু সামনে যেতেই পরিষ্কার বুঝা গেল৷এটা আমার বাবা৷আমি আরেকটু সামনে যেতেই লাইটের আলো আমার মুখে পরল৷আর তখনই বাবা আমাকে দেখে দৌড়ে আসল৷আর আমাকে জড়িয়ে ধরেই কান্না করে দিল৷আর বলতে লাগল..
–এই পাগল ছেলে,এতদিন কই ছিলি?কোথায় ছিলি?আর এই বুড়ো বাবার প্রতি এত রাগ কেন?যদি আমি তোর আসার আগেই মরে যেতাম!
–না বাবা,তুমি এটা বলো না,বাবা,আমাকে মাফ করে দাও বাবা,আমি আর কোথাও যাবো না,প্লিজ বাবা আমাকে মাফ করে দাও
বলেই বাবার পায়ে পড়ে গেলাম৷আর অনেক কান্না করছিলাম৷
আরে বোকা ছেলে,কান্না করছিস কেন?একদম কান্না করবি না৷
বলেই বাবা মাকে ডাক দিতে লাগল
–এই আরমানের মা,দেখো কে এসেছে,আরে ওই আরমানের মা দেখো,কে এসেছে?(খুশিতে চিৎকার করে)
তখনই মা দরজা দিয়ে বাইরে বের হয়ে আমাকে না দেখেই বলল
–কে এসেছে,
আর তখনই মায়ের চোখে পানি৷আমাকে দেখতেই মা কান্না করে দিল৷আর আমাকে জড়িয়ে ধরেই
–এই,তুই এতদিন কই ছিলি?কেন আমাদের এত পর করে দিলি৷একটাবারও ভাবলিনা,তোকে ছাড়া আমরা কিভাবে থাকব?আর তোর বাবা তো সেদিন রাগের বসে ওইটা বলেছে৷তাই বলে তুই সত্যি সত্যিই এভাবে চলে যে তে পারলি(কান্না করেই চলছে)
–আর কোথাও যাবো না মা,তোমাদের ছেড়ে আর কোথাও যাবো না৷
আমিও তখন মাকে জড়িয়ে ধরেই কান্না করতে লাগলাম৷
তখনই বাবা বলল..
–আরে এখন কি কান্নাই করবা নাকি?ছেলে আসছে এই খুশির সময় একটু সবাই হাসো,আর ওকে কী এখনও বাইরেই দাড় করিয়ে রাখবা নাকি?ছেলেটা কত দুর থেকে এসেছে৷আগে ওকে ঘরে নিয়ে খেতে দাও৷আর ওকে রেষ্ট নিতে বলো৷তারপর ওর কাছ থেকে সব জানব৷
যাও যাও ঘরে নিয়ে যাও
তারপর ঘরে নিয়ে গেল৷আর মা আমাকে সেদিন নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছিল৷অনেক ভালো লাগছিল৷আর সেই ভালো লাগাটার কারনে লাবন্যর জন্য পাওয়া কষ্টটা ভুলে গেলাম৷খাওয়া দাওয়া শেষে আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল৷আর দেখলাম সেই রূম যেটা আমার ছিল”আর এটা এখনও খুব যত্নে গুছিয়ে রাখা হয়েছে৷
চুপচাপ শুয়ে পরলাম৷আর শোয়ার কিছুক্ষন পরই একে একে লাবন্যর মুখটা ভেসে আসছিল৷আর কি থেকে কি হয়ে গেল?সব কিছুই চোখে ভাসছিলো৷ভেবেছিলাম লাবন্যকে সবকিছু বললে সে অবাক হয়ে যাবে আর আমাকে অনেক ভালোবাসা দিয়ে বুকে টেনে নিবে৷কিন্তু উল্টো ভুল বুঝে অনেক দূরে ঠেলে দিল৷ভাবতেই চোখ দিয়ে অঝরে বৃষ্টি পরতে লাগল৷আর সেই বৃষ্টির পানিতে বালিসটা ভিজে যাচ্ছিলো…………
চলবে…………