সিনিয়র আপু যখন বউ পর্ব_০১

ইসস ট্রেনটা মিস হয়ে গেলো। নাহ্ ট্রেনটা মিস করা যাবেনা।যেভাবে হক ট্রেনে উঠতেই হবে তাইতো এখন ট্রেনের পেছনে প্রাণ পনে ছুটে চলছি। এমন সময় ট্রেনের দরজা কাছে আসতে একটি মেয়ে হাত বারিয়ে দিলো তখন যেইনা মেয়েটার হাতটা ধরতে যাব ঠীক তখনই,,,,,,,
আমিঃ আআআআআআআআ।(জোরে চিৎকার করলাম)
চোখ খুলে দেখি মা বালতি হাতে নিয়ে রাগি ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমিঃ উফফ!! মা এটা তুমি কি করলে দিলেতো একদম ভিজিয়ে। কি সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম।

মাঃ নবাবের মত তো পরে পরে ঘুমাচ্ছি। ঘড়ি দিকে তাকিয়ে একটু দেখ কত বাজে।(একটু রাগি ভাবে)
আমি ঘড়ি দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল ১০ টা বাজে।
আমিঃ হায় হায় ১০ টা বেজে গেছে কখন বুঝতেই পারলাম। সালা ঘুমটা ও আজকাল কিছুতেই ভাঙ্গতে চায়না।(মনে মনে)
মাঃ কিরে এমন ঘড়ির দিকে হা করে তাকিয়ে কি ভাবছিস।
আমিঃ নাহ্ কিছুন। তুমি আমাকে আর একটু আগে ডাকতে পারলেনা।
মাঃ সেই কখন থেকে ডাকছি তোর তো উঠার কোন নামই নাই তাইতো বাদ্ধো হয়ে আমাকে পানি ঢালতে হলো।
আমিঃ হুমম এখন কথা না বলে খেতে দাও।
মাঃ তুই যা ফ্রেশ হয়েনে তোর বাবাও বাজারে গেছে। এই আসার সময় হলো বলে।

এই কথা বলে মা চলে গেলো আর আমি তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ধুর মা যে কি করে কিছুই বুঝিনা আর একটু পরে ডাকলে কি হত। মেয়েটা হাত বারিয়েছে ঠীক করে তার মুখটা পর্যন্তুক দেখতে পারলাম না। তারপর ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে গিয়ে বসে পরলাম,,,,,,,
আমিঃ মা কথায় খাবার দাও।খুব ক্ষিদে লাগছেতো।(চিৎকার করে)
মাঃ একটু বস আমি এক্ষুনি দিচ্ছি।

ওহো আপনাদের তো আমার পরিচয়টা দেওয়া হয়নি। আসলে এত কথার মাঝে আমার পরিচয়টা দিতে ভুলে গেছি। কোন সমস্যা নাই মা খাবার নিয়ে আসতে আসতে আপনাদেরকে আমার পরিচয়টা দিয়ে দেয়। আমি হলাম আরমান আহমেদ হিমেল মা বাবা আর ছোট্র একটা বোন সুলতানা কে নিয়ে আমাদের সুখি পরিবার। ঐ যে মা খাবার নিয়ে আসছে এখন বরং খাবারটা খেয়েনি আপনাদের সাথে না হয় অন্য সময় কথা হবে,,,,,

মাঃ এইনে ধর খেয়েনে।(রাগি ভাবে)
আমিঃ হুমম দাও যা ক্ষিদে লেগেছে না।

খাবার খাচ্ছি এমন সময় ঘরে বাবার আগমন। বাবাকে আমি ভিশন ভয় পাই। তাই আমি চুপ করে খাবার খেতে লাগলাম। তারপর বাবা আমার সামনে একটা চেয়ারে বসতে বসতে বললেন,,,,

বাবাঃ পরিক্ষার রেজাল্ট তো দিয়ে দিছে তাহলে এখন কথায় ভর্তি হবে ভেবে দেখছিস।
আমিঃ ভাবার কি আছে। এখানেই না হয় কোন কলেজে ভর্তি হয়ে যাবো।(বুকে সাহস নিয়ে)
বাবাঃ না তোমার আর বাড়িতে
থেকে পড়া হবেনা।(কড়া মেজাজে)
আমিঃ বাড়িতে থেকে পড়া হবেনা তো কথায় গিয়ে পড়বো।(অভাক হয়ে)
বাবাঃ আমি ঠীক করছি তুমি ঢাকায় গিয়ে পড়া শুনা করবে।
আমিঃ কিন্তু বাবা আমি গ্রামেই তো ঠীক আছি আবার কষ্ট করে তোমাদের ছেরে ঢাকায় পড়তে যাবো কেন।
বাবাঃ গ্রামে থাকলে তোমার আর পড়া লেখা হবেনা।দিন দিন তুমি যেই বাদর হচ্ছ।
আমিঃ কিন্তু বাবা ঢাকায় চিনিনা জানিনা কোন কলেজে ভর্তি হবো।
বাবাঃ সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা আমি আগে থেকেই সব ব্যবস্তা করে রেখেছি।
আমিঃ বাবার হঠ্যাৎ করে কি হলো। কথা নেই বার্তা নেই ঢাকায় গিয়ে পড়ার কথা বলছে।নাহ্ কিছুই তো মাথায় ঢুকছে না।(মনে মনে)
বাবাঃআর শুনো তোমাকে আমার বন্ধুর বাসায় থাকার ব্যবস্তা করছি। তুমি ওখানে থেকেই পড়া লেখা করবে।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ করে আছি)
বাবাঃ কি হলো কথা বলিস না কেন।(ধমক দিয়ে)
আমিঃ যেটা ভালো মনে করো।(ভয়ে ভয়ে)
বাবাঃ এখন যাও তোমার কাপড় চোপড় যা নেবার মত সব গুছিয়ে নাও।কালকে সকালে বের হবো আমরা।

আমি আর কোন কথা না বলে চুপ করে ওখান থেকে মার কাছে চলে আসলাম।
আমিঃমা এটা কি হচ্ছে বাবা হঠাৎ করে আমাকে ঢাকা পড়াতে চাচ্ছে কেন।
মাঃ সেটা আমি কি করে বলবো।
আমিঃ ধুর ভালোই লাগেনা।

এই কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।তারপর রাতে বাসায় এসে দেখি মা আমার সব কাপড় চোপড় গুছিয়ে রাখছে।আমাকে দেখে বলে,,,,,
মাঃ দেখতো তোর আর কিছু নিতে হবে কিনা।
আমিঃ ধূর তোমার যা খুশি তাই করো আমিতো যাচ্ছি না।
বাবাঃ কে যাচ্ছেনা শুনি।
মাঃ তোমার ছেলে বলে যাবেনা।
বাবাঃ কিরে তোর মা এসব কি বলছে।
আমিঃ কৈ বাবা আমিতো কিছু বলিনি।আমি তো যাবো।(ভয়ে ভয়)
বাবাঃ হুমম যাও তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়ো।সকাল সকাল রওনা দিতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা বাবা।

তারপর রাতে খেয়ে শুয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবার সাথে বেরিয়ে পড়লাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। ঢাকায় আসার পর গাড়ি থেকে নেমে রিকশা করে কিছু দূরে যাওয়ার পর রিকশা একটি বড় বাড়ির সামনে এসে থামলো। বাড়িটার বাইরে থেকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে বাবার বন্ধু অনেক বড় লোক। উফফ!! এমন একটা বাড়িতে আমি থাকবো ভেবেই মনের ভেতর কেমন খুশি খুশি লাগছে। বাড়িটার ভেতরে ঢুকতেই একটা লোক বেরিয়ে আসলে। বাবার কাছে এসেই বাবাকে জরিয়ে ধরে বললেন,,,,,,,

আংকেলঃ কিরে তোর আসতে আবার কোন সমস্যা হয়নি তো।
বাবাঃ কি যে বলিস গাড়ির রাস্তা সমস্যা হবে কেন।
আংকেলঃ তো বাবা জীবন কেমন আছো।
আমিঃ জী আংকেল ভালো।আপনি কেমন আছেন।
আংকেলঃ আমিও ভালো আছি।চলো ভেতরে চলো।
তারপর আমরা বাড়ির ভেতরে গেলাম।
আংকেলঃ কি গো কথায় তুমি। আরে দেখে যাও কে আসছে।

ভেতর থেকে একটা মহিলা বেরিয়ে আসলেন মনে হয় ইনি আংকেল এর স্ত্রী।
আন্টিঃ আরে ভাই সাহেব কেমন আছেন।
বাবাঃ এইতো ভাবি আমি ভালো আছি আপনি কেমন আছেন।
আন্টিঃভালো। তা এই যে বুঝি আরমান বাবাজি।(আমাকে ইসারা করে)
বাবাঃ হ্যা এই যেই আমার ছেলে আরমান আর আপনাদের। (এটুকু বলে বাবা থেমে গেলেন)
আন্টিঃ বাব্বা কত্ত বড় হয়ে গেছো।একদম চেনাই যাচ্ছেনা।সেই ছোট বেলাই দেখছি তোমাকে।
বাবাঃ হাহাহাহ। ভাবি ও কি এখনও বাচ্চা আছে নাকি এখন তো বড় হয়ছে।
আন্টিঃ তা ঠীক।আচ্ছা আপনারা ফ্রেশ হয়েনিন। আমি খাবারের ব্যবস্তা করছি।
বাবাঃ তা সাদিয়া মামনিকে দেখছি না যে।কথায় সে।
আমিঃ এই সাদিয়াটা আবার কে।(মনে মনে)
আংকেলঃ কথায় আবার সাদে আছে হয়তো ফুল বাগানে পানি দিচ্ছে।

তারপর আংকেল আমাকে একটা রুম দেখিয়ে দিয়ে বললেন,,,,,
আংকেলঃ নেও বাবা আজ থেকে এটাই হচ্ছে তোমার রুম।

আমি আর কিছু না বলে রুমের ভেতর ঢুকলাম। রুমের ভেতর ঢুকে দেখি রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো আছে। দেখ মনে হচ্ছে কেউ অনেক যন্ত সহকারে রুমটাকে গুছিয়ে রাখছে। তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় শরীরটা ছেরে দিয়ে শুয়ে পড়লাম। আসলে শরীরটা অনেক ক্লান্ত লাগছিলো। শুয়ে আছি এমন সময় মনে হলো কে যেন আমার রুমের দরজার পাশে দারিয়ে উঁকি মারছে। আমি কে উঁকি মারছে তা দেখার জন্য শুয়া থেকে উঠে বসলাম। কিন্তু দুঃখ্যের বিষয় কাউকে দেখতে পেলাম না। একটু পর আন্টি এসে আমাকে ডাকতে লাগলেন,,,,,,

আন্টিঃ আরমান চলো টেবিলে খাবার দিছি।
আমিঃ আচ্ছা আন্টি চলুন।

এই কথা বলে আমি আন্টির পেছন পেছন যেতে লাগলাম। খাবার টেবিলের কাছে যেতেই আমি পুরাই অভাক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কারণ আমি দেখি বাবার পাশে একটা মেয়ে বসে আছে।মেয়ে বললে ভুল হবে কারণ তাকে দেখে মনে হচ্ছে এ যেন কোন পরি ভুল করে পৃথিবীতে চলে আসছে। আমিতো মেয়েটাকে প্রথম দেখাতেই ক্রাশ খেলাম।

বাবাঃ কিরে ওখানে ওমন হা করে দাঁড়িয়ে আছিস কেন আবার।
আমি কিছুটা লজ্জা পেয়ে আর কিছু না বলে চুপ করে একটা চেয়ার টেনে বসে পরলাম।
আংকেলঃ আরে ওখানে বসছো কেন। তুমি বরং এই চেয়ারটাতে বসো।

তারপর আংকেল আমাকে সেই মেয়েটার সামনের চেয়ারে বসালেন।আমারও কিছুটা লজ্জা লাগছে। তারপর আন্টি আমার প্লেটে খাবার তুলে দিলেন।আমি মাথা নিচু করে খেতে লাগলাম,,,,,,,,,

আংকেলঃ আরমান এ হচ্ছে আমার এক মাত্র মেয়ে সাদিয়া।আর সাদিয়া এ হচ্ছে আরমান। (সাদিয়া কে দেখিয়ে)
আমিঃ,,,,,,,,,,।(আমি কোন কথা না বলে সাদিয়ার দিকে এক নজর তাকিয়ে মাথাটা নামিয়ে নিলাম)
সাদিয়াঃইসস!! পাগল টাকে একদম বাচ্চাদের মত লাগচে।(মনে মনে)
আন্টিঃ আরে বাবা তুমি তো কিছুই খাচ্ছো না।
আমিঃকৈ খাচ্ছি তো।
সাদিয়াঃ মা ওর মনে হয় খেতে লজ্জা লাগছে।(মুচকি হেসে কথাটা বললো।)
আমিঃউফফ!!সাদিয়ার হাসি দেখে আবার ক্রাশ খেলাম।আন্টি গো খাবার আর খাবো কি আপনার মেয়ের হাসি দেখে আমার পেট এমনিতে ভরে গেছে।(মনে মনে)
বাবাঃ শোন তোকে কাল আমি কলেজে দিয়ে আসবো।তারপর থেকে সাদিয়ার আর তুই এক সাথে যাবি।
আমিঃউফফ!! প্রতিদিন সাদিয়ার সাথে কলেজে যেতে এটা শুনে মনটা আনন্দে ভরে উঠলো ।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ হুমম আংকেল আমার ভার্সিটির পরেই তো ওর কলেজে।
আমিঃ কিহ্ এটুকু মেয়ে কিনা ভার্সিটিতে পড়ে।তার মানে আমার সিনিয়র দেখেতো মনেই হয়না।আমিতো মনে করছিলাম ক্লাস ১০ পড়ে।(মনে মনে)
বাবাঃ কিরে ওমন হা করে তাকিয়ে আছিস কেন।
আমিঃ এইরে বাবা আবার দেখে ফেলেনিতো যে আমি সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।(মন মনে)

তারপর আমি খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমার রুমে চলে গেলাম। ঘুমানোর জন্য চোখ বন্ধ করতেই সাদিয়ার সেই হাসি মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠলো।যখনই চোখ বন্ধ করি সেই আগের মতনই সাদিয়ার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠে।তারপর অনেক কষ্টে রাতটা পার করলাম।সকালে ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখি আমার পাশে সাদিয়া বসে এক পলকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি চোখদুটি বন্ধ করে আবার তাকালাম কিন্তু এইবার কাউকেই দেখতে পেলাম না মনে হয় ঘুম ঘুম চোখে ভুল দেখছি।

তারপর ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হতেই কিসের সাথে যেন ধাক্কা খেলাম। এখানে আবার পিলার আসলো কথা থেকে রাতেতো ছিলো না। কিন্তু পিলারটি এত নরম কেন দেখিতো। পেছন ফিরে তাকাতেই দেখি সাদিয়া বসে আছে,,,
সাদিয়াঃ উফফ!! মা গো মাজাটা মনে হয় ভেঙ্গে গেছে।আমিঃ এইরে কেলো করেছে।এতো দেখি পিলার না সাদিয়া। এখন কি করি।(মনে মনে)

আমি তাড়াতাড়ি সাদিয়াকে উঠাতে উঠাতে বললাম,,,,,
আমিঃ সরি সাদিয়া আমি আসলে তোমাকে দেখতে পারিনি।
সাদিয়াঃ ঐ সাদিয়া কি হ্যা আমি তোর বড় হয়। তাই আমাকে আপু বলবি।(ঝারি মেরে)
আমিঃ অ্যাঅ্যাঅ্যা।দেখেতে মনে হয় আমার ছোট হবে তাকে আবার আপু করে বলতে হবে।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ কিরে এমন হাবার মত তাকিয়ে আছিস কেন।
আমিঃ নাহ্ কিছু হয়নি।(মাথা নিচু করে)
সাদিয়াঃ কিছু না হলেই ভালো। আর যা যা বললাম মনে থাকে যেন।
আমিঃ আচ্ছা মনে থাকবে।
সাদিয়াঃ হুমম গুড।(এই কথা বলে চকে গেলো)

কি রাগি মেয়েরে বাবা। চেহারা দেখেতো মনেই হয়না যে এমন রাগি।অবশ্য সাদিয়া এমনিতে সুন্দর তারপর আবার রাগী ভাবে যখন কথা বলছিলো তখন ওর মুখটা একদম আগুনের মত লাল হয়ে গেছিলো এতে ওকে আরো সুন্দর লাগছিলো তখন। যাই এখন নাস্তা করেনি।একটু পরেতো আবার বাবার সাথে কলেজে যেতে হবে।

তারপর নাস্তা করতে আসলাম কিন্তু নাস্তা করার সময় সবাইকে দেখলেও সাদিয়া কে দেখলাম না। একবার মন চাইছে আন্টিকে জিজ্ঞেস করি সাদিয়ার কথা। পরে আবার ভাবলাম নাহ্ এতে যদি আবার খারাপ কিছু মনে করে।

বাবাঃ কিরে না খেয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিস কেন।
আমিঃ সাদিয়া কে খুঁজছি। (আস্তে করে)
বাবাঃ কি বললি।
আমিঃ নাহ্ কিছু না।

তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাবার সাথে কলেজে চলে গেলাম। বাবা আমাকে স্যারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে আসলেন। কলেজের ১ম দিন ভালোই লাগছে। অনেক বন্ধু-বান্ধব হলো। নাহ্ যেমনটা ভেবেছিলাম তার থেকে আরো ভালো কাটলো কলেজের ১ম দিনটা।

তারপর কলেজ শেষ করে বাসায় এসে শুনি বাবা গ্রামের বাড়ি চলে গেছে।এই কথাটা শুনে আমার একটু মন খারাপ হয়ে গেলো।দুপুরে খাবার খেয়ে আমি শুয়ে থাকলাম।বিকালে ঘুম থেকে উঠে রুম থেকে বের হয়ে ভাবলাম দেখি একটু ছাদে যায়। ছাদে গিয়েতো আমি পুরাই অভাক কারণ ছাদের চারপাশে বিভিন্ন ফুলের গাছে ভরা। আমি তাই ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। একটু পর পেছন থেকে,,,,,,

সাদিয়াঃ এখানে কি হচ্ছে হ্যা।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ)
সাদিয়াঃ আর হ্যা শুনো আমার অনুমতি ছাড়া ছাদে আসতে পারবে না বুঝলা।
আমিঃ কি গুন্ডি মেয়েরে বাবা।এখন নাকি ছাদেও তার অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ কিরে কি ভাবছিস।
আমিঃ কৈ কিছু নাতো।
সাদিয়াঃ তাহলে এমন ক্যাবলা কান্তের মত দারিয়ে না থেকে এখন এখান থেকে যা।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,,।(চুপ করে চলে গেলাম)
সাদিয়াঃ পাগল একটা আমি বলছি বলে চলে যেতে হবে এমন করে। বোকা একটা। এই জন্যেই তো ওকে এত ভালোবাসি।(মনে মনে)

পরের দিন সকালে ঘুমিয়ে আছি এমন সময় মুখের মধ্যে কে যেন পানি ঢেলে দিলো। তাকিয়ে দেখি সাদিয়া গ্লাস হাতে দাঁড়িয়ে আছে।

আমিঃ এটা কি হলো সাদিয়া।
সাদিয়াঃ ঐ সাদিয়া কি হ্যা তোকে বলছিনা আপু বলবি।
আমিঃ যাকে প্রথম দেখাতে ভালোবেসে ফেলছি।তাকে বলবো আপু সম্ভবা না।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ কিরে আমি বলছি কানে ঢোকেনি।
আমিঃ আপু বলতে পারবোনা।
সাদিয়াঃ কেন আপু বললে কি সমস্যা। (বুরু ভাজ করে)
আমিঃ আপু বলে ডাকতে কেমন যেন লাগে।
সাদিয়াঃ যেমনই লাগুক না কেন তোকে আপুই বলতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে সাদিয়া আপু বলে ডাকবো।
সাদিয়াঃ আচ্ছা ঠীক আছে।
আমিঃ তাহলে এবার বলেন মুখে পানি মারলেন কেন।
সাদিয়াঃ ঐ তোকে কলেজে যেতে হবেনা।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখচিস কত বাজে। এই তোর জন্য আজ আমারও দেরি হয়ে যাবে।আর আমি দেরি করা একদম পছন্দ করিনা।

আমিঃ তাহলে আপনি চলে যান আমি একাই যেতে পারবো।
সাদিয়াঃ ঐ আমি একা যাবো মানে তোকে সাথে নিয়েই যাবে।এখন তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়েনে।
আমিঃ আচ্ছা।

এই কথা বলে আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে কলেজের জন্য তৈরি হয়ে রুম থেকে বের হতেই দেখি সাদিয়া খাবার টেবিলে বসে আছে।আমি যেতেই,,,,
সাদিয়াঃ নে হাটাদে।
আন্টিঃ সেকিরে ও নাস্তা করবিনা।
সাদিয়াঃ না মা ও বলছে নাস্তা করবেনা।
আন্টিঃ ও আবার তোকে কখন বললো।
সাদিয়াঃ ওকে যখন ঘুম থেকে ডাকতে গেছিলাম তখন বলছে।
আমিঃ কি মিথ্যে কথা আমি আবার উনাকে কখন এই কথা বললাম।(মনে মনে)
আন্টিঃ কেন বাবা তোমার কি শরীর খারাপ।
আমিঃ না আন্টি আমার শরীর তো ভালোই আছে।
আন্টিঃ তাহলে নাস্তা করবা না কেন।
আমিঃ এইরে এখন কি বলি।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ আরে মা খাবেনা যখন তখন এতো জর করছো কেন।এমনিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

আন্টিঃ আচ্ছা যা তাহলে তোরা।
তারপর আমরা বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসলাম।
আমিঃ ঐ আমি আপনাকে কখন বলছি যে আমি নাস্তা করবো না।
সাদিয়াঃ কৈ বলিস নাই তো।
আমিঃ তাহলে আপনি আন্টিকে ঐ কথা বললেন কেন।
সাদিয়াঃ এটা হচ্ছে তোর দেরি করে ঘুম থেকে উঠার শাস্তি।
আমিঃ কিহ্।
সাদিয়াঃ হুমম। তাই বলছি কাল থেকে যদি না খেয়ে থাকতে চাও তাহলে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে।
আমিঃ কি মেয়েরে বাবা এমন মেয়ে জীবনে ও দেখিনি।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ ঐ এমন খাম্বার মত না দারিয়ে থেকে রিকশা ডেকে আন।
আমিঃ আমি কথা রিকশা খুজবো।আমিতো কিছুই চিনিনা।
সাদিয়াঃ কেন আমাকে যে তখন চলে যেতে বললি।এখন কেন এই কথা বলছিস।
আমিঃ নাহ্ এই মেয়ের সাথে কথায় পারা যাবেনা।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ কি হলো যা রিকশা খুজে নিয়ে আয়।
আমিঃ হুমম যাচ্ছি।

এই কথা বলে রিকশা খুজতে শুরু করলাম। এখন এই অপরিচিত জায়গায় রিকশা কথা গেলে পাবো কে জানে।ঐ যে একটা রিকশা দেখা যাচ্ছে। তারপর রিকশা নিয়ে বাসার সামনে আসলাম।

সাদিয়াঃ কিরে রিকশা আনতে এত সময় লাগে।
আমিঃ রিকশা না পেলে আমি কি করবো।
সাদিয়াঃ নে হয়ছে আর কথা বলা লাগবে না এখন রিকশা থেকে নামতো।
আমিঃ রিকশা থেকে নামলে আমি কিসে যাবো।
সাদিয়াঃ উফফ!!বেশি কথা না বলে যেটা বলছি সেটা কর।
আমিঃ ধূর আর ভালো লাগেনা।(রিকশা থেকে নামতে নামতে)
সাদিয়াঃ নে এবার ওঠ।
আমিঃ একই রিকশায় যাবো যখন তখন নামতে বলছিলেন কেন।(বিরক্ত নিয়ে)
সাদিয়াঃ আমার ইচ্ছে। এখন উঠবি নাকি আমি চলে যাবো।
আমিঃ এই না না উঠছি।(এক লাফে রিকশায় উঠলাম)

তারপর রিকশা চলতে শুরু করলো।
সাদিয়াঃইসস মন চাচ্ছে পাগল টার কাধে মাথা রাখি।কিন্তু ও যেই দূরে বসে আছে।(মনে মনে)
আমিঃমন চাচ্ছে সাদিয়ার হাত দুটি শক্ত করে ধরে রাখি কিন্তু যেই রাগি মেয়ে।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ ঐ দূরে সরে বোস।গা ঘেসে বাসার চিষ্টা করবি না।(রাগী ভাবে)
এই কথা শুনার সাথে সাথে আমি আর দূরে সরে বসলাম।
সাদিয়াঃ হয়ছে আর সরতে হবেনা।বেশি সরলে পরে গেলে আবার সমস্যা।
আমিঃ নাহ্ যেমন রাগীই হক না কেন মনের দিক দিয়ে ভালোই আছে।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ পাগল টাকে একটু সরে বসতে বলছি বলে ভয়ে হাত পা একদম জায়গা করে ফেলছে।খুব হাসি পাচ্ছে ওকে দেখে।নাহ্ হাসা যাবেনা এতে আবার পরে রাগ করতে পারে।(মনে মনে)

তার পর সাদিয়ার ভার্সিটির সামনে আসতেই আমাকে অভাক করে দিয়ে বলল……..
চলবে……..??

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *