সাদিয়াঃ হয়ছে আর সরতে হবেনা।বেশি সরলে পরে গেলে আবার সমস্যা।
আমিঃ নাহ্ যেমন রাগীই হক না কেন মনের দিক দিয়ে ভালোই আছে।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ পাগল টাকে একটু সরে বসতে বলছি বলে ভয়ে হাত পা একদম জায়গা করে ফেলছে।খুব হাসি পাচ্ছে ওকে দেখে।নাহ্ হাসা যাবেনা এতে আবার পরে রাগ করতে পারে।(মনে মনে)
তার পর সাদিয়ার ভার্সিটির সামনে আসতেই সাদিয়া আমাকে বল্লো,,,,,,
সাদিয়াঃ ঐ নে এটা ধর।(একটা টিফিন বক্স দিয়ে)
আমিঃ কি এটা।
সাদিয়াঃ দেখতেই পাচ্ছিস একটা টিফিন বক্স।(রাগি ভাবে)
আমিঃ হ্যা বুঝতে পারছি বক্স কিন্তু টিফিন বক্স দিয়ে আমি কি করবো।
সাদিয়াঃ কি করবি মানে এতে নুডলস রান্না করা আছে খেয়ে নিবি সকালে তো কিছুই খেতে পারিসনি।
আমিঃ,,,,,,,,,। (অভাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি)
সাদিয়াঃ ঐ এখন মুখটা বন্ধ কর না হলে মুখে আবার মাছি যাবে।(একটা হাসি দিয়ে)
আমিঃ উফফ!! আবার সেই হাসি। এমন হাসি দিলেতো আর কিছু খাওয়া লাগবেনা।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ আর মাম্মা এই নাও ভাড়া।(রিকশা ওয়ালাকে টাকা দিতে দিতে)
আমিঃ আরে আরে এটা কি করছেন আপনি কেন ভাড়া দিচ্ছেন।আপনার দিয়া লাগবেনা আমি বরং দিয়ে দেব।
সাদিয়াঃ ঐ পিচ্চি চুপ কর আসছে ভাড়া দিতে। তুই ছোট মানুষ কথা কম বলবি।
আমিঃ আমি কিন্তু পিচ্চি না।(মুখ গম্ভীর করে)
সাদিয়াঃ হুমম পড়িস কলেজে তাহলে পিচ্চি নাতো কি হ্যা। আর শোন কলেজ ছুটির পর সোজা রিকশা নিয়ে চলে আসবি আমি অপেক্ষা করবো।…
এই কথা বলে সাদিয়া চলে গেলো। আর আমিও চলে আসলাম। নাহ্ সাদিয়া আমার সাথে যেমনই রাগ দেখাক না কেন মনের দিক দিয়ে তো অনেক ভালো।তারপর আমিও ক্লাস শেষ করে একটা রিকশা নিয়ে সাদিয়ার ভার্সিটির সামনে আসতেই দেখি সাদিয়া আমার জন্য দারিয়ে আছে,,,,,,,
সাদিয়াঃ কিরে এত দেরি হলো কেন তোর।
আমিঃ কথায় দেরি করলাম। কলেজই তো দেরি করে ছুটি দিছে।
সাদিয়াঃ ঐ একদম মিথ্যা বলবিনা। আমি জানি কলেজ অনেক আগে ছুটি দিছে।(ঝারি দিয়ে)
আমিঃ কথায় মিথ্যা বললাম সত্যি বলছি কলেজ দেরি করে ছুটি দিছে।(মাথা নিচু করে)
সাদিয়াঃ থাক আর মিথ্যে বলতে হবেনা এখন সরে বশ।(রিকশায় বসলো)
সাদিয়া রিকশায় উঠার পর রিকশা ও চলতে শুরু করলো।কিছু দূর যাওয়ার পর সাদিয়া আমাকে বলে,,,,,
সাদিয়াঃ টিফিন খায়ছিস।
আমিঃএইরে এখন কি বলি।টিফিন তো খেতে মনেই ছিলো না।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ আমি কিছু জানতে চায়ছি।
আমিঃ না মানে আসলে হয়ছে কি টিফিন খেতে মনে ছিলো না।(ভয়ে ভয়ে)
সাদিয়াঃ তা মনে থাকবে কেন কলেজে এত সুন্দর সুন্দর মেয়েদের দেখলে টিফিন করতে মনে থাকবে কি করে।(রাগি ভাবে)
আমিঃ আসলে হয়েছে কি।
সাদিয়াঃ থাক তোকে আর কিছু বলা লাগবে না। তুই রিকশার থেকে নাম।
আমিঃ কিন্তু কেন।বাসাতো এখনও অনেক দূরে।
সাদিয়াঃ আগে নামতে বলছি।( চোখ লাল করে)
আমি আর কিছু না বলে চুপ করে ভয়েতে রিকশা থেকে নেমে গেলাম।
সাদিয়াঃ নে এখন হেটে হেটে বাসায় যা।
আমিঃ ঐ দেখেন এই রোদের ভেতর। হেটে বাসায় গেলেতো মারাই যাব।
সাদিয়াঃমারা গেলে যাবি কিন্তু এখন আর তুই আমার সাথে এক রিকশাতে যেতে পারবিনা।….
এই কথা বলে সাদিয়া চলে গেলো আমার কোন কথাই শুনলো না।আমার আর কি করার আমি চুপ করে হাটতে শুরু করলাম। সালা এই দুপুর বেলায় কোন রিকশার ও দেখা নাই তারপর আবার যা গরম পরেছে। আমি ও কেমন বুঝিনা। মেয়েটা এত কষ্ট করে আমার জন্য নুডলস আনছে তা খেলে কি হত। এসব কথা ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসলাম।ওহ্হ ঘামেতে শার্ট পুরো ভিজে গেছে। কলিং বেল দিতে সাদিয়া দরজা খুললো মনে হয় দরজার কাছেই বসে ছিলো তানাহলে একবার কলিং বেল বাজাতে কি করে দরজা খুলে দেয়।
সাদিয়াঃ ঐ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।(নরম সুরে)
আমিঃ নাহ্ আমি আর এখন কিছু খাবোনা।
সাদিয়াঃকেন খাবিনা হ্যা।
আমিঃ এমন গরমে হেটে আসার পর আমার আর খাওয়ার ইচ্ছে নাই।
সাদিয়াঃ খুব কষ্ট হয়েছে তোর তাই না।(মন খারাপ করে)
আমিঃ না না কষ্ট হবে কেন। আমার শরীর দেখে বুঝতে পারছেন না যে আমার কত ভালো লাগছে হেটে আসতে।
সাদিয়াঃ আচ্ছা যা আর কখনও এমন করবো না।এখন খেতে আয়।(করুন সুরে)
আমিঃ সত্যি তো।
সাদিয়াঃ হুমম সত্যি। নে এখন খেতে আয়।
আমিঃ ঠীক আছে।..
এই কথা বলে আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। কি করবো এমন ভাবে বলছে যে আমি আর মানা করতে পারলাম না।ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে আসতেই দেখি সাদিয়া আমার জন্য খাবার সাজিয়ে বসে আছে।আমি কাছে যেতেই দারিয়ে গেলো।
সাদিয়াঃএখানে বোস।
আমি কোন কথা না বলে চেয়ার টেনে বসে খেতে লাগলাম। সাদিয়া কে দেখলাম হাত পাখা দিয়ে আমাকে বাতাস করছে যদিও ফ্যান চলছে তারপর বাতাস করছে। এখন যেন মনে হচ্ছে সাদিয়া আমার বিয়ে করা বউ তাই স্বামী কে বাতাস করছে।
আমিঃ ফ্যান তো চলছে তাহলে বাতাস কষ্ট করে বাতাস করছেন কেন।
সাদিয়াঃ ফ্যানেতো বেশি বাতাস হচ্ছে না।
আমিঃ আরে আপনাকে বাতাস করতে হবেনা আপনি বসুনতো।(হাত ধরে বসিয়ে দিলাম)
সাদিয়াঃ কত্ত বড় শয়তান নিজে শুধু খেয়েই যাচ্ছে একটি বার আমাকে সাধার নামই নাই।(মনে মনে)
আমিঃ ওহ্হ বলতে ভুলেই গেছি আপনি খেয়েছেন তো।
সাদিয়াঃ যাক দেরি করে হলে জিজ্ঞেস করলো তাহলে।(মনে মনে)
আমিঃ কি হলো কিছু বলছেন না যে।
সাদিয়াঃ না খায়নি। তুই খাওয়ার পরা আমি খেতে বসবো।
আমিঃ না না এটা কি করে হয় আমি খাচ্ছি আর আপনি বসে থাকবেন এটা ভালো দেখায় না আপনি ও আমার সাথে খেতে বসুন।
সাদিয়াঃ বললাম তো তুই খাওয়া পর খাবো।
আমিঃ আচ্ছা ঠীক আছে আপনাকে খেতে হবেনা। আমি বরং আপনাকে খাইয়ে দিচ্ছি।
এই কথা বলার সাথে সাথে সাদিয়া আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।এভাবে তাকাতে দেখে আমি তো ভয় পেয়ে বললাম,,,,,
আমিঃ না থাক আপনি বরং পরে নিজের হাতেই খেয়ে নিবেন।
সাদিয়াঃ পাগলটার দিকে যেই একটু রাগি ভাবে তাকালাম অমনি বাচ্চাদের মত ভয় পেয়ে গেলো।খুব হাসি পাচ্ছিলো তখন ওর ভয় পাওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে। (মনে মনে)
সাদিয়াঃ কিরে কত সময় মুখ হা করে রাখবো খাইয়ে কি দিবি নাকি দিবিনা।
আমিঃ সত্যি আপনাকে খাইয়ে দেব।(অভাক হয়ে)
সাদিয়াঃ হুমম দে।
তারপর সাদিয়া কে খাইয়ে দিলাম। দুজনে খাবার শেষ করে আমি আমার রুমে গিয়ে শুয়ে থাকলাম। কখন যে চোখটা ঘুমতে লেগে গেছে বুঝতে পারিনি।বিকালে সাদিয়ার ডাকে ঘুম থেকে উঠি,,,,,,,,,
সাদিয়াঃ এই আরমান উঠতো।
আমিঃ উমম কি হয়ছে।(ঘুম ঘুম চোখে)
সাদিয়াঃ চলতো একটু শপিং এ যাবো।
আমিঃ আপমি যান এতে আমাকে নিয়ে যাওয়ার দরকার কি।
সাদিয়াঃ ঐ তোকে নিয়ে যাবো নাতো আর কাকে নিয়ে যাবো হ্যা।( জামার কলার ধরে)
আমিঃআরে আরে কি করছেন উঠছি তো আমি।
সাদিয়াঃ এখন উঠছিস কেন এর আগে ভালোভাবে বললে কথা কানে যায়না বুঝি।
আমিঃউফফ!!অসয্য।(অস্পষ্ট ভাবে)
সাদিয়াঃ ঐ কি বললি।
আমিঃ কিছুনা।(এই কথা বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম)
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি সাদিয়া অনেক সুন্দর করে সেজেছে। ও এমনিতে সুন্দর তারপর আবার হালকা মেকাপে ওকে আরো সুন্দর লাগছে,,,,
সাদিয়াঃ কিরে এমন হা করে তাকিয়ে কি দেখছিস।
আমিঃতোমাকে। (আনমনে)
সাদিয়াঃঐ কি বললি।(রাগি ভাবে)
আমিঃ কৈ কিছু নাতো।(ভয়ে ভয়ে)
সাদিয়াঃ আমি কিছু শুনলাম মনে হয়।(ভ্রু-ভাচ করে)
আমিঃ সত্যি কিছু বলিনি।(ভয়ে ভয়ে)
সাদিয়াঃপাগল একটা যা বলার বলে দিলে কি হয়।(মনে মনে)
তারপর সাদিয়া কে নিয়ে শপিংমলে গেলাম।সাদিয়া ওর জন্য জামা পছন্দ করতে লাগলো আর আমি একটু দোকানের অন্য সাইডে ঘুরে বেড়াচ্ছি।একটা জামা দেখে আমার খুব পছন্দ হয়ছে আমি সেটা দেখছি এমন সময় একটা মেয়ে স্টাফ এসে বলে,,,,,,,
স্টাফঃ হ্যালো স্যার।
আমিঃ হাই।
স্টাফঃ স্যার কি কিছু খুজছেন।আমাকে বলুন আমি আপনাকে সাহায্য করছি।
আমিঃ আরে নাহ্ আমি কিছুই খুজছি না।
স্টাফঃ স্যার আপনার পছন্দ আছে। এই জামাটাই আপনার গার্লফ্রেন্ড কে খুব মানামে।
আমিঃ সরি আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নেই।
এমন সময় সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি। সাদিয়া আমার দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে ওকে দেখে মনে হচ্ছে ওর চোখ দিয়ে আগুন জলছে।এটা দেখেতো আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম। তারপর দেখলাম সাদিয়া রাগ করে শপিংমল থেকে বার হয়ে গেলো। আমিও তার পেছন পেছন দৌড়ে যেতে লাগলাম। নাহ্ সাদিয়া রাগ করে রিকশায় করে চলে গেলো আমাকে থুয়ে। তারপর আমি ও একা একা বাসায় চলে আসলাম।বাসায় আসতেই আন্টি আমাকে বলে,,,,,,,
আন্টিঃ বাবা আরমান কি হয়ছে গেলে ২জনে এক সাথে কিন্তু আসলে আলাদা।
আমিঃ কৈ আন্টি আসছি তো এক সাথেই।আমি একটু বাইরে ছিলাম।(মিথ্যা বললাম)
আন্টিঃ তাহলে সাদিয়া কে দেখলাম রাগেতে রুমের দরজা আটকে দিলো।
আমিঃ নাহ্ আন্টি তেমন কিছু হয়নি।
এই কথা বলে আমি আমার রুমে চলে গেলাম। রাতে খাবার সময় খাবার টেবিলে গিয়ে সাদিয়া কে দেখলাম না।তারপর আমি আন্টিকে জিজ্ঞেস করলাম,,,,
আমিঃ আন্টি সাদিয়া কথায়।
আন্টিঃ আর বলোনা বাবা শপিংমলের থেকে এসে সেই যে রুমের দরজা আটকেছে অনেক ডাকলাম আর খুলি নাই।
আমিঃ আচ্ছা আন্টি আমি ডেকে আনছি।
আন্টিঃ দেখো বাবা তুমি যদি কিছু বলে আনতে পারো কিনা।
তারপর আমি সাদিয়ার রুমের সামনে গিয়ে,,,,
আমিঃ এই সাদিয়া আপু দরজা খুলেন আর খেতে আসেন।
সাদিয়াঃ,,,,,,,,,৷
আমিঃ আরে আপনার কি হয়ছে বলবেন তো নাকি।
সাদিয়াঃ আরমান তুই এখান থেকে যা আমাকে ডিস্টার্ব করিস না।
আমিঃআরে রাতের খাবার তো খেয়ে যান।
সাদিয়াঃউফফ!! আমাকে একটু একা থাকতে দে।
ওর এই কথা শুনে আমিও না খেয়ে আমার রুমে গিয়ে শুয়ে থাকলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে দেখি সাদিয়ার দরজা এখনও বন্ধ,,,,,,,
আন্টিঃ আরে বাবা তুমি দেখি তৈরি হয়ে গেছো। তুমি যাও টেবিলে বসো আমি তুমাকে নাস্তা দিচ্ছি।
আমিঃ আন্টি সাদিয়া আপু কি চলে গেছে।
আন্টিঃ নাহ্ ও আজ যাবেনা বলছে।
আমিঃ ও আচ্ছা। আন্টি তাহলে আমি যায়।
আন্টিঃ সেকি বাবা নাস্তা করে যাও রাতে ও তো কিছু খাওনি।
আমিঃ নাহ্ আন্টি ভালো লাগছে না।
এই কথা বলে আমি কলেজে চলে গেলাম। আজ ক্লাস করতে মন চাচ্ছে না। তারপর ও ক্লস শেষ করে বাসায় যাওয়ার জন্য রিকশার জন্য গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি এমন সময় আমার ক্লাসমেট (কথা) রিকশা করে এসে আমার সামনে রিকশা থামিয়ে বলে,,,,,,
কথাঃ আরে আরমান এখানে দারিয়ে আছো যে।
আমিঃ এইতো রিকশার জন্য অপেক্ষা করছি।
কথাঃ আরে এখন রিকশা পাবেনা চলো আমার সাথে।
আমিঃ আরেহ্ না তুমি যাও।
কথাঃ আরে চলতো। (আমার হাত ধরে জর করে রিকশায় উঠালো)
আমিঃ তুমি আবার শুধু শুধু কষ্ট করতে যাবে কেন।
কথাঃ আরে ধূর বন্ধুর জন্য আবার এটুকু কষ্টতো করতেই পারি।
আমিঃ তারপর ও।
কথাঃ বাদ দাওতো। আচ্ছা আজকে তোমার কি হয়ছে।
আমিঃ কৈ কিছু হয়নিতো।
কথাঃ না মানে তোমাকে আজ সারা ক্লাসে দেখলাম কেমন মনমরা হয়ে বসে আছো।
আমিঃ আরো তেমন কিছু না।
কথাঃ আমাকে কি বলা যাবে।
আমিঃ আরে বললাম তো তেমন কিছুনা।
কথাঃ আচ্ছা বলা লাগবে না।
আমিঃ ব্যাস ব্যাস মামা রিকশা থামাও।
কথাঃ কেন।
আমিঃ এইতো আমার বাসা।
কথাঃ ও আচ্ছা তাহলে কাল কলেজে দেখা হবে।
আমিঃ আরে আসো বাসার ভেতরে।
কথাঃ না অন্য একদিন আসবো।আর বাসাতো চিনে গেলাম।
আমিঃ আচ্ছা বাই।
এই কথা বলে আমি বাসার ভেতরে চলে গেলাম। তারপর দরজার সামনে এসে কলিং বেল দিতেই সাদিয়া এসে দরজা খুলে আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে থাকে।
আমিঃ এমন ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন।
সাদিয়াঃ,,,,,,,,,,,,,।(কিছু না বলে আমার শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে ওর রুমে নিয়ে গেলো)
আমিঃ আরে আরে কি করছেন ছারুন।
সাদিয়াঃ ঐ চুপ কর।বেশি কথা বললে একদম গলা টিপে মেরেই ফেলবো।
আমি ভয়ে আর কোন কথা বললাম না।তারপর সাদিয়া আমাকে বলতে শুরু করলো,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
সাদিয়াঃ ঐ মেয়ে কে।(রাগি ভাবে)
আমিঃ কোন মেয়ে।(না জানার ভাব ধরে)
সাদিয়াঃ ঐ কুত্তা একদম না জানার ভাব করবি না।
আমিঃ আরে কোন মেয়ের কথা বলছেন।
সাদিয়াঃ ও এখন তো চিনবি না। এত সময় রিকশায় কার সাথে আসলি।
আমিঃ ওওও তো আমার বন্ধু কথার সাথে আসছিলাম।
সাদিয়াঃ কেন হ্যা তোর ওর সাথে আসতো হবে কেন ২ দিন হলো কলেজে যাস এর মধ্যে মেয়ে বন্ধু ও হয়ে গেলো।
আমিঃ আরে আমি রিকশা পাচ্ছিলাম না তাই ও বললো চল তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি। তাইতো আসলাম ওর সাথে।
সাদিয়াঃ রিকশা পাওয়া যাচ্ছিলো না তো হেটে আসবি। ঐ মেয়ের সাথে আসলি কেন।
আমিঃ কি করবো ও এত করে বললো তাই আর না করতে পারলাম না।
সাদিয়াঃ আহারে কি দরদ। ঐ শোন এর পর থেকে যদি আমি ছাড়া অন্য কোন মেয়ের সাথে রিকশায় চড়িস তাহলে তোকে আমি মেরেই ফেলবো বলে দিলাম।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,,,। (চুপ)
সাদিয়াঃ আর আমি যেদিন ভার্সিটিতে যাবোনা তুইও সেদিন কলেজে যাবিনা বুঝলি।
আমিঃ আমার ক্লাস থাকলে কি করবো।
সাদিয়াঃ তোর যে কেমন ক্লাস আছে আমি জানি।শুধু অন্য মেয়েদের সাথে রিকশা করে আসার চিন্তা তাই না।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,,। (চুপ)
সাদিয়াঃ আমি বেঁচে থাকতে তোকে অন্য মেয়ের সাথে রিকশায় উঠা তো দূরের ব্যাপার কথাও বলতে দেবো না বুঝলি।তুই শুধু আমার আর আমারই থাকবি।
আমিঃ আমি শুধু আপনার মানে।
সাদিয়াঃ না কিছুনা।(এই কথা বলে রুম থেকে বার হয়ে গেলো)…..
উফফ!! বাঁচা গেলো। বাব্বা কি গুন্ডি মাইয়ারে বাবা। না বাবা আর কোন দিনও কারো সাথে রিকশা করে আসবো না। এই মেয়েকে নিয়ে বিশ্বাস নাই সত্যি সত্যি মেরে ফেলতে পারে। কিন্তু তুই শুধু আমার আর আমারই থাকবি এই কথার মানে কি। এতে সে কি বুঝাতে চেয়েছিলেন। কিছুই বুঝতে পারছি না। এসব কথা মনে মনে ভাবছি এমন সময় সাদিয়ার পড়ার টেবিলের দিকে আমার চোখটা একটা ডায়েরিতে আটকে গেলো।ডায়রিটা দেখে কেম জানিনা আমার পড়তে মন চাচ্ছে তাই আমি আর কিছু না ভেবে ডায়রিটা খুলতেই,,,,,,
ঠাসসসসসসসসস,
সাদিয়া আমাকে চর মারলো।আর আমি মুখে হাত দিয়ে ওর দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছি।
সাদিয়াঃ ঐ তোর সাহস হলো কি করে আমার ডায়রিতে হাত দেওয়ার।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,,।(চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি)
সাদিয়াঃ যাহ্ বের হো আমার রুম থেকে।
আমি আর কোন কথা না বলে চুপ করে রুম থেকে বার হয়ে নিজের রুমে চলে আসলাম। খুব খারাপ লাগছে আমার। কি এমন মহা ভুল করছি। সামান্য ডায়েরিটা তো একটু ধরছি মাত্র তার জন্য কি আমাকে এভাবে চর মারতে হবে।শুয়ে শুয়ে এসব কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নাই।
অন্যদিকে,
সাদিয়াঃ মা খেতে দাও খুব ক্ষিদে লেগেছে।
আন্টিঃ হুমম তুই বোস আমি তোর খবার দিচ্ছি।
সাদিয়াঃ হুমম তাড়াতাড়ি দাও।
আন্টিঃ কিরে আরমান কোথায়। ওকে ও ডাকদে ছেলেটা তুই খাসনি বলে সেই রাত থেকে ও কিছু খাইনি।
সাদিয়াঃ কি ও এখনও কিছু খাইনি।(অভাক হয়ে)
আন্টিঃ হ্যা এতো করে বললাম সকালে কিছু খেয়ে যেতে কিন্তু কিছুই খেলো না।
সাদিয়াঃ নাহ্ আরমান আমার জন্য না খেয়ে আছে আর সেই আমি কিনা ওকে মারলাম। নাহ্ এটা ঠীক হয়নি আমার।(মনে মনে)
আন্টিঃ আচ্ছা মা তুই একটু ডাকদেনা ওকে।
সাদিয়াঃ আচ্ছা মা তুমি খাবার দাও আমি ওকে ডেকে আনছি।
আন্টিঃ ঠীক আছে।…..
দূর আমি যে আসলে রাগের মাথায় কি করি কিছুই বুঝিনা। কি দরকার ছিলো ওকে থেকে চর মারার। তাছাড়া কি করবো ও যদি ডায়েরি টা খুলতো তাহলে তো সব কিছু বুঝে নিতো৷ কারণ সম্পূর্ণ ডায়েরি টা জুরে শুধু ওকে নিয়ে লেখা।পাগলটা দেখি বাচ্চাদের ঘুমিয়ে আছে। ইসস!! ওর মুখটা একদম লাল হয়ে গেছে।রাগের মাথায় চরটা মনে হয় অনেক জরে মেরে ফেলছি। নাহ্ আজ থেকে ওকে আর কোন কষ্ট দেবো না। এখন থেকে আস্তে আস্তে একটু একটু করে ভালোবাসতে শুরু করবো। এই কথা গুলো বলে আমার গালে একটা ভালোবাসার স্পর্শ একে দিতেই আমার ঘুম ভেঙে গেলো,,,,,,,,,
আমিঃ একি আপনি আমার রুমে।
সাদিয়াঃ তুই নাকি কাল রাত থেকে না খেয়ে আছিস।
আমিঃ আপনাকে এসব কথা কে বললো।
সাদিয়াঃ মা আমাকে সব বলেছে।এখন বেশি কথা না বলে খেতে চল।
আমিঃ না আপনি যান আমার এখন খেতে মন চাচ্ছে না।
সাদিয়াঃ দেখ বেশি কথা বললে চর দেবো আর একটা।
আমিঃ হুমম পারেন তো শুধু চরই মারতে। তাহলে দেরি করছেন কেন এই গালেতো একটা মারছেন এখন অন্য গালটা আর বাকি রাখবেন কেন।
সাদিয়াঃ বাব্বা পিচ্চির দেখি রাগও আছে।
আমিঃ আমি পিচ্চি না। আর আমি কেন রাগ করবো।
সাদিয়াঃ আচ্ছা যা তুই পিচ্চি না এখন ফ্রেশ হয়েনে।
আমিঃ বললাম তো আমি খাবোনা আপনি যান।
সাদিয়াঃ আচ্ছা বাবা সরি।আর এমন ভুল করবো না।তবুও তুই রাগ করিস না।
আমিঃ,,,,,,,,,,,। (চুপ)
সাদিয়াঃ কি হলো কিছু বলছিস না কেন।আমাকে ক্ষমা করেদে প্লিজ।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ)
সাদিয়াঃ ঐ কত্তা সরি বলার পরও কেন চুপ করে আছিস হ্যা।(শার্টের কলার ধরে)
আমিঃ হ্যা হ্যা আপনাকে মাপ করে দিছি।(ভয় পেয়ে)
সাদিয়াঃ হুমম গুড এখন যা ফ্রেশ হয়ে আয়।
আমিঃ শার্টের কলার ছারবেন তারপর তো যাবো।
সাদিয়াঃ আচ্ছা যা।(কলার ছেরে দিয়ে)
তার পর আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম আয়নার দিকে তাকিয়ে আমিতো অভাক। একি আমার মুখে লিপস্টিক এর দাগ।দাগটা দেখে মনে হচ্ছে কেউ কিস করছে। এটা দেখেতো আমি টেনশনে পড়ে গেলাম এই দাগ কথা থেকে এলো কে যানে।আচ্ছা কেউ তো আমায় কিস করছে বলেতো মনে হয়না আচ্ছা সাদিয়া আবার এটা দেখেনিতো।ধূর এসব নিয়ে আর ভাবতে চায়না। বাইরে এসে দেখি সাদিয়া এখনও বসে আছে।আমি শুধু তোয়ালে পড়েছিলাম সাদিয়াকে দেখে আমি আবার এক দৌড়ে বাথরুমে চলে গেলাম,,,,,
সাদিয়াঃ কিরে তুই আমাকে দেখে এভাবে দৌড় দিলি কেন।
আমিঃ আপনি এখনও এখানে বসে আছেন কেন।
সাদিয়াঃ তো কি করবো আমি যদি চলে যায় তাহলে তুই তো দেরি করে আসতি তাই তোকে নিয়ে যাবো।
আমিঃ আপনি এখন যান আমি আসতেছি।
সাদিয়াঃ কেন আমার সাথে গেলে সমস্যা কি।
আমিঃ আরে আপনি বুঝতেছেন না কেন।
সাদিয়াঃ কি বুঝবো হ্যা।
আমিঃ আরে আমি তোয়ালে পড়ে আছি।আপনার সামনে আসি কি করে।
সাদিয়াঃ কেন তোয়ালে পড়ে আমার সামনে আসতে কি সমস্যা।
আমিঃ ধূর আমার লজ্জা করে।
সাদিয়াঃ কয়দিন পরতো এমনিই আমার হবে এতে করে লজ্জার কি আছ।(বির বির করে)
আমিঃ ঐ কি বললেন।
সাদিয়াঃ না কিছু না।
আমিঃ হুমম তাহলে এবার আপনি গেলে আমি বাইরে আসতাম।
সাদিয়াঃ আচ্ছা যাচ্ছি যাচ্ছি।
এই কথা বলে ও চলে গেলো।উফফ!! বাবা শেষ পর্যন্তুক গেলো গুন্ডিটা।এমনিতে আছি লিপস্টিক এর দাগ নিয়ে টেনশনে তারপর আবার ওর সাথে কথা কাটাকাটি। তারপর আমি বাইরে এসে তৈরি হয়ে নিচে চলে গেলাম। নিচে যেতেই টেবিলে বসতেই সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে মিট মিট করে হাসছে এটা দেখেতো আমার মনের ভেতর আরো চিন্তা বেরে গেলো। মোবাইল বের করে নিজের মুখ দেখতে লাগলাম কে জানে কোন দাগ আছে কিনা।
আন্টিঃ একি আরমান তোর মুখে এসব কিসের দাগ।
আমিঃ এইরে এখন কি বলি।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ আম্মু মনে হয় মশাই কামড়েছে।
আন্টিঃ না না এতো মশার কামড় মনে হচ্ছে না। সত্যি করে বলো বাবা কি হয়ছে।
আমিঃ আসলে আন্টি এটা চরের দাগ।(এই কথা বলে সাদিয়ার দিকে তাকাতেই দেখি ও আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে)
আন্টিঃ কিহ্ চরের দাগ। কে মেরেছে তোমায়।তুমি কি ওকে চিনো নাম বলো শুধু।
আমি সাদিয়ার দিকে তাকাতেই ও আমাকে ইশারায় বলতে না করলো।আমিও একটা হাসি দিয়ে বললাম,,,,,
আমিঃ না আন্টি আমাকে কেউ মারেনি।আসলে ঘুমিয়ে ছিলাম গালে মনে হয় মশা বসছিলো তাই ঘুমের মধ্যে মশাকে চরটা মারছি।আর চরটা মনে হয় জরে মারছি
আন্টিঃ তুমি যে কি করোনা বাবা।এমন জরে কেউ চর মারে মুখটা একদম লাল হয়ে গেছে।
আমিঃ কি করবো আন্টি ঘুমের মধ্যে কিছুই বুঝতে পারিনি।
আন্টিঃ এই সাদিয়া তুই খেয়ে আরমান এর ঘরে মশারি টানিয়ে দিবি।
সাদিয়াঃ ঠীক আছে।
তারপর আমরা ২জনে এক সাথে খাবার শেষ করলাম। খাবার শেষ করে আমি আমার রুমে চলে গেলাম। আমার পেছন পেছন সাদিয়া ও আমার রুমে আসলো,,,
সাদিয়াঃ ধন্যবাদ।
আমিঃ কিসের জন্য।
সাদিয়াঃ এই যে আম্মুকে তখন সত্যিটা বলার জন্য।
আমিঃ আপনি কি মনে করছেন আপনাকে বাঁচানোর জন্য আমি মিথ্যা বলছি।
সাদিয়াঃ তা নয়তো কি।
আমিঃ হাহাহা। তাহলে আপনি ভুল মনে করছেন। আমি আন্টিকে এই জন্য মিথ্যা বলছি কারণ সত্যি বললে আন্টি মনে কষ্ট পেতো তাই বলিনি।
সাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আর কিছু না বলে আমার রমে মশারি টানিয়ে দিয়ে চলে গেলো। আমিও শুয়ে পড়লাম। সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য আমি তৈরি হয়ে রুম থেকে বের হয়ে দেখি সাদিয়া এখনও রুমে বসে সাজছে। অবশ্য ওকে না সাজলেও সুন্দর দেখায় শুধু শুধু সাজার কি দরকার বুঝিনা বাপু,,,,,,
আমিঃ আপু আজ কিন্তু আপনি লেট করছেন।
সাদিয়াঃ তাতে কি হয়ছে।
আমিঃ তাতে কি হয়ছে মানে।আপনার না লেট করা পছন্দ না।আর আমি কিন্তু আজ না খেয়ে যেতে পারবোনা বলে দিলাম।
সাদিয়াঃ তোকে আজ না খেয়ে যাওয়া লাগবেনা।
আমিঃ আপনি এমন লেট করলে তো না খেয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
সাদিয়াঃ বারে আমি তৈরি হবোনা নাকি।
আমিঃ আপনাকে তো এমনি সুন্দর লাগে তারপর আবার সাজার দরকার কি।
সাদিয়াঃ,,,,,,,,,।(লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।)
তারপর আমরা নিচে এসে নাস্তা করে বাসা থেকে বার হলাম।আমি যেই রিকশা খুজার জন্য যাবো তখনই সাদিয়া আমাকে জা বলে,,,,,,,
চলবে….