সিনিয়র আপু যখন বউ পর্ব_০৪


এই কথা বলে আমি বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। নাহ্ আমি যে কি করি রাগের মাথায় যে সাদিয়া কে কি বলছি কিছুই মনে নাই এখন ভালোই ভালোই সাদিয়া আমাকে ক্ষমা করে দিলে হয়।বাসায় এসে কলিং বেল দিতেও কেন জানিনা ভয় করছে। অবশেষে মনের ভয়কে জয় করে কলিং বেলে দিলাম চাপ। চপ দিয়ার কিছু সময় পর দরজা খুললো। দরজা খুলার সাথে সাথে আমি তো পুরাই অবাক হয়ছি। কারণ দরজা খুলেতে যাকে দেখলাম তাকে দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
দরজা খুলার সাথে সাথে বাবাকে দেখি।

আমিঃ বাবা তুমি কখন এলে।(অবাক হয়ে)
বাবাঃ বলছি তোকে আগে ভেতরে আয়।
তার পর আমি ভেতরে যেতেই বাবা আমাকে,,,,ঠাসসসসসসস চর মারলেন,,,
আমিঃ একি বাবা তুমি আমাকে মারলে কেন।(মুখে হাত দিয়ে)
বাবাঃ চুপ একদম চুপ একটা কথাও বলবিনা তুই।(রেগেমেগে)
এই কথা বলে বাবা আমার হাত ধরে টানতে টানতে আমার রুমে নিয়ে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে গেলো।এসব আমার সাথে কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। কে জানে সাদিয়া বাসায় এসে কি বলছে যার কারণে আমাকে আজ রুমে বন্দী করে রাখছে। আর মা-বাবা কেন হঠাৎ করে এখানে আসার কারণ কি। ধূর কিছুই ভালো লাগছে না। এসব কথা চিন্তা করতে করতে কখন যে চোখটা লেগে ঘুম এসে গেছে বুঝতে পারিনি। সন্ধ্যার সময় মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠি।

মাঃ এই আরমান এখন উঠে পর বাবা।
আমিঃ মা, বাবা আমাকে কেন রুমের ভেতর আটকে দিলো।
মাঃ সেটা তোর বাবাকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর আামাকে বলছিস কেন।
আমিঃ মা তুমি তো জানো আমি বাবাকে ভয় পাই। বাবার সামনে আমি কিছুই বলতে পারিনা।
বাবাঃ কে কাকে ভয় পাই।(রুমের ভেতর প্রবেশ করে)
আমিঃ কাউকে না।
বাবাঃ এর ভেতর একটা পাঞ্জাবি আছে যাও এগুলো পরে এখনই নিচে চলে আসো।(আমার দিকে একটা প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে)
আমিঃ আমরা কি কারো বিয়েতে যাচ্ছি যে পাঞ্জাবি পড়বো।
বাবাঃ বিয়েতে যাচ্ছি না। আজ তোমারই বিয়ে।
আমিঃ কিহ্,আমার বিয়ে মানে।(অবাক হয়)
মাঃ হ্যা তোরই বিয়ে।
আমিঃ মানে কি আমার বিয়ে আর তোমরা আমাকে একটি বারও আমার মত জানতে চাইলে না।
বাবাঃ তোমার নিজের ভালো মন্দ বোঝার বয়স এখনও হয়নি।
আমিঃ তাহলে তো আমার বিয়ের বয়স ও হয়নি তাহলে এখন বিয়ে দিচ্ছো কেন।
বাবাঃ এত বেশি কথা বলিস কেন। এখন যদি তোমার বিয়ে না দেয় তাহলে ২ দিন পর যে কোন খারাপ কাজ করবে না তার কি নিশ্চিতা আছে।
আমিঃ ছিঃ বাবা আমার প্রতি তোমার এই বিশ্বাস।
বাবাঃ তোমার প্রতি বিশ্বাস আগে ছিলো কিন্তু আজকের পর থেকে বর নেই।
আমিঃ কেন আজকে আমি কি করছি।
বাবাঃ সেটা তো তুমিই ভালো জানো।এখন বেশি কথা না বলে যাও এগুলো পড়ে আসো।
আমিঃ নাহ্ আমি এই বিয়ে করতে পারবো না। চিনিনা জানিনা হঠাৎ করে যার তার সাথে বিয়ে দিবে এটা আমি মানতে পারবো না। আর তাছাড়া আমি এখনও কলেজে পড়ি বিয়ের পর বউকে খাওয়াবো কি।
বাবাঃ বিয়ের পর বউকে কি খাওয়াবে সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা। আর মেয়ে তোমার অচেনা কেউনা।তুমি তাকে ভালো করেই চেনো।
আমিঃ আমি চিনি মানে তুমি কার কথা বলছো।(আমতা আমতা করে)
বাবাঃ যার সাথে তোমার বিয়ে দিচ্ছি সে আর অন্য কেউ না সে হচ্ছে সাদিয়া।
আমিঃ কিহ্ সা সা সাদিয়া। (আমতাআমতা করে)
বাবাঃ হ্যা ঠীকই শুনছিস সাদিয়ার সাথেই তোমার বিয়ে। সেই ছোট বেলা থেকে আমি আর সাদিয়ার বাবা তোমাদের ২জনের বিয়ে ঠীক করছিলাম।
আমিঃ কিন্তু সাদিয়া তো আমার সিনিয়র।
বাবাঃ তাতে কি হয়ছে। আর এই ২/৩ বছরের ছোট বড়ই কিছু হয়না।
আমিঃ তারপর ও বাবা আমি।(আমাকে পুরো কথা বলতে না দিয়ে)
বাবাঃ আর কোন কথা না অনেক কথা বলছো তুমি এখন চুপ করে তৈরি হয়ে চলে আসো।
এই কথা বলে বাবা চলে গেলো।ধুর আর ভালো লাগে না। শেষ মেষ এই রাগি গুন্ডী মেয়েকে আমার বিয়ে করতে হবে। বাবা ও কিছু বোঝে না। জেনে শুনে নিজের ছেলেকে জল্লাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। এত চেষ্টা করলাম বাবাকে বোঝানোর কিন্তু কিছুতেই বুঝতে চেষ্টা করলো না। মন চাচ্ছে ঐ মেয়ে কে বিয়ে না করে বাসা থেকে কথাও পালিয়ে যায় কিন্তু আমার পুড়া কপালে সেই সুযোগ ও নাই।

মাঃ সেকিরে তুই এখনও তৈরি হসনি। নিচে তোর জন্য সবাই অপেক্ষা করছে।
আমিঃ মা তোমরা জেনে শুনে কেন আমার জীবনটা নষ্ট করছো কেন।
মাঃ ছিঃ বাবা এসব কি কথা। আমরা কেন তোর জীবন নষ্ট করতে যাবো।
আমিঃ তাহলে কেন সাদিয়ার মত একটা রাগী গুন্ডী মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দিচ্ছো।
মাঃ কথায় রাগী জানিস সাদিয়া খুব ভালো একটা মেয়ে দেখবি তোকে খুব ভালোবাসবে
আমিঃ ভালোবাসবে না ছাই।সিনিয়র বলে শুধু শাসন করবে।তোমরা তো ওকে এখনও চেনোই না। আমিতো এই কয়দিনে ওকে খুব ভালো করে চিনতে পারছি।(মনে মনে)
বাবাঃ কি গো আরমানের মা তোমাদের আর কত সময় লাগবে।
মাঃ নে বাবা আর কোন কথা না বলে তৈরি হয়েনে।দেখচিস তো তোর বাবা খুব রেগে আছে।
এই কথা বলে মা বাইরে চলে গেলো।তারপর আর কি করার কোন উপায় না পেয়ে তৈরি হয়ে রুমের বাইরে চলে আসলাম। বাইরে এসেতো আমি অবাক এত মানুষ জন কথা থেকে আসলো।আর বাড়িটা ও পুরো বিয়ে বাড়ির মত করে সাজানো। এত তাড়াতাড়ি এত কিছু কি করে করলো এটাই আমার মাথায় আসছে না।

মাঃ কিরে তোর হয়ে গেছে।
আমিঃ হুমম না হয়ে কি কোন উপায় আছে।
মাঃ বাহ্ আমার এই ছোট্ট ছেলেটাকে তো আজ রাজ পুত্রের মত লাগছে।(কপালে একটা কিস দিয়ে)
তারপর মা আমাকে নিচে নিয়ে গেলো। সেখানে ছোট করে একটা স্টেজ সাজানো হয়ছে সেখানে আমাকে বসতে দিলো। আমার পাশের চেয়ার টা ফাঁকা তার মানে এখানে সাদিয়া বসবে। পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখি বাবা আমার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। মনে করছে আমি একা থাকলে মনে হয় পালিয়ে যাবানি। সালা আজ যেন নিজেকে বলির পাঠা মনে হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর সাদিয়া কে সিড়ি দিয়ে নামতে দেখলাম। সাদিয়া কে দেখে মনে হচ্ছে সে খুব খুশি। অবশ্য সাদিয়া কে এই বউ সাজে খুব সুন্দর লাগছে। নাহ্ এসব কি ভাবছি আমি। না না আমার সাদিয়া কে নিয়ে ভাবা একদম চলবে না।তাহলে ওর প্রতি আর বেশি দুর্বল হয়ে পড়বো। যদিও আমি সাদিয়া কে সেই প্রথম থেকে ভালোবাসি কিন্তু এভাবে বিয়েটা আমি মেনে নিতে পারছিনা। এ জন্যে হয়তোবা আমি সাদিয়ার মত খুশি হতে পারছিনা। এসব কথা নিজের মনে মনে ভাবছি এমন সময় সাদিয়ার চোখে আমার চোখ পড়তেই সাদিয়া আমাকে চোখ টিবি মেরে একটা মুচকি হাসি দিলো।তারপর সাদিয়া কে আমার পাশে বসানো হলো। সাদিয়া আমার কানে কাছে মুখ এনে বলে,,,,,,,

সাদিয়াঃ আমাকে বেশি কথা বলা তাইনা। আগে বিয়েটা হতেদে তারপর দেখ আমি তোর কি করি।
এই কথা শুনে তো আমি ভয়ে শেষ। বিয়ের আগে যেই ভবাে চর মারছে না বিয়ের পর তো মনে হয় মেরেই ফেলবে। বাবা গো তুমি আমাকে এ কার হাতে তুলে দিচ্ছো আমি এ বিয়ে করবো না। এসব কথা মনে মনে ভাবছি এর মধ্যে বাবা বলেন,,,,
বাবাঃ কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করুন।

তারপর কাজি সাহেব বিয়ে পড়াতে শুরু করলেন। বিয়ের আনোসঙ্গিক সব কাজ শেষ করে সাদিয়ার সামনে একটা খাতা দিয়ে বললেন,,,,,,
কাজি সাহেবঃ দেখি মা এখানে তোমার সিঙ্গ নেসার করতো।
কাজি সাহেব এর এই কথা বলতে দেরি কিন্তু সাদিয়া কে দেখলাম করতে দেরি করি নাই।এটা দেখে তো আমি অবাক মনে হচ্ছে আমাকে মারার জন্য আর তোর সইছে না।এর পর কাজি সাহেব খাতাটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন,,,,,,
কাজি সাহেবঃ নাও বাবা এবার তুমি এখানে একটা স্বাক্ষর করো।
আমিঃ,,,,,,,,,,,। (কলম হাতে নিয়ে চুপ করে বসে আছি)
কাজি সাহেবঃ কি হলো বাবা করো।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ)
কাজি সাহেবঃ কি ব্যাপার আপনার ছেলেতো কিছুই বলছেনা।
বাবাঃ দাড়ান আমি দেখছি। কিরে সিঙ্গনেসার করিস না কেন।
আমিঃ কেউ কি জেনে শুনে মরতে চায় নাকি।(মনে মনে)
বাবাঃ ঐ তাড়াতাড়ি সিঙ্গনেসার কর বলছি।(ঝারি মেরে)
আমিতো এবার ভয়ে ভয়ে তাড়াতাড়ি সিঙ্গ নেসার করে দিলাম।
কাজি সাহেবঃ আলহামদুলিল্লাহ। এবার বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হলে।
আশে পাশে তাকিয়ে দেখি বিয়েটা হয়ে যাওয়াতে সবাই খুব খুশি। সাদিয়া কে দেখে তো আমার সব থেকে বেশি খুশি মনে হচ্ছে। কেমন ওর বন্ধু দের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে ওকে দেখে কেউই বলবে না যে আজ ওর বিয়ে হয়েছে। এত কিছু দেখার পর আমার তো বুক ফেটে কান্না আসছে কিন্তু কান্না তো দূরের কথা আমিতো কথাই বলতে পারছি না। আজ আমার বাবা-মাকে ও আমার শত্রু মনে হচ্ছে। তানা হলে কি কেউ আর নিজের সন্তানের সাথে এমন করে। আস্তে আস্তে রাত হতে লাগলো আর বাসাও ফাঁকা হয়ে গেলো।

তারপর আমার মা এসে সাদিয়া কে আমার রুমে নিয়ে গেলো।আমি যে তার ছেলে আমার যে একটু খবর নেবে তানা করে যার বাসা তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আর এদিকে আমি একা একা নিচে বসে আছি। ধূর নিচে আর ভালো লাগছে না তাই আর কিছু না ভেবে ছাদে চলে গেলাম। ছাদে গিয়ে ভাবতে লাগলাম না জানি কপালে কি আছে।আজ থেকে নিজের স্বাধীনতা হারালাম।যেই রাগী মেয়ে ওর কথা না শুনলে তো আমাকে চর খেতে খেতে মরে যেতে হবে। এসব কথা ভাবার সময় নিজের অজান্তে মুখে হামি এলো। হৎাত সাদিয়া এসে…….
সাদিয়াঃএখানে কেন?
আমিঃ আমি এখানে থাকি না অন্য কোথাও থাকি তাতে আপনার কি।
সাদিয়াঃ আমার কি মানে। আমার ই সব।চলো রুমে
আমিঃ না আপনি জান আমি যাবো না।
সাদিয়াঃ ছিঃ নিজের বিয়ে করা বউ কে কি কেউ আপনি করে বলে নাকি। তুমি করে বলো।
আমিঃ অ্যাঅ্যাঅ্যা কিসের বউ আমি আপনাকে বউ হিসেবে মানিনা। আর তুমি করে বলা প্রশ্নেই আসেনা।
সাদিয়াঃ ঐ কি বললি তুই আমাকে বউ হিসেবে মানিস না মানে।(কলার ধরে)
আমিঃ আরে আরে কি করছেন পড়ে যাবত ছারুন বলছি।
সাদিয়াঃ আগে বল আর কখনও আপনি করে বলবি।
আমিঃ আপনি করে বলবো নাতো কি করবো আপনি তো আমার সিনিয়র।

সাদিয়াঃ সিনিয়র তাতে কি হয়ছে এখন তো তোমার বিয়ে করা বউ তাই না। তাই এখন থেকে তুমি করে বলবি।
আমিঃ ঠীক আছে এখন থেকে তুমি করে বলবো। এবারত আমাকে ছারুন না হলে পরে যাবো।
সাদিয়াঃ হুমম মনে থাকে যেন।(ছেড়ে দিয়)
আমিঃ কি গুন্ডী মেয়েরে বাবা।
সাদিয়াঃ গুন্ডামীর দেখছিস কি। কেবল তো শুরু আগে আগে দেখতে থাক কি হয়।
আমিঃ এমন গুন্ডী মেয়েকে কেউ কি কখনও বউ হিসাবে মানতে পারে।
সাদিয়াঃ তোকে মানতে হবেনা। কি করে বউ এর অধিকার নিতে হয় সেটা আমার ভালো করেই জানা আছে।
আমিঃ আশ্চর্য তুমি এমন তুই তুই করে কথা বলছো কেন।
সাদিয়াঃ তুই জানিস না রাগ উঠলে আমার মাথা ঠীক থাকেনা। তখন আমি তুই করে কথা বলি।
আমিঃ বাবারে তুমি এ কোন গুন্ডী মেয়ের হাতে আমাকে তুলে দিলে।(মনে মনে)
সাদিয়াঃ আচ্ছা ভালো ভাবে বলছি এখন আমাকে কোলে করে রুমে নিয়ে চলো।
আমিঃ আমি পারবো না তোমাকে নিয়ে যেতে। তুমি হেটে যেতে পারোনা।
সাদিয়াঃ তুমি নেবে কিনা বলো।
আমিঃ একবার না বলছিতো।
সাদিয়াঃ আচ্ছা ঠীক তোমাকে নিতে হবে না।…
এই কথা বলে সাদিয়া চলে গেলো।উফফ!! বাবা বাঁচা গেলো। এতক্ষণ তো আমাকে পুরো পাগল বানিয়ে দিচ্ছিলো। এখন একটু শান্তি লাগছে।একটু পর খেয়াল করলাম সাদিয়া আবার আমার কাছে আসছে কিন্তু এবার আর ও একা আসেনি। এবার ওর সাথে করে আমার বাবাকে নিয়ে আসছে।এবার তো আমি শেষ না জানি বাবাকে বানিয়ে বানিয়ে কি কথাই না বলছে,,,,,,,,,,,

বাবাঃ কিরে আরমান এসব কি শুনছি।
আমিঃ কি শুনছো বাবা।(ভয়ে ভয়ে)
বাবাঃ তুমি নাকি বৌমার কোনো কথা শুনছো না।
আমিঃ কথাই শুনি নাই ওর সব কথায় তো শুনছি।
সাদিয়াঃ না বাবা ও মিথ্যা বলছে ও আমার একটা কথাও শুনেনি।
বাবাঃ কিরে আমাকে মিথ্যা বলা হচ্ছে।
আমিঃ না বাবা আমি।(পুরো কথা বলতে না দিয়ে)
বাবাঃ চুপ কর আর কোন কথা শুনতে চায়না আমি। এর পর থেকে যদি শুনি তুই বৌমার কথা শুনছিস না তাহলে তোর একদিন আর আমার যে কয়দিন লাগে।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,,,।(চুপ করে আছি)
বাবাঃ বৌমা এর পর থেকে যদি এই শয়তানটা তোমার কথা না শুনে তাহলে আমাকে বলবে।তারপর দেখো আমি ওর কি করি।
সাদিয়াঃ আচ্ছা বাবা। (হাসি দিয়ে)
এর এই কথা বলে বাবা চলে গেলো আর আমি বোকার মত চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি।সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি মিটমিট করে হাসছে।এর পর আমার কাছে এসে বলে,,,,,,,,,

সাদিয়াঃ নাও এখন তাহলে আমাকে কোলে করে রুমে নিয়ে যাও।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,,,,,,। (চুপ)
সাদিয়াঃ কি হলো নেবে না। তাহলে আমি বরং আর একবার বাবাকে ডেকে নিয়ে আসি।
এই কথা বলে সাদিয়া হাটা দিতে লাগলো আর আমি সাথে সাথে ওর হাত ধরে বলি,,
আমিঃ ঐ আমি না করলাম কখন।
সাদিয়াঃ তাহলে নাও এখন কোলে।
আমিঃ হুমম নিচ্ছি।
এই কথা বলে ওকে কোলে তুলে নিলাম। উফফ!! বাবা কি ভারি মনে হচ্ছে আটার বস্তুা নিয়ে যাচ্ছি। বিয়ের প্রথম দিনেই এই অবস্থা আরো তো দিন বাকি আছে না জানি সামনে আমার কপালে আর কত দুঃখ আছে।তার রুমে গিয়ে ওকে খাটের কাছে গিয়ে বললাম,,,,,,

আমিঃ নাও এবার তো নামো।
সাদিয়াঃ তুমিই নামিয়ে দাও।(এই কথা বলে আরো শক্ত করে আমার গলা ধরে রাখলো।
আমিঃ উফফ!! কি যন্ত্রনা।
এই কথা বলে ওকে খাটের ওপর যেই নামাতে গেলাম তখনই ও আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো,,,,,,,
আমিঃ এই ছাড়ো বলছি আমাকে।
সাদিয়াঃ ছাড়বো কেন আমি কি অন্য কাউকে জরিয়ে ধরছি নাকি যে ছেড়ে দেব।
তারপর অনেক কষ্টে ওর হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারি। এর পর আমি আমার বালিশ আর একটা কাঁথা নিয়ে নিচে বিছানা বানিয়ে শুয়ে পড়লাম,,,,,,,,

সাদিয়াঃ আরে আরে এটা কি হলো।
আমিঃ দেখতেই তো পাচ্ছো কি হলো।
সাদিয়াঃ মানে কি তুমি নিচে ঘুমাবে।
আমিঃ নিচে যেহেতু বিছানা তৈরি করছি তাহলে তো নিচেই ঘুমাবো ।
সাদিয়াঃ ঐ তুই নিচে ঘুমাবি মানে। তাহলে আমি কথায় ঘুমাবো।
আমিঃ কেন তুমি খাটে ঘুমাবে।
সাদিয়াঃ তুইও আমার সাথে খাটে ঘুমাবি চল।
আমিঃ না আমি তোমার সাথে এক খাটে ঘুমাতে পারবো না।
সাদিয়াঃ ঐ এক খাটে ঘুমাতে পারবিনা মানে কি হ্যা তোকে বিয়ে করছি একা খাটে ঘুমানোর জন্য নাকি।(রাগি ভাবে)
আমিঃ আরে আরে এভাবে আমার কলার ধরলে তো দম বন্ধ হয়ে যাবে।
সাদিয়াঃ তাহলে ভালোই ভালোই খাটে যা বলছি।(রাগী ভাবে)
আমিঃ ঐ সিনিয়র বলে কি তুমি যা বলবে তাই শুনতে হবে নাকি।
সাদিয়াঃ হুমম আমি তোর শুধু সিনিয়র না। আমি তোর সিনিয়র বউ বুঝলি। তাই ভালোই ভালোই খাটে যা বলছি।
আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ)
সাদিয়াঃ তাহলে দারা আমি এখনই আমার শশুর মশাইকে ডাকতে যাচ্ছি।
এই কথা বলতে দেরি আছে আমার খাটে উঠতে দেরি নাই। কারণ এখন যদি বাবা কে গিয়ে কিছু বলে তাহলে তো বাবা আমাকে মেরেই ফেলবে।

সাদিয়াঃ কি হলো এখন ভালো ছেলের মত খাটে উঠলে কেন।
আমিঃ ভাবলাম বাবা কে এত রাতে ডাকতে যাবে। তার আসতে কষ্ট হবে তাই তাকে কষ্ট না দেওয়ার জন্য খাটে উঠলাম।
সাদিয়াঃ তাই নাকি।
আমিঃ হুমম তুমি আবার ভেবোনা যে তুমি ভয় দেখায় ছো বলে খাটে উঠছি।
সাদিয়াঃ হুমম খাটে উঠার কারণ যাই হকনা কেন এখন ওদিকে সরো।
তার পর আমি আর কোন কথা না বলে খাটের এক কর্ণারে গিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে শুয়ে আছি। এর পর সাদিয়া আমার পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো,,,,,,

আমিঃ এসব কি হচ্ছে তুমি এভাবে জরিয়ে ধরছো কেন।
সাদিয়াঃ আমার না কোলবালিশ জরাই ধরে ঘুমানোর অভ্যাস।
আমিঃ তাহলে তুমি ওপাশে কোলবালিশ আছে সেটা কে জরিয়ে ধরে ঘুমায়।
সাদিয়াঃ এখানে কোন কোলবালিশ নেই।
আমিঃ মানে। আমার কোলবালিশ কথায় গেলো।
সাদিয়াঃ ওটা আমি ফেলে দিছি।
আমিঃ ফেলে দিছো মানে কিন্তু কেন।
সাদিয়াঃ কারণ এই ছোট খাটে ৩ জনে ঘুমাতে পারবো না।
আমিঃ ৩ জন কথায় এখানে তো মাত্র ২ জন আমি আর তুমি।
সাদিয়াঃ অ্যাঅ্যাঅ্যা ঐ যে কোলবালিশ কে নিয়েই তো ৩ জন।
আমিঃ আমি তো ঐ কোলবালিশ টা ছাড়া ঘুমাতে পারিনা তাহলে এখন আমি কি জরিয়ে ধরে ঘুমাবো।
সাদিয়াঃ কেন তুমি আমাকে আর আমি তোমাকে ২ জন ২ জনকে জরিয়ে ধরে ঘুমাবো।
আমিঃ নাহ্ আমি তোমাকে কিছুতেই জরিয়ে ধরে ঘুমাবো না।
সাদিয়াঃ তুমি না ঘুমালে না ঘুমাবে কিন্তু আমি তো তোমাকে জরিয়ে ধরেই ঘুমাবো।
এই কথা বলে আবার আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়লো আমি আর কিছুই বললাম না কারণ জানি আমার কথা শুনবে না। আমার ও মন চাচ্ছে ওকে ভালোবেসে বুকে জরিয়ে নিতে কিন্তু কেন জানিনা একটা বাধা অনুভব করছি। আজ সারাদিনটা যে কি ভাবে কেটে গেলো বুঝতে পারিনি। আর আমার যে বিয়ে হয়ছে এটা তো আমার কাছপ স্বপ্নের মত মনপ হচ্ছে। এসব কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি টের পাইনি।
অন্যদিকে সাদিয়া..
পাগলটা বলে আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাবে না। এখনতে ঠীকই ঘুমের মধ্যে আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। এদিকে সকাল ও হয়ে এসেছে ওকেতো ছাড়াতে পারছিনা।ছাড়াতে গেলো ও আরো আমাকে শুক্ত করে জরিয়ে ধরছে। নাহ্ থাক এভাবে শুয়ে থাকুক। আমি নরলে যদি ওর আবার ঘুম ভেঙে যায়।

সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি সাদিয়া কে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছি। এটা দেখার সাথে সাথে ওর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। যাক বাবা মনে হয় ওর ঘুম ভাঙ্গেনি। আসলে ঘুমের মধ্যে বুঝতেই পারিনি কখন যে ওকে জরিয়ে ধরে শুয়ে ছিলাম। একদম বাচ্চাদের মত করে শুয়ে আছে।আর ওর সামনের চুল গুলো একদম ওর মুখের উপর পরে মুখটাকে ঢেকে রাখছে মন চাচ্ছে ফু-দিয়ে ওর সেই চুল গুলো সরিয়ে দি। হঠাৎ করে সাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,,,,,,
চলবে……….

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *