সিনিয়র আপু যখন বউ পর্ব_০৫


সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি সাদিয়া কে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছি। এটা দেখার সাথে সাথে ওর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। যাক বাবা মনে হয় ওর ঘুম ভাঙ্গেনি। আসলে ঘুমের মধ্যে বুঝতেই পারিনি কখন যে ওকে জরিয়ে ধরে শুয়ে ছিলাম। একদম বাচ্চাদের মত করে শুয়ে আছে।আর ওর সামনের চুল গুলো একদম ওর মুখের উপর পরে মুখটাকে ঢেকে রাখছে মন চাচ্ছে ফু-দিয়ে ওর সেই চুল গুলো সরিয়ে দি। হঠাৎ করে সাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

সাদিয়াঃ অমন করে আমার দিকে তাকিয়ে কি দেখো হ্যা।(হাসি দিয়ে)
আমিঃ কথায় আমি তোমার দিকে তাকিয়ে আছি। (হতভম্ব হয়ে)
সাদিয়াঃ আমার কাছে মিথ্যা বলে লাব নাই আমি ঠিকই বুঝতে পারছি তুমি আমার দিকেই তাকিয়ে ছিলে।
আমিঃ না না তুমি ভুল বুঝেছ।আর আমি কেন তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতে যাবো।
সাদিয়াঃ আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে যাবে কেন। তাইনা কিন্তু রাতে তো ঠিকই আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে ছিলে।
আমিঃ এইরে তার মানে ও বুঝে গেছে যে আমি ওকে জরিয়ে ধরে শুয়ে ছিলাম। (মনে মন)
সাদিয়াঃ কি হলো এখন চুপ করে আছো কেন এটাত অস্বীকার করতে পারবে না।
আমিঃ ও তো ঘুমের মধ্যে বুঝতে পারিনি তাই তোমাকে জরিয়ে ধরছিলাম।(আমতা আমতা করে)
সাদিয়াঃ ঘুমের মধ্যে ধরো আর ইচ্ছে করো জরিয়ে তো ধরেছো আমাকে।
আমিঃ ঘুমের মধ্যে না হয় একটু জরিয়ে ধরছি তাতে কি এমন হয়ছে শুনি।
সাদিয়াঃ ঘুমের মধ্যে যখন ধরেছো তাহলে এখন একটু ভালোবেসে আদর করে বুকে জড়িয়ে নাও।
আমিঃ আমি কি পাগল যে ভালোবেসে তোমাকে জরিয়ে নেব। তোমাকে জরিয়ে ধরার থেকে ভালো আমি বিদ্যুৎ এর পিলার কে জরিয়ে ধরবো।(মজা করে)
সাদিয়াঃ কি বললি তুই। আমার থেকে পিলার ভালো তাই না। তোকে তো আজ আমি মেরেই ফেলবো শয়তান।
এই কথা বলে বালিশ দিয়ে আমাকে বারি দিতে লাগলো। এইরে মনে হয় খুব রেগে গেছে এখন কি করি।

আমিঃ আরে আরে করছো কি ব্যাথা পাই লাগছে তো।
সাদিয়াঃ ব্যাথা লাগার জন্যই তো মারতেছি।
তারপর আমি ওর মারের হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ওর হাত দুটি শক্ত করে ধরে ওর উপরে শুয়ে পড়ি। আশ্চর্য ও নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করলো না বরং ওর রাগটা যেন ভেনিস হয়ে গেলো। সাদিয়া আমার দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে। আমি ওর চোখের দিকে তাকাতেই আমার কাছে মনে হলো ওর চোখ দুটোতে যেন কোন মায়া আছে আর আমি যেন সেই মায়াই হারিয়ে যাচ্ছি। এই প্রথম আমি সাদিয়া কে এতো কাছ থেকে দেখছি। ওর গোলাপি রঙের ঠোঁট জোড়ার দিকে তাকাতেই দেখি ওর ঠোঁট জোড়া কাপছে।ওর নিশ্বাস যেন ভারি হয়ে আসছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে ওর ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁট জোড়া কে আকর্ষন করছে। আমি যেন আস্তে আস্তে সেদিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। ঠীক এমন সময় কে যেনো দরজায় ধাক্কা দিতে লাগলো।
আমি তাড়াতাড়ি করে সাদিয়ার উপর থেকে সরে গেলাম। সাদিয়া ও আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসতে হাসতে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। নাহ্ হঠাৎ করে আমার একি হলো আমি কেন সাদিয়ার প্রতি এত দূর্বল হয়ে পড়লাম।না না এত তাড়াতাড়ি ওর উপর দূর্বল হলে চলবেনা। সাদিয়া দরজা খুলার পর আমার ছোট বোন সুলতানা এসে বলে,,,,,,

সাদিয়াঃ আমার মিষ্টি ননদিনী তুমি আর আসার সময় পেলেনা আর একটু পরে আসতে।
সুলতানাঃ কেন ভাবি আমি এসে ডিস্টার্ব করলাম নাকি তোমাদের।
সাদিয়াঃ তাতো একটু করেছে বটে।কারণ এক্ষুনি তোমার ভাইয়া আমাকে। যাগগে এসব কথা এখন বলতো কেন এসেছো।
সুলতানাঃ ভাবি তোমার আর ভাইয়ার জন্য সবাই খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছে।
আমিঃ আচ্ছা তুই যা আমি আসিতেছি।
সুলতানাঃ তুমি একা এসনা ভাবিকে সঙ্গে করে নিয়ে এসো।
এই কথা বলে সুলতানা চলে গেলো আর সাদিয়া সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধ করে একটা মুচকি হাসি দিয়ে ধীর গতিতে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। ওকে এভাবে আসতে দেখে আমিও এক’পা দু’পা করে পেছতে লাগলাম। একটা সময় দেওয়ালের সাথে আমার পীঠ ঠেকে যাওয়ার কারণে আমি আর পেছতে পারলাম না।এর পর সাদিয়া আমার কাছে এসে আমার শরীরে দু’পাশে ওর দুহাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। এমন ভাবে হাত রাখছে যে আমি একদম নড়তে পারছি না। তার পর আমি ওকে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করি,,,,,,

আমিঃ এ এ একি তুমি এভাবে হাসছো কেন আমার দিকে তাকিয়ে। (তুতলাতে তুতলাতে)
সাদিয়াঃ একটু আগে তো খুবই সাহস এসে পড়ছিলো মনে তাই না।
আমিঃ না না মানে।(ভয়ে ভয়)
সাদিয়াঃ তখন তো খুব সাহস নিয়ে আমাকে কিস করতে গেছিলে কিন্তু করতে পারো নাই তাহলে এখন তো আমি তোমার কাছে এসেছি এখন কিস করো।
আমিঃ কি বলছো তুমি।
সাদিয়াঃ কি হলো এখন কেন ভয়তে তোমার শরীর কাঁপছে।
আমিঃ কোথায় কাপছে। আর আমি কিসের জন্য ভয় পেতে যাবো।
সাদিয়াঃ তাতো তোমাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে। নিজের বউকে কিস করবে এতে আবার ভয় কিসের। আচ্ছা যাও তোমকে করতে হবেনা আমি করছি।
আমিঃ আরেহ্ মা তুমি।(মিথ্যা বললাম)
এই কথা বলার সাথে সাথে সাদিয়া আমাকে ছেড়ে দেয় আর আমিও সুযোগ পেয়ে এক দৌড়ে বাথরুমে চলে যায়।আসলে ওর হাত থেকে ছাড়া পাবার জন্য এই অভিনয় টুকু করলাম।

সাদিয়াঃ আরমান এর ফল ভালো হবেনা কিন্তু আমাকে বোকা বানানো তাইনা। এর ফল ভালো হবেনা কিন্তু।
আমিঃ হাহাহাহা যখন হবে দেখা যাবে।
সাদিয়াঃ এভাবে নিজেকে আমার কাছ থেকে কত দিন পালিয়ে পালিয়ে রাখবে।
আমিঃ আমি আর তোমাকে এত সহজে ধরা দিচ্ছি না।
সাদিয়াঃ ঐ শয়তান দরজা খোল বলছি।
আমিঃ এ দরজা তুমি নিচে না যাওয়া পর্যন্তুক খুলবেনা।
সাদিয়াঃ আচ্ছা আমিও দেখবো তুই কত সময় পর্যন্তুক এভাবে থাকতে পারিস।
তারপর আমি অনেক সময় ধরে বাথরুমে বসে থাকার পর দেখলাম সাদিয়ার কোন সারা শব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই আমি দরজাটা একটু খুলে দেখতে লাগলাম সাদিয়া কথাও আছে কিনা। নাহ্ ওকে কথাও দেখা যাচ্ছেনা। মনে হয় ও নিচে চলে গেছে। যাক বাবা এবার আমি বের হতে পারি। বাথরুম থেকে বের হয়ে যেই আলমারির দিকে যেতে লাগলাম ওমনি কথা থেকে সাদিয়া এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো। তার পর হাসতে হাসতে বললো,,,,,,,,,,,,

সাদিয়াঃ এখন কোথায় যাবে হ্যা।(হাসতে হাসতে)
আমিঃ তু তুমি হঠাৎ করে কোথা থেকে আসলে।
সাদিয়াঃ কি মনে করছিলে তুমি আমাকে বোকা বানিয়ে এভাবে পার পেয়ে যাবে।
আমিঃ আরে তুমি যে কি বলোনা তোমাকে কেন বোকা বানাবো। তুমিতো খুবই চালাক।
সাদিয়াঃ আমাকে পাম দেওয়া হচ্ছে তাইনা। কিন্তু তোমার পামে আমি ফুলছিনা।
আমিঃ না না পাম দেবো কেন সত্যি বলছি তো।
সাদিয়াঃ হয়ছে আর সত্যি বলতে হবে না। আমাকে বোকা বানানোর জন্য এখন তোমাকে কান ধরে ১০০ বার উঠবস করতে হবে।
আমিঃ কিহ্।আমি স্কুলে ও কোন দিন কান ধরে উঠবস করি নাই।
সাদিয়াঃ স্কুলে করো নাই তাতে কি হয়ছে এখন করতে হবে।নাও শুরু করো।
আমিঃআমি পারবো না।
সাদিয়াঃ তুই পারবিনা তোর ঘারে পারবে।(এই কথা বলে টেবিল থেকে স্কেল টা নিলো)
আমিঃ আজকের মত মাপ করে দেওয়া যায়না।(ভয়ে ভয়ে)
সাদিয়াঃ না না কোন মাপ নাই।
তারপর কি করার জানি বলে কোন লাব.. যেই কান ধরে উঠবস করতে যাবো ঠিক তখনই সাদিয়ার মা ঘরে প্রবেশ করে।

আমিঃ আরে আন্টি আপনি।(সাদিয়ার মা ঘরে প্রবেশ করলো)
সাদিয়াঃ হাহাহা এবার আর আমাকে বোকা বানাতে পারবে না।
আন্টিঃ এসব কি হচ্ছে সাদিয়া।
সাদিয়াঃ আরে মা তুমি।(অবাক হয়ে)
আন্টিঃ আরমান বাবা তুমি এমন কান ধরে আছো কেন।
আমিঃ এসব আপনি আমাকে জিজ্ঞেস না করে সাদিয়া কে করুন।
আন্টিঃ সাদিয়া এসব কি হচ্ছে তুই জামাই বাবাজি কে কান ধরতে বলছিস কেন।
সাদিয়াঃ আসলে আম্মু। (পুরো কথা বলতে না দিয়ে)
আন্টিঃ চুপ করো বেয়াদব মেয়ে। স্বামীর সাথে কেউ এমন করে।
তার পর আন্টি সাদিয়া কে অনেক বোকা ঝোকা করলো।আর আমি সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসতে লাগলাম। সাদিয়া আমার হাসতে দেখে রাগেতে চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমার তো ভিশন খুশি লাগছে। তারপর আন্টি আমাকে বলে,,,,,,,,

আন্টিঃ বাবা চলো তুমি আমার সাথে।ওকে তো আমি পরে দেখে নেবো।
তার পর আমি আন্টি পেছন পেছন যেতে লাগলাম। পেছন ফিরে একবার সাদিয়ার দিকে তাকাতেই দেখি ও আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে। তার পর আমি খাবার টেবিলে বসে আছি একটু পর সাদিয়া আসলো এসেই আমার সামনের চেয়ারে বসলো। দেখলাম সাদিয়া চুপ করে মাথা নিচু করে খাবার খাচ্ছে। আমার দিকে তাকাতেই আমি ওকে চোখ টিপি মারলাম। তার পর সাদিয়া আমাকে পা-দিয়ে আমার পায়ে চিমটি কাটে,,,,,,,,

আমিঃ আআআআআ।(চিৎকার করে উঠলাম)
মাঃ কিরে এভাবে চিৎকার করলি কেন।
আমিঃ মনে হয় পায়ে বিড়ালে চিমটি দিছে।
আন্টিঃ কিন্তু আমাদের বাসায় তো কোন বিড়াল নেই।
আমিঃ আরে আন্টি আপনি জানেন না এ বাসায় তো বড় একটা বিড়াল আছে।(সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম)
এই কথা বলার সাথে সাথে সবাই সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো।
সাদিয়াঃ হুমম আমাকে নিয়ে যত মজা করার করে নাও যখন একা পাবো তখন দেখে নেব।(মনে মনে)
তারপর আমি খাওয়া শেষ করে রুমে চলে গেলাম। রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম একটু পর সাদিয়া আমাকে এসে বলে,,,,,,,,

সাদিয়াঃ কি ব্যাপার তুমি এখন শুয়ে আছো কেন।
আমিঃ তো কি করবো।
সাদিয়াঃ কি করবা মানে তোমার কলেজ নাই আজ।
আমিঃ কিহ্ আজ কলেজে যেতে হবে। (অবাক হয়ে)
সাদিয়াঃ কেন আজ এমন কি যে কলেজে যেতে হবে না।
আমিঃ না মানে আমি বলছিলাম কি বিয়ের পরের দিন কি কেউ কলেজে যায় নাকি।
সাদিয়াঃ কে যায় আর না যায় সেটা দেখার বিষয় না তুমি যাবে।
আমিঃ না আমি আজ যাবো না।
সাদিয়াঃ কেন যাবেনা শুনি।
আমিঃ এই যে আমি বিয়ে করছি এটা যদি বন্ধুরা শুনে তা হলে হাসাহাসি করবে।
সাদিয়াঃ হাসাহাসি করলে তোমার কি। চলো আজ আমিও তোমার সাথে তোমার কলেজে যাবো।
আমিঃ কিহ্ তুমি আমার সাথে যাবে মানে।
সাদিয়াঃ কেন আমি গেলে কি কোন সমস্যা।
আমিঃ না সমস্যা হবে কেন।
সাদিয়াঃ তাহলে আর কোন কথা না বলে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও।
এই কথা বলে সাদিয়া চলে গেলো। নাহ্ এ মেয়ে দেখছি মান সম্মান কিছুই রাখবেনা। এখন যদি বন্ধুরা কোন ভাবে জানতে পারে যে আমি বিয়ে করছি তাহলে তো আমি শেষ। মাইর একটাও শরীরে ছাড়া বাইরে পড়বেনা। তারপর তো আবার ট্রিট তো আছেই। ধুর ভালো লাগে না। তারপর আমি তৈরি হয়ে বাইরে চলে আসলাম। সাদিয়া কে দেখলাম আগে থেকে তৈরি হয়ে বসে আছে আমি যেতেই আমার পিছু পিছু হাটতে শুরু করলো। রিকশাতে করে দুজনে যেতে লাগলাম। সাদিয়া আমার হাত ধরে কাধে মাথা রেখে বসে আছে। আর ওর চুল গুলো বাতাসে উরে আমার মুখের উপর পড়ছে। আমার মনের ভেতর যেন এক অন্য রকম ভালো লাগা বিরাজ করছে। এভাবে কখন যে কলেজের সামনে চলে আসছি কিছুই বুঝতে পারিনি।

সাদিয়াঃ কি হলো তোমার আবার।(মুচকি হাসি দিয়ে)
আমিঃ কৈ কিছু হয়নি তো।( একটু লজ্জা পেয়ে)
সাদিয়াঃ তাহলে রিকশা থেকে নামছো না কেন।
আমিঃ ওওও চলে আসছি নাকি।
সাদিয়াঃ কেন তুমি বুঝতে পারছো না বুঝি৷ মন কোথায় তোমার।
আমিঃ মন মনের জায়গা তে আছে এখন ভাড়া দেন।
সাদিয়াঃ আমি ভাড়া দেব মানে।
আমিঃ হুমম তুমি আমার সিনিয়র তাই তুমিই ভাড়া দেবে।
সাদিয়াঃ সিনিয়র হয় আর জুনিয়র হয়। স্বামীর সাথে বের হলে স্ত্রীরা কি কখনও টাকা নিয়ে বের হয় নাকি।
আমিঃ তার মানে।
সাদিয়াঃ মানেটা খুব সোজা আমার কাছে কেন টাকা নেই তাই ভাড়া তুমি দেবে।
তার পর আর কি করার বাধ্য হয়ে এখন ভাড়াটা আমাকেই দিতে হচ্ছে। ভাড়া দিয়ে পেছনে ফিরে দেখি সাদিয়া নাই। হায় হায় সাদিয়া আবার এক মূহুর্তে কোথায় গেলো। এই মাত্র না এখানেই ছিলো। এসব কথা বলতে বলতে কলেজের ভেতর প্রবেশ করে দেখি সাদিয়া আমার বন্ধুদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। আমি উনাকে খুজে মরছি আর উনি ওখানে দাঁত কেলিয়ে হাসতেছে। আমি কাছে যেতেই সকলের হাসি বন্ধ হয়ে গেলো আর আমার বন্ধুরা আমার দিকে কেমন জানি রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে।

আমিঃ কিরে তোরা এভাবে আমরা দিকে তাকিয়ে আছিস কেন।
কথাঃ কেন তাকিয়ে আছি তুই বুঝতে পারছিস না।
আমিঃ আশ্চর্য তোরা কেন এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছিস সেটা আমি জানবো কেমন করে।
আকাশঃ ঐ সালা তুই বিয়ে করছিস একবারও জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না।
আমিঃ আসলে। (পুরো কথা বলতে না দিয়ে)
রিদয়ঃ আসলে ও তো আমাদের বন্ধুই মনে করে না তাই জানানোর দরকার মনে করেনি।
আমিঃ আসলে তুরা ভুল ভাবছিস। বিয়ে টা হঠাৎ করে হয়ে গেলো। আমিতো নিজেই জানতাম না।
সাদিয়াঃ তুমি ওদের মিথ্যা বলছো কেন। তুমিতো সবই জানতে। বন্ধুদের দাওয়াত না দিয়ে এখন ট্রিট দিয়ার ভয়ে মিথ্যা বলছো তাই না।(হাসতে হাসতে)
আমিঃ হায় হায় মাইয়া কৈ কি। (মনে মনে)
আকাশঃ তবেরে সালা।
এই কথা বলে ব্যাস সবাই মিলে মারতে মারতে বললো,,,,

রিদয়ঃ আজই আমাদের ট্রিট দিবি চল।
সাদিয়াঃ আমার তরখ থেকে ২/১ টা মারো।
আমিঃ কি মেয়েরে বাবা নিজের স্বামীকে মারতে বলছে।(মনে মনে)
তারপর ওরা আমাকে টানতে টানতে রেস্টুরেন্ট এর কাছে নিয়ে গেলো। নাহ্ সাদিয়া তো আমায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। এমনিতেই আজ টাকা কম তারপর আবার এই ট্রিট। এখন কি করি বন্ধুরা তে ইচ্ছা মত সব কিছু ওডার করছে। আমি দাঁড়িয়ে শুধু বোকার মত দেখছি।এমন সময় সাদিয়া আমার কানের কাছে এসে বলে,,,,,,,,,,,,,

সাদিয়াঃ এটা হচ্ছে সকালে আম্মুর কাছে আমাকে বোকা শুনানোর আর খাবার টেবিলে আমাকে বিড়াল বলার শাস্তি।
এই কথা বলে হাসতে হাসতে ও একটা চেয়ার টেনে বসলো।আর আমি দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলাম। শাস্তি যে দিবে সেটা তো আগেই জানতাম কিন্তু এভাবে দিবে ভাবতে ও পারিনি। সালার এখন মানসম্মান টা থাকলে হয়। নাহ্ বাবা এই মেয়ের সাথে আর কোন কিছু করা যাবেনা। তারপর না জানি আবার কি করে।

সাদিয়াঃ কি ব্যাপার তুমি এভাবে দাড়িয়ে আছো কেন।
আমিঃ,,,,,,,,,,। (চুপ)
কথাঃ কিরে তুই বসতে পারছিস না।
তারপর আর কি করার একটা চেয়ার টেনে সাদিয়ার সামনে বসে পরলাম। ও শুধু আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে। একটু পর খাবার চলে এলো। খাবার দেখে তো আমার অঙ্গান হওয়ার মত অবস্থা। এত খাবারের অডার দিছে এগুলো খাবে কে।
আমিঃ কিরে এত খাবার খাবে কে।
আকাশঃ কেন আমরা খাবো।
আমিঃ এত খাবার খেতে পারবি।
রিদয়ঃ কেন পারবোনা তুই শুধু দেখতে থাক।
তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ হওয়ার পর সাদিয়া আমাকে বলে,,,,,,,

সাদিয়াঃ তুমি এখানে বসো আমি একটু আসছি।
আমিঃহুমম যাও।
একটু পর সাদিয়া আসলো। আমরা সকলে মিলে কথা বলতে লাগলাম।

কথাঃ কিরে তাহলে এখন বরং আমরা যায়।
আমিঃ কেনরে আর একটু সময় থাক।
আকাশঃ নারে এমনিতে অনেক সময় থাকলাম। এখন তুইও ভাবিকে একটু সময় দে।
এই কথা বলে ওরা চলে গেলো। আর আমি গেলাম বিল দিতে।বিল দিতে গিয়েতো আমি ওভাক।কারণ বিলটা নাকি সাদিয়া দিয়ে দিছে। নাহ্ মেয়েটা যতই শয়তানি করুক না কেন মনটা দেখছি অনেক ভালো। তারপর আমি সাদিয়ার কাছে যেতেই বলে,,,,,,,,,,

সাদিয়াঃ কি মি.। বিল দিলেন না যে।
আমিঃ আমি আর দেবো কি তার আগেই তো তুমি দিয়ে দিলে।
সাদিয়াঃ হুমম এখন আমি দিছি কারণ আমার এই জুনিয়র জামাই টা তো আর চাকরি করে না যখন করবে তখন তো আর আমি দেবো না।
আমিঃ ওমা তাই বুঝি।তাহলে তো সারাজীবন ও চাকরি করবো না।
সাদিয়াঃ তবেরে শয়তান।
আমিঃ আরে আরে কি করছো এটা পাবলিক পেলেস।
সাদিয়াঃ তাতে কি হয়ছে আমি কি আর অন্য কাউকে মারছি নাকি।
আমিঃ আমার মত এমন একটা বাচ্চা কে মারলে তো সবাই ভাব্বে তুমি শিশু নির্যাতন করছো।
সাদিয়াঃ দু’দিন পর নিজে বাচ্চার বাবা হবে এখনও নিজেকে বাচ্চা ভাবা হচ্ছে তাইনা।
আমিঃ না ভাবার কি আছে তুমি তো শুধু আমার নামেই বউ এছাড়া কি আমাদের মধ্যে আর কোন সম্পর্ক হয়েছে নাকি।(মজা করে বললাম)
সাদিয়াঃ নামে বউ তাইনা আগে বাসায় চল তারপর দেখাচ্ছি।
আমিঃ এইরে মনে হয় রেগে গেছে।(মনে মনে)
এই কথা বলে সাদিয়া রেস্টুরেন্ট থেকে বার হয়ে গেলো। আর আমিও ওর পিছু পিছু যেতে লাগলাম।

আমিঃ আরে ও সাদিয়া।
সাদিয়াঃ,,,,,,,,,,। (চুপ)
আমিঃ আরে বাবা আমি তো মজা করছিলাম।
সাদিয়াঃ,,,,,,,,,,,।(চুপ)
তারপর সাদিয়া আর কোন কথা না বলে চুপ করে একটা রিকশা নিয়ে যেতে লাগলো। আমি দৌড়ে গিয়ে তার পাশে বসলাম। কিন্তু ও আমার সাথে আর কোন কথা বললো না। অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকলো। বাসার সামনে এসে রিকশা থেকে নেমে তাড়াতাড়ি বাসার ভেতরে চলে গেলো। তারপর আমি বাসার ভেতর যেতেই আমার বাবা আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। আর সাদিয়া কে দেখলাম মা’র পাশে দারিয়ে আছে। না জানি বাবাকে ও কি বলেছে এখন তো আমি শেষ। তার পর বাবা আমার কাছে এসে বলে,,,,,,,,,,,
চলবে……..

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *