সিনিয়র আপু যখন বউ পর্ব_০৮


আমিঃ মা সাদিয়া তো রুমে নেই।কথা গেছে ও।
আন্টিঃ বাবা তুমি ছাদে যাও ওখানে ওকে পাবে।

কি ব্যাপার এই রাতে আবার ও ছাদে গেলো কেন। ধুর এই পাগলিটাকে নিয়েও পারিনা।কখন যে কি করে নিজেও জানে না। তারপর আমি ও ছাদে গেলাম। ছাদে গিয়ে সাদিয়া কে খুজতে লাগলাম ঠিক তখনই,,,,,,,

পেছন থেকে কে যেন হাত দিয়ে আমার চোখটা বন্ধ করে ধরলো। আমার আর বুঝতে বাকি রইলনা যে এটা সাদিয়া ছাড়া অন্য কেউনা।তারপর আমি সাদিয়া,,,,,,
আমিঃ আরে সাদিয়া এ কেমন ফাজলামো হচ্ছে।

সাদিয়া আমার চোখ ছেরে দিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো আমার চোখ ওর চোখে পড়তে ও যেন লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো।

আমিঃ আরে এই পাগলি তোমার আবার কি হলো।
সাদিয়াঃ তোমার জন্য একটা খুশির খবর আছে।
আমিঃ কি খুশির খবর বলো।
সাদিয়াঃ বলবো আগে তুমি চোখ বন্ধ করো।
আমিঃ আশ্চর্য এর জন্য আবার চোখ বন্ধ করতে হবে কেন।
সাদিয়াঃ আমার লজ্জা করছে।
আমিঃ আরে কি এমন খুশির খবর যে চোখ বন্ধ না করলে বলা যাবেনা।
সাদিয়াঃ সেটা তো চোখ বন্ধ না করলে বুঝতে পারবে।
আমিঃ ওকে বাব্বা চোখ বন্ধ করছি। এবার তো বলো।
তারপর সাদিয়া আমার কানের কাছে এসে বলে,,,,,,

সাদিয়াঃ তুমি বাবা হতে যাচ্ছ।
আমিঃ সত্যি।
সাদিয়াঃ হ্যা সত্যি তুমি বাবা আর আমি হতে যাচ্ছি।
আমিঃ উফফ!! তুমি আমাকে এই খুশির খবর টা আগে দিলে না কেন।
সাদিয়াঃ তোমাকে সারপ্রাইজ দেবো তাই।

কথাটা বলার সময় লজ্জায় যেন সাদিয়ার মুখ লাল হয়ে গেছে। তারপর আমি সাদিয়া কে কোলে তুলে নিয়ে সারা ছাদে ঘুরতে লাগলো।

সাদিয়াঃ আরে আরে কি করছো পড়ে যাবো ত।নামাও বলছি।
আমিঃ না না এখন আর আমি তোমাকে পড়ে দেবোনা। উফফ!! তোমাকে বলে বুঝাতে পারবোনা যে আজ আমার কি আনন্দ হচ্ছে।
সাদিয়াঃ তো মি.বাবুর আব্বু এবার আমাকে নামান।
আমিঃ না না আমিতো তোমাকে নামাবো না। তোমাকে নিয়ে এভাবে রুমে যাবো।
সাদিয়াঃ আরে তুমি কি পাগল হলে নাকি।
আমিঃ হ্যা হ্যা আমি সত্যি আজ আনন্দে পাগল হয়ে গেছি।

তারপর সাদিয়া আর কোন কথা না বলে আমার গলা জড়িয়ে ধরে রাখলো। আর আমি ওকে কোলে করে নিচে নামলাম। নিচে নামতেই সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে মিটমিট মিটমিট করে হাসতে লাগলো। এবার তাদের হাসির কারণ বুঝতে পারলাম। আমাদের এভাবে দেখে বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করে,,,,,,,,,

বাবাঃকিরে ওর আবার পায়ে কি হলো।
আমিঃ কেন বাবা মা তোমাকে কিছু বলেনি।
বাবাঃ কি বলার কথা বলছে ও।
মাঃ আরে তুমি দাদু হতে চলছে গো।
বাবাঃ কিহ্ এত বড় একটা সু-খবর আমাকে এখনও না জানিয়ে বসে আছো।যাও তোমাদের কারো সাথে আমার কথা নাই।(অভিমানে)
সাদিয়াঃ বাবা আপনি রাগ করবেন না।আসলে আমিইক সবাইকে মানা করছি বলার জন্য। প্লিজ আমার প্রতি রাগ করে থাকবেন না।
বাবাঃ কি যে বলিস মা আমি তোর প্রতি রাগ করে থাকতে পারি নাকি।
সাদিয়াঃ আচ্ছা বাবা চলুন ডিনার করে নেবেন।
মাঃ আরে বৌমা তুমি পাগল হলে নাকি।এখন থেকে তোমার কোন কাজ করতে হবেনা।
আমিঃ সব কাজ আমি করবো। তুমি শুধু রেস্ট নিবে।
সাদিয়াঃ যে নিজের হাতে ভাত খেতে সে করবে কাজ।(হেসে দিয়ে)
মাঃ ঠিক বলছিসরে মা।

আমিঃ আরে আমার বলার মানে হলো। তুমি আর আন্টি ২জনে মিলে কাজ করবে। আর আমরাতো সব সময় বাইরে থাকবো।
আন্টিঃ হুমম। এখন কথা বলা বাদ দিয়ে সকলে খেতে আসো।

তারপর সকলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি আর সাদিয়া রুমে চলে গেলাম। রুমে গিয়ে সাদিয়া বিছানা ঠিক করতে লাগলো।

আমিঃ আরে আরে এসব কি করছো।
সাদিয়াঃ দেখতে পারছোনা বিছানা ঠীক করছি।
আমিঃ এখন থেকে তোমার সব কাজ করা মানা বুঝলে।
সাদিয়াঃ তাহলে বিছানা কে ঠীক করবে।
আমিঃ কে করবে মানে দরকার হলে আমি করবো।
সাদিয়াঃ তাই বুঝি।
আমিঃ হ্যা। আর তুমি শুধু তোমার আর আমার বেবির খেয়াল রাখবে। বুঝলে বাবুর আম্মু।
সাদিয়াঃ বেবির খেয়াল কি শুধু আমি রাখবো তুমি রাখবেনা।
আমিঃ আমি তো শুধু তোমার খেয়াল রাখবো।

তারপর আরো অনেক কথা বলে আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সাদিয়া এখনও আমার বুকের উপর ঘুমিয়ে আছে। তারপর আমি ওকে বালিশে শুয়ে দিয়ে। ওর কপালে একটা কিস করে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম। আমাকে এত সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেখে মা আর আন্টি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,,,,,,

আমিঃ কি ব্যাপার তোমরা এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন।
মাঃ আচ্ছা বেয়ান সূর্য টা আজ কোন দিকে উঠেছে বলতে পারবেন।
আন্টিঃ মনে হয় পচ্চিম দিকে।
আমিঃ তোমরা ২জনে আবার কি শুরু করলে।
মাঃ তোকে আজ এত সকালে উঠতে দেখে অবাক হলাম আর কি। তোর শরীর ভালো আছেত।
আমিঃ আমার আবার কি হবে।আমিতো ঠীকই আছি।
মাঃ তা এত সকালে উঠলি যে।
আমিঃ না ভাবলাম সাদিয়ার জন্য সকালের নাস্তা নিয়ে যায় আর কি।
মাঃ এটা তুই বলছিস।
আমিঃ ধুর তোমরা ও না শুধু মজা করো।
আন্টিঃ আচ্ছা বাবা তুমি রুমে যাও। আমি নাস্তা পাঠিয়ে দিচ্ছি।
আমিঃ না আন্টি আপনি খাবার রেডি করে দিন।আমিই নিয়ে যাবো।
আন্টিঃ তাহলে একটু অপেক্ষা করো বাবা।

তারপর আমি সাদিয়ার জন্য নাস্তা নিয়ে রুমে এসে দেখি সাদিয়া এখনও ঘুমিয়ে আছে। আমি খাবারটা টেবিলে রেখে ওর কাছে গিয়ে ওর কপালে একটা কিস করতেই ওর ঘুম ভেঙে গেলো।

আমিঃ শুভ সকাল বাবুর আম্মু।
সাদিয়াঃ আরে তুমি কখন উঠলে।(ঘুম জড়ানো কন্ঠে।)
আমিঃ এই তো অনেক সময় হলো।
সাদিয়াঃ ওহ্ তুমি ফ্রেশ হয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নাও। আমি তোমার নাস্তা আনছি।
আমিঃ বলছি না তুমি আর কোন কাজ করবেনা। এই দেখো আমি তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।
সাদিয়াঃ কিহ্ তুমি আমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছো। আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।
আমিঃ বিশ্বাস না হওয়ার কি আছে। আমি কি তোমার জন্য নাস্তা আনতে পারিনা বুঝি।
সাদিয়াঃ তা ঠিক নয়।আসলে।(সম্পূর্ণ কথা বলতে না দিয়ে
আমিঃ তাহলে আর কোন কথা নয়।তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে আসো ভিশন ক্ষুদা লাগছে।

তারপর সাদিয়া ফ্রেশ হতে চলে গেলো। ও আসতে আসতে আমি খাবার গুলো সাজিয়ে রাখলাম।

সাদিয়াঃ বাহ্ আমার জুনিয়র জামাই টা দেখি ভালোই কাজ করতে যানে।
আমিঃ যার এমন একটা দুষ্টু সিনিয়র বউ আছে তাকেতো কাজ শিখতেই হবে।
সাদিয়াঃ কিহ্ আমি দুষ্টু। যাও খাবোনা।
আমিঃ আরে আরে তুমি দুষ্টু হবে কেন। আসলে আমি মিষ্টি বলতে গিয়ে ভুল করে দুষ্টু বলে ফেলছি।(মিথ্যা বললাম)
সাদিয়াঃ না তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি আমাকেই দুষ্টু বলছো।
আমিঃ এখন এমন রাগ করে না খেয়ে থাকলে একদম চলবেনা বুঝলে বাবুর আম্মু।
সাদিয়াঃ তাহলে তুমি আমাকে দুষ্টু বললে কেন।
আমিঃ ওকে বাব্বা এই যে কান ধরছি। আর বলবো না।
সাদিয়াঃ শুধু কান ধরলে হবেনা।
আমিঃ তাহলে আর কি করতে হবে শুনি।
সাদিয়াঃ আমাকে খাওয়ায় দিতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা। তাহলে এবার হ্যা করো।
সাদিয়াঃ হুমম করছি।

তারপর আমি সাদিয়া কে খাওয়াই দিলাম আর সাদিয়া ও আমাকে খাওয়াই দিলো।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি অফিসে যাওয়া জন্য তৈরি হয়ে প্রতিদিনের মত বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আজও সাদিয়ার কপালে একটা ভালোবাসার স্পর্শ একে দিলাম।

সাদিয়াঃঐ একটা কেন।
আমিঃ তাহলে।
সাদিয়াঃ আজ থেকে একটা বেশি করে দিবা।
আমিঃ কেন।
সাদিয়াঃ বারে একটা আমার আর একটা হলো আমার বেবির।
আমিঃ ও তাই তো আমার তো মনেই ছিলেনা।
সাদিয়াঃ হুমম এখন থেকে যেন আর ভুল না হয়।
আমিঃ আর ভুল হবেনা।

তারপর আমি সাদিয়ার কপালে আর একটা কিস দিয়ে অফিসে চলে গেলাম। অফিসে গিয়ে কাজ করছি। এমন সময় মোবাইল টা বেজে উঠলো। তাকিয়ে দেখি সাদিয়া কল দিছে। কি ব্যাপার ও এই সময় কল দিলো কেন। আবার কোন সমস্যা হয়নিতো আবার। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে কলটা কেটে গেলো। আবার কল আসতে রিসিভ করলাম।

আমিঃ হ্যালো।
সাদিয়াঃ কি ব্যাপার কল রিসিভ করতে এত দেরি করলে কেন।
আমিঃ আরে কাজ করছিলাম। এখন বলো তুমি এসময় কল দিলে যে।
সাদিয়াঃ কারণ বাবুর আম্মুর এখন ফুসকা খেতে মন চাচ্ছে।
আমিঃ এখন ফুসকা কোথায় পাবো।
সাদিয়াঃ তা আমি কি করে বলবো।তুমি যেখান থেকে পারো এখনই নিয়ে আসো।
আমিঃ আরে আমিতো কাজ করছি। আচ্ছা তাহলে আমি বাসায় আসার সময় নিয়ে আসবো।
সাদিয়াঃ নাহ্ আসার সময় না আমার এখনই চায়।
আমিঃ আরে একটু বুঝতে চেষ্টা করো। অফিসে অনেক কাজের চাপ।
সাদিয়াঃ আচ্ছা যাও তাহলে তোমার আসতে হবেনা।

এই কথা বলেই কলটা কেটে দিলো। যাহ্ বাবা কেটে দিলো। এখন কি করি নাহ্ এখনই ফুসকা নিয়ে বাসায় যেতে হবে তানা হলে যেই রাগি মেয়ে না জানি পরে কি করবে আল্লাই ভালো জানে। তারপর আর দেরি না করে ফুসকা নিয়ে বাসায় গেলাম। রুমে যেতেই সাদিয়া……….

চলবে……….

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *