এদিকে ঈশিকা ভাবতেছে আজ মনে হয় একটু বেশি করে ফেললাম।আবার বলে যা করছি ঠিকি করছি,এখন আর বিরক্ত করবে না এতেই শান্তি।
পরদিন ঘুম থেকে উঠে,দোকানে গেলাম, এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে বাসায় আসলাম,আমি কখনো সিগারেট খাই না,।কিন্তু ঈশিকার কথা গুলো বার বার কানে বাজছে,নিজেকে খুব অসহায় লাগছে,রুমে ঢুকে
দরজা বন্ধ করে ১ টা সিগারেট ধরাইলাম,আর ভাবতাছি এখানে আর থাকবো না।এখানে থাকলে তো ঈশিকার সাথে দেখা হবে,কিন্তু ওই তো চাইছে আমি যেনো ওর সামনে না যাই!আমার চেহারাটা দেখতে চাই না সে!
তাই মাকে বললাম মা আমি আর এই কলেজে পরবো না,ঢাকাতে পরবো ফুফুর বাসায়,আর ওইখানে গেলে পড়ার পাশাপাশি একটা কাজও করবো যেনে তুমাদের কাছ থেকে টাকা না নেয়া লাগে।
- কেন আমরা কি টাকা দিতেছি না! সত্যি করে বলতো কি হইছে?(মা)
- কিছু না,আমি যা করছি সব ভেবেই করতাছ।(আমি)
- অনেক কষ্টে মাকে রাজি করাইলাম,তারপর কলেজ থেকে টিসি নিয়ে সেদিন রাতেই চলে আসলাম ঢাকাতে,আমার ফুফাতো ভাইয়ের নিজস্ব একটা হোটেল আছে।
আমাকে ম্যানেজার হিসেবে কাজ দিয়ে দিলো,,,
আর আমাকে একটা কলেজে ভর্তি করিয়ে দিলো,আমার ফুফাতো ভাইয়ের নাম মামুন।
৩ বছর হলো বিয়ে করছে,একটা বাচ্চা আছে,ভাবির ব্যাবহার ও অনেক ভালো। আমাকে নিজের ভাইয়ের মতো আদর করে,সারাদিন কাজের চাপে তাও ঈশিকাকে কমই মনে পরে, কিন্তু রাত হলেই নিজেকে সামলাতে পারি না।
এভাবেই যাচ্ছে দিনগুলো……
এদিকে ঈশিকা কলেজে যাইতাছে,দেখে আজকে আর স্বপন দাড়িয়ে নেই, ঈশিকা মনে মনে বলে হইতো রেগে আছে তাই,এভাবে ২ দিন চলে গেলো কিন্তু কোন খুজ নাই,ঈশিকা বেশি একটা গুরুত্ব দিলো না।
- কিরে ঈশিকা স্বপন কই রে ২ দিন থেকে আমাদের বাসায় আসে না,যে ছেলে দিনে ৪/৫ বার আসে,সে ২ দিন থেকে নাই!(ঈশিকার মা ঈশিকাকে বললো)
- কি জানি আমি জানি! তুমি খুজ নিয়ে দেখো,,,(ঈশিকা)
-তুই কিছু বলস নি তো আবার? (ঈশিকার মা)
- আমি আবার কি বলবো।(ঈশিকা)
পরদিন ঈশিকা কলেজে যাইতাছে দেখে আজকেও নেই,তাই ঈশিকা স্বপন দের বাসায় গেলো।
- খালা স্বপন কই?(ঈশিকা)
-কেনো স্বপন তো ঢাকাতে চলে গেছে,
তদের বলে যাই নাই(স্বপনের মা) - নাতো আমাদের তো কিছু বলে যাই নাই!(ঈশিকা)
- কিন্তু স্বপন তো বললো সবাইকে বলছে,তোদের মাঝে কিছু হই নি তো?
-না আমাদের মাঝে কি হইবে,আচ্ছা খালা এখন আসি
কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে।(ঈশিকা)
এটা বলে ঈশিকা চলে আসলো, হাটতাছে আর ভাবতেছে সত্যিই বেশি অপমান করছি।যে আমার থেকে একেবারে সত্যি সত্যি দুরে চলে গেলো।
এসব ভাবতে কলেজে চলে আসলো,তারপর সাগরের সাথে আড্ডা দিয়ে মনটা ভালো হলো।
এখন সবারই অজানা স্বপন কিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে চলে গেলো,ঈশিকা ছাড়া কেউ জানে না।
ঈশিকা আর সাগরের প্রেম ভালোই চলতাছে আড্ডা ঘুরাঘুরি,,সব মিলেই ভালোই চলতাছে।কিছুদিন পর থেকে সাগর যেনো পাল্টে গেছে,আজে বাজে কথা বলা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় টাচ করতে চাওয়া!
এসব ঈশিকার মোটেও ভালো লাগে না,তবুও কিছু বলে না,,হটাৎ একদিন ২ জন মিলে আড্ডা দিতাছে সাগরের ফোনে কল আসলো,
সাগরের মোবাইল টা বেঞ্চের উপরে রাখা,দেখে জানু নামে সেভ করা নাম্বারটা,যেটা থেকে কল আসছে।
-ঈশিকা ফোনটা হাতে নিলো,এই তুমি আমার ফোন দাও বলছি,, (সাগর)
- চুপ একটা কথা বলবি না,(ঈশিকা)
ফোনটা ঈশিকা রিসিভ করলো,ওপাস থেকে বাবু
তুমি কোথায়? - কে বাবু আর কিসের বাবু কে আপনি?(ঈশিকা,,)
- আমি সাথি,সাগরের গার্লফ্রেন্ড, আপনি কে?ওপাস থেকে।
তখন ঈশিকা ফোনটা কেটে দিলো, আর সাগরকে ২ টা ঠাস ঠাস করে চড় দিয়ে চলে আসলো।
বাসায় আসার পর কিছু ভালো লাগছে না ঈশিকার,,,,
তাই ভাবলো স্বপনের নাম্বারে একটা কল দেই।
যার জন্য অপমান করলাম।অন্তত সরি টা বলি।
স্বপনের নাম্বারে কল দিয়ে দেখে,নাম্বারটা বন্ধ।
এবার আরো বেশি খারাপ লাগলো ঈশিকার,স্বপনের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লো।কেয়ক দিন কলেজে গেলো না।কিছুদিন পর থেকে আবার এখন নিয়মিত কলেজ যাওয়া শুরু করলো।
ঈশিকা এখন কেনে জানি স্বপন কে মিস করে।
আট এদিকে আমি এখন মোটামুটি ভালোই চলতেছি।
বাড়িতে যখন ফোন করি ঈশিকা আমার সাথে নাকি কথা বলতে চাই, মা প্রায়ই বলে, কিন্তুআমি কাজের বাহনা দেখিয়ে ফোন কেটে দেই তখন।
এ ভাবে কেটে গেলো ৩ বছর,এখন আমি ভালো একটা কোম্পানিতে জব করি,,বেতন আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো।বাড়িতেয় আসার জন্য অনেক অনুরোধ করে কিন্তু আমি আসি না।
বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে দেই,এখন মোটামুটি আমারাদের আগের থেকে আর্থিক অবস্থা উন্নতি হইছে।
আর ঈশিকা নাকি এখনো বিয়ে করেনি শুনলাম,কেনো করেনি সেটা বুজতে পারলাম না!
কয়েক দিন পর বাসা থেকে ফোন আসলো বাবা নাকি অসুস্থ অনেক,তাই এবার বাড়িতে যাইতে হবে।
সেদিনই রাতের ট্রেনে বাড়িতে আসলাম,সকাল ১০ টার দিকে এসে পৌছালাম।
আসার পর একি আমাদের বাড়িতে বিয়ের গেইট কিছুই বুঝলাম না কার বিয়ে!
বাড়িতে ঢুকার পর,দেখি বাবা তো সুস্থ আছে, সবাই একসাথে গল্প করতাছে,মা আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো,কোনমতো মাকে বুঝালাম এখন তো আসছি,আর কান্না করো না,মা আর একটু চুপ হলো।
তাহলে কি আমাকে মিথ্যা বলে বাড়িতে আনলো,,এসব নানান কথা ভাবতাছি,মাথায় কিছুই ঢুকছে না আমার।
- যা ফ্রেস হয়ে নি,,, (বাবা)
- আমি আর কিছু না বলে ফ্রেস হয়ে এসে নাস্তা করে ঘুমিয়ে পড়লাম।কারন অনেক ক্লান্ত লাগছিলো জার্নি করে।
চলবে,,,,,,,,,,,