আমি ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে দেখি, ঈশিকা আয়নার সামনে বসে সাজতেছে,দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে ইচ্ছে করতাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরি,কিন্তু আমি নিজেকে শক্ত করলাম, এত সহজে হার মানলে চলবে না,আমাকে প্রতিশোধ নিতে হবে।
- আমি সকালের নাস্তা না করেই বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম,
সারাদিন বাসায় ফিরি নাই,সন্ধ্যায় সময় দেখি আমার ফোনটা বাজতাছে।
ফোনটা পকেট থেকে বের করে দেখি বাবা ফোন করেছে। - হুম বাবা বলো।
- তুই কই,এখনই বাসায় আই,ঈশিকাদের বাসা থেকে লোক আসছে,তর কি কোনো দায়িত্ব নেই,যে তকে যাইতে হবে ওদের বাসায়।(বাবা)
- আসতাছি,কলটা কেটে, বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
বাসায় আসার পর খাওয়া দাওয়া করে,ঈশিকাদের বাসায় রওনা হলাম,কাছেই, তাই বেশি সময় লাগলো না,তখন রাত প্রাই ১০ টা বাজে।খালার সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে,রুমে গেলাম ঘুমাইতে। - একটু পর ঈশিকা আসলো, রুমের দরজা বন্ধ করে,আমার পাশে এসে বসলো।আর বলতে লাগলো,
- দেখ কাল আমার জীবনের সব থেকে মুল্যবান একটা রাত ছিলো,যা প্রতিটা নারীর ক্ষেত্রেই মুল্যবান।
কালকে যা করছস তবুও আমি, কষ্ট পাইনি,এখন অন্তত ক্ষমা করে দে।(ঈশিকা)
-কেনো ক্ষমা করতে পারবো না তকে কোনোদিন কি করবি তুই?(আমি) - কি করবো মানে, আজকে আমার অধিকার আমাকে দিতে হবে। (ঈশিকা)
- না দিলে কি করবি?(আমি)
- জোর করে আদায় করে নিবো!(ঈশিকা)
এটা বলেই আমার কাছে চলে আসলো, যেই মাত্র আমার ঠোঁটে কিছ করবে, তখন ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম। - বেশি বারাবারি করবেন না বলে দিলাম,আমি তকে স্ত্রী হিসেবে মানি না, মানবো না ওকে।
বলেই খাটের একপাশে শুয়ে পরলাম,সোফায় ঘুম হইনা ভালো খাটেই শুয়ে পরলাম, আর কোলবালিশ টা মাঝখানে দিয়ে বললাম, এইটা যেনো না সরে।(আমি) - ঈশিকার মনটা খারাপ হয়ে গেলো,তাই বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো।
- আমি মনে মনে বলি দেখ কষ্ট কাকে বলে, মাত্র তো শুরু করলাম, এসব ভাবতে ভাবতে কখন জানি ঘুমিয়ে পরছি।
সকালে ঈশিকার ডাকে ঘুম ভাঙলো, উঠে ফ্রেস হয়ে নিলাম একটু পর ঈশিতা নাস্তা করার জন্য ডেকে গেলো,খাবার টেবিলে আমি খালাকে বললাম আমার ঢাকা যাইতে হবে ছুটি তো ৫ দিনের ছুটি ছিলো। - তাহলে আজি চলে যাবি?(খালা)
- হুম,,,,,
আচ্ছা তাহলে তর মাকে বলি,সবার সাথে কথা বল। - কিছুক্ষণ পর মা আসলো আর বললো যাবি ভালো কথা ঈশিকাকে সাথে নিয়ে যা।(মা)
- না ওই তুমাদের সাথেই থাক,তুমাদের সেবা যত্ন করুক।(আমি)
- আমাদের নিয়ে তকে ভাবতে হবে না, যেটা বলছি সেটাই করবি।(মা)
- তুমরা যা ভালো মনে করো। (আমি)
-তাহলে ঈশিকা তর কাপড় গুছিয়ে নে।(,মা) বিকালে রওনা হলাম,স্টেশনে এসে ২ টা টিকেট নিলাম,যথাসময়ে ট্রেন আসলো,ঈশিকা জানালার পাশে বসে আছে,ওর খুলা চুল গুলা বাতাশে আমার মুখের উপর এসে পরতাছে,কি রুমান্টিক দৃশ্য, আমার ভালোই লাগছে,ট্রেন তার আপন গতিতে ছুটে চলছে,,,
এর মাঝে ঈশিকা কখন জানি আমার কাধে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পরছে।ঘুমন্ত অবস্থায় আরো সুন্দর লাগছে।
৪ ঘন্টা পর, ঢাকা এসে পৌছালাম,,তারপর ঈশিকাকে ধাক্কা দেয়ার সাথে ঘুম থেকে উঠলো।
-এবার নামতে হবে, এসে পরছি(আমি)
বাসায় এসে ঈশিকাকে রেখে বাহিরে গেলাম খাবার আনতে,২ প্যাকেট বিরিয়ানী নিয়ে এলাম এসে দেখি রুমটা গুছিয়ে ফেলছে ৩০ মিনিটের মাঝেই।
খাওয়াদাওয়া করে, শুয়ে পরলাম, ঈশিকার সাথে কোন কথা বললাম না।আমি ফ্লোরে বিছানা করে শুইলাম আর ঈশিকাকে খাটে ঘুমাতে বললাম।
- কেন আমরা তো স্বামী -স্ত্রী এক খাটে ঘুমালে কি হবে?(ঈশিকা)
- আমি বলছি না এই বিয়ে মানি না,
- সকালে এই স্বপন উঠো,অফিস এ জাবা না,,,,,,,,,(ঈশিকা)
-হুম,,,,,, (আমি) - তাহলে উঠো,এই চাঁ টা খেয়ে নাও,(ঈশিকা)
- আমি চাঁ টা হাতে নিয়ে চাঁয়ে চুমুক দিলাম।বাহ্ অসাধারণ তো,,ভালই বানাতে পারে,কিন্তু আমি ওকে অপমান করার জন্য,বললাম ছি এটা চাঁ নাকি অন্যকিছু,মনে হয় লবন দিয়ে চাঁ বানাইছে। বলেই চাঁ টা রেখে,ফ্রেস হতে গেলাম।মনে মনে হাসতেছি ওরে কষ্ট দিতে পেরে আর আমাকে তুই থেকে তুমি বলা শুরু করছে ভালোবাসা উতলিয়ে পরতেছে দেখি।
- ঈশিকা ভাবতাছে সত্যি কি চাঁ টা ভালো হয় নি, ঈশিকা চাঁয়ে চুমুক দিয়ে দেখে, চাঁ তো ঠিকিআছে,
তার মানে অপমান করার জন্য এসব বললো।
- আমি ফ্রেস হয়ে এসে দেখি খাবার রেডি করে বসে আছে,তাই আমি খেয়ে নিলাম, ঈশিকার দিক তাকিয়ে দেখি আমার মুখের দিক চেয়ে আছে,হয়তো ভাবছে আমি ওকে খেতে বলমু,কিন্তু আমি তো সেটা বলবো না,,দুপুরের খাবারটা ঈশিকা আমার হাতে দিলো।আমি অফিসে চলে এলাম।
এদিক ঈশিকা না খেয়ে,থাকলো,আর ভাবতাছে একটা ভুলের জন্য আর কত অপমান করবে।
- দুপুরে দেখি আমার ফোনটা বাজতাছে,হাতে নিয়ে দেখি নাম্বারটা চিনি না,তাই রিসিভ করলাম না,পরের বার আবার রিং হচ্ছে তখন রিসিভ করলাম,আমি প্রথমে সালাম দিলাম।
- ওপাস থেকে সালামের জবাব এলো,কন্ঠটা শুনে বুঝলাম ঈশিকা।
- তাও বললাম কে বলছেন? (আমি)
- আমি ঈশিকা,
- ওহ্ হুম বলেন?(আমি)
- দুপরের খাবারটা খেয়ে নিও।(ঈশিকা)
- আপনাকে বলতে হবে না।(আমি)
বলেই কলটা কেটে দিলাম,আজকে অফিসের অনেক কাজ তাই অনেক রাতে বাসায় ফিরলাম।
কলিং বেল চাপ দেয়ার সাথে সাথে দরজা খুলে গেলো,রুমে ঢুকে দেখিটেবিলে খাবার রেডি করা,,
হাত মুখ ধুয়ে এসে খেতে বসলাম।তখন - আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না।(ঈশিকা)
- কিসের ক্ষমা চাস আমি ক্ষমা করার কে?
- আমাকে স্ত্রীর অধিকার দিতে হবে (ঈশিকা)
- আমি তকে মানি না, আর কোনদিন মানবো না ওকে।বলেই খাওয়া বাদ দিয়ে ওঠে আসলাম।
-বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট ধরালাম,সিগারেট টানতাছি আর ভাবতাছি ওকে কি মেনে নিবো নাকি আরো কষ্ট দিবো,হঠাৎ পেছন থেকে আমার কাঁধে হাত দিলো,আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি ঈচিকা দাড়িয়ে আছে। - কিছু বলবেন?(আমি)
- নিজেকে কেনো কস্ট দিতাছো,এসব খেয়ে কি লাভ?(ঈশিকা)
- লাভ লোকসান সেটা আমি বুঝি, তকে এসব কথা বলতে কে বলছে আর কখনো আমার বিষয়ে নাক গলাবি না।আর এটা আমার ঔষধ কোন ক্ষতির জিনিস না,সবাই আমাকে অপমান করলেও এটা করবে না,,বলেই রুমে আসলাম।
এভাবেই যাচ্ছে দিনগুলো,একদিন অফিস বন্ধ তাই বারান্দায় বসে একটার পর একটা সিগারেট খেয়েই যাচ্ছি,হঠাৎ ঈশিকা এসে আমার মুখ থেকে সিগারেট টা কেড়ে নিয়ে,পায়ের নিচে পিশিয়ে দিলো!
- এটা কি করলি,কোন অধিকার করলি লিমিট ক্রস করিস না বলে দিলাম। (আমি)
-যা করছি ঠিক করছি,আর আমি তর স্ত্রী সেই অধিকারে করছি।(ঈশিকা) - আমার রাগ উঠে গেলো,এক কথা কতবার বলবো আমি এই বিয়ে মানি না,আর আজকেই আমি উকিলের কাছে যাচ্ছি তর ডিভোর্সের ব্যবস্থা করাতাছি বলেই,,ঠাস ঠাস করে চড় দিলাম।
চড় টা একটু জোরেই দিছি,ঈশিকা নিজেকে কন্ট্রল করতে না পেরে পড়ে গেলো মনে হয় খাটের সাথে বাড়ি খেলো।
আমি সে দিক খেয়াল না করে বাসা থেকে বাহিরে চলে আসলাম……………
চলবে……….