জমিদার বাড়ির মেয়ে যখন বউ পর্ব_০২

  • ঘোড়ার পাছাই ফট করে একটা বারি
    দিলে যেমন উঁড়াধুঁড়া ছুঁটতে থাকে।
    আমি যেই বাসটাই বসে আছি, এইটা ও
    ঠিক ঘোড়ার মতোই উঁড়াধুঁড়া ছুঁটতেছে
    সিলেটের দিকে।
    আর……আমার পাশের সিটে
    চশমা পড়া মেয়েটা
    চুপচাপ বসে আছে।

    আর… অন্য দিকে আমি, আমার সিটে
    বসে, উস খুস করতেছি।
    কারণ…. পাশেই একটা মেয়ে
    বসে আছে…তাও কোন দুষ্টুমি
    করতে পারতেছি না তাই।

    আর দুষ্টুমিটা শুরু করমুই বা কী দিয়ে,
    কোন আগা মাথাই তো পাইতেছি না।

    রাত্রে যখন রুমে শুয়ে থাকি
    শয়তান হারামজাদা রাত দুইটার সময় পাছাই কামড় মেরে বলে…
    যা অমুকের বাড়ির সামনে গিয়ে
    চিল্লানি দে ,
    ওর বাসার টিনে ঢিল মার।
    রফিক্কার জানালাই গিয়ে ঠক ঠক
    করে দৌড় মার।

    আর এখন পাশেই একটা মেয়ে বসে
    আছে, তবু কোন ফাজলামো বুদ্ধি মাথাই
    আসতেছে না।

    ওরে ভাই মাথা,একটা ফাজলামো
    বুদ্ধি বের কর ভাই,,মেয়েটারে একটু জ্বালাই।
    তা না হলে আমি তো উস খুস করতে
    করতে মরে যামু।

হঠাৎ…..

  • এই যে শুনছেন।
  • হুমমম… বলেন।
  • আচ্ছা এই চশমা টা কী আপনি
    মায়ের পেঁট থেকে আসার সময়
    নিয়েই আসছিলেন।
  • কেনো।
  • না মানো….চশমাটা কেমন জানি
    আপনার সাথে একদম খাপে খাপ।
    আপনার চোখ দুইটা হইতেছে
    বোতলের মুখ, আর চশমাটা হইতেছে
    বোতলে খাপ…. হি হি হি।

    হায় হায় কিছুই তো কইলো না।
  • এই যে চশমা।
  • হুমমমমম।
  • আপনার কাছে পানি আছে।
    (বলার সাথে সাথে বোতল
    বের করে দিলো)
  • ও চশমা।
  • হুমমমমমমমম।
  • আপনার বোতল।
  • থ্যাংকস্……।

    কী মেয়েরে ভাই…. কোন রাগ তো নাই
    সাথে কোন বিরক্ত ও নাই।
    আমারি তো রাগ লাগতেছে।

    নাহ্… এবার অন্য কিছুু ট্রাই করতে হবে
    রাগানোর জন্য।

মেয়েটার দিকে তাঁকিয়ে দেখি চোখ বন্ধ করে,
সিটে হেলান দিয়ে আছে।

  • হু হা হা হা হা হা হা।
    কেমন নরম দৃষ্টিতে আস্তে করে
    আমার দিকে তাঁকালো।
    দেখে তো মনে হয় না বকা টকা দিবে।
  • হাই।
  • কিছু কী বলবেন।
  • না মানে…. আপনার কাছে কী?
    খাবার মতো কোন কিছু আছে।
    আসলে অনেক খিদে লাগছে তো তাই।
  • আমার কাছে তো খাবার মতো
    তেমন কিছু নেই,
    তবে শুধু একটা কেক আছে… এই যে।
    এটা চলবে।
  • শুধু চলা…..এটা দিয়েই পেঁট
    ভরে যাবে।
  • ঠিকআছে।
  • পানিইইই…. ঐ চশমা,
    পানি দেন না…গলাই আটকে গেছে তো।
  • এই যে, এই যে পানি।
  • ঐ… কী কেক দিছেন হুমমমমম…
    আর একটু হলেই তো গলাই কেক
    আটকে মরতাম।
  • সরি।
  • কীসের সরি…. এবার থেকে আরো
    নরম দেখে কেক কিনবেন।
  • আচ্ছা।
  • কী আচ্ছা….কেমনে কেক কিনবেন
    সেটা বলেন।
  • জানি না তো…।
  • তা জানবেন কেনো…. এবার থেকে
    কেক কেনার আগে… ভালো করে টিপে টিপে
    কিনবেন।
  • হুুমমমমমমম।
  • মনে থাকে যেন।
  • আচ্ছা।

    আবার চুপচাপ।

    ওহহহহহহহহহ….. এমনে চলতে থাকলে
    তো আমি নিজেই পাগল হয়ে যামু।
  • ঐ চশমা।
  • হুমমমমমমমম।
  • আহারে…. আবার হুমমমমম….
    আচ্ছা আপনি কী হ্যা,
    আমি যে আপনারে এত্ত বিরক্ত করতেছি
    কই একটুু রাগবেন… আমারে একটু
    বকা দিবেন, তা না..
    এমনে কেমনে আছেন।
    অন্য কেউ হলে তো এতক্ষণে দুই
    চারটা চর থাপ্পড় লাগাই দিতো।
    আর আপনি কেমনে চুপচাপ এই সব
    সহ্য করতেছেন।
  • আমি তো এমনি….।
  • এমনি মানে…আপনার কী রাগ হচ্ছে না
    আমার উপর।
  • রাগ কী?
  • হে খোদা….তুমি আমারে এ কার
    পাল্লাই ফেলাইলা।
    এ নাকি জানেই না রাগ কী?
    আর আমি ও কেমন ছগলের মতো এরেই
    রাগানোর চেষ্টা করতেছি।
    বাহ্ বাহ্….

(তারপর)

  • এই যে চশমা।
  • হুমমমম।
  • কীসের এতো হুমমমম শুনি,
    আর হ্যা আমি এতো তোমারে আপনি করে
    বলতে পারমু না…. তুমি করে
    বলতেছি… খারাপ লাগলে ও
    কিচ্ছু করার নাই….. ও হ্যা তোমার তো
    আবার রাগ ও নাই…..খারাপ লাগবো কেমনে। ।
    আর হ্যা… আমি যেহেতু তোমারে
    তুমি করে বলমু… সেহেতু তুমি ও আমারে তুমি
    করেই বলবা কেমন।
  • কেনো।
  • কেনো মানে… তোমার রাগ নাই তো
    কী হইছে…. আমার তো রাগ আছে নাকি।
    কেউ আমারে আপনি বললে আমার
    তারে থাপড়াইতে ইচ্ছে করে… বুঝলা।
    একবার আপনি বলবা তো একটা
    করে থাপড়ানি খাবা।
    এবার বলো আপনি বলবা নাকি তুুমি।
  • ঠিকআছে… তুমিই বলবো।
  • এই তো গুড বয়….. না মানে গুড গার্ল।
  • ঐ একটু পর পর এমন চুপ হয়ে যাও ক্যান।
    রাগ নাই বলে কী কথা ও বলতে পারো না
    হুমমমম।
  • আসলে.. আমি ছোট থেকেই এমন চুুুুপচাপ।
  • ওহহহহহহ….আচ্ছা..তোমাদের পুরা ফ্যামিলির
    সবাই কী এমন তোমার মতো।
  • আরে না…. আমি শুধুু এমন,
    তা ছাঁড়া… বাবা, মা, দাদু, নানু সবাই অনেক
    রাগি।
  • আচ্ছা তুুমি চশমার ইংলিশ জানো।
  • কেনো।
  • না মানে…সব সময় তোমারে এমন
    চশমা চশমা বলে ডাকতে
    নিজেরেই কেমন খ্যাত খ্যাত মনে হইতেছে।
    তাই যদি একটু চশমার ইংলিশটা বলে দিতা,
    সেইটা বলে ডাকতাম,তাহলে নিজেরে ও
    একটু স্টাইলিশ মনে হইতো এই আর কী?
  • চশমার ইংলিশ তো চশমাই।
  • কীইইইই ।
  • হুমমমমমমমমমম।
  • হালার পুতেরা সব কিছুর ইংলিশ
    রাখতে পাড়ছে আর এই সামান্য
    চশমার ইংরেজি রাখতে পারে নাই.. মূ*র্খের দল
    সব।
  • আচ্ছা.. ইংলিশ যখন রাখেই নাই
    তাহলে আর কী করার…. চশমাই বলি
    কেমন।
  • ওকে।
  • তো চশমা…তোমার নাম কী? শুনি।
  • নীলা।
  • বাহ্…. তোমার থেকে তোমার নামটাই
    বেশি সুইট… হি হি।
    ঐ আমার নাম শুনবা না।
  • হুমমমমম বলো।
  • কী বলমু।
  • তোমার নাম।
  • মনডাই চাইতেছে নিজের গালে
    নিজেই থাপড়ানি দিই।
  • কেনো।
  • কেনো আবার তোমারে যে থাপড়ানি দিতে
    পারমু না তাই।
    এমনে কী কেউ কারো নাম জিজ্ঞেস করে হুমমম।
  • আরে এর আগে তো আমি কারোর
    নামই জিজ্ঞেস করি নাই… তাহলে
    কেমনে জানবো।
  • ওহহহহহহ….. তুমি না একটা.. থাক
    বলমু না…।
  • আচ্ছা তোমার নাম কী?
  • আরমান…..নামটা জোস না।
  • হুুমমমম।
  • আর আমি ও….. হি হি।
  • ঐ শোনো আমি তোমার সাথে
    এত্ত কথা বলতেছি বলে,
    তুুমি আবার ভাইবো না যে আমি
    তোমারে পটানোর চেষ্টা করতেছি।
    কারণ আমি কোন মেয়ে টেয়ের চক্করে নাই।
    এমনি বাড়িতে আব্বার সাথে একটা
    কেলেংকারি করে আসছি।
  • আচ্ছা সাহরিয়া পটানো কী…
    আর বাড়িতে আব্বার সাথে কেলেংকারি করে আসছো মানো।
  • ঐ তুমি পটানো বুঝো না।
  • না তো।

    এবার আমি সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যামু।
  • ঐ বলো পটানো মানে কী?
  • ভালোবাসা বুঝো।
  • হুমমমমম।
  • পটানো হইলো ভালোবাসার ছোট
    ভাই…..।
  • ওহহহহহহ…. তো তাতে কী হইছে।
    আর বাড়িতে কেলেংকারি করে আসছো
    মানে।
  • এই সব ও শুনবা।
  • হুমমমম….. বলো।
  • প্রথমের ঘটনা সব খুলে বললাম।
  • হা হা হা হা হা হা হা হা…..তুমি
    তো অনেক দুষ্টু।
  • আর দুষ্টু….. বাড়িতে গেলে
    আমার উপর দিয়ে যে কী যাবে আল্লাহ্ জানে।
  • হা হা হা।

    হঠাৎ…….ভটাস করে জোরে একটা
    শব্দ হয়ে বাসটা থেমে গেলো।

    নিচে গিয়ে দেখি বাসের চাক্কা ফেঁটে
    গেছে।
  • ওরে খোদা…… এবার আমি এই
    রাইত্রে কেমনে সিলেট যামু।
  • আরে টেনশন নিও না, আমি
    দাদুর কাছে ফোন করছি গাড়ি
    চলে আসতেছে।
  • দাদু কে।
  • আরে আমার দাদু।
    এখান থেকে একটু দূরেই আমার দাদু বাড়ি।
  • ওহহহহহহহহ….তোমার দাদু খুব বড়লোক
    বুঝি।
  • হুমমমমম……একটু।
  • ও হু হু….. কী ঠান্ডা বাতাস,
    তোমার চাদরটা একটু দিবা।
  • ওকে ধরো।
  • আচ্ছা নীলা,এখান থেকে সিলেট
    কতদূর বলতে পারবা।
  • বেশি দূরে না…. দশ কি.মি.।
  • হালার পুত বাসটা পুরো রাস্তা
    আসতে পারলো আর ঐ টুকু গেলে
    কী হইতো।
    এখানেই চাকা ফাঁটতে হবে।
  • আমি বাবার কাছে শুনছি এই রাস্তাই
    নাকি একটু প্রবলেম আছে।
  • কী প্রবলেম।
  • আমি ও তো জানি না…. শুধু
    শুনছি প্রবলেম আছে।
  • আচ্ছা…. আমি একটু তোমার
    কাছে কাছে থাকি।
  • ঠিকআছে।

    একটু পড়েই গাড়ি আসলো।
  • ম্যাডাম গাড়িতে উঠেন।
  • বাবা, দাদু কেউ আসলো না কেনো।
  • আসলে ম্যাডাম…শুধু আমাকেই
    আসতে বলতো।
  • ঠিকআছে।
  • আরমান..তুমি ও আমার সাথে চলো, এতো রাত্রে এখানে থাকার মতো কিছুই পাবে না।
    যাও তোমার ব্যাগ নিয়ে আসো।
  • ঠিকআছে……।

    ব্যাগ নিয়ে আসার সময় দেখি,
    নীলাকে যেই লোকটা ম্যাডাম বলছিলো
    সে আমাকে একটু সাইটে ডাকলো।
  • ভাই এই মেয়ে কে চেনেন।
  • মাত্র তো আজকেই পরিচয় হইলো
    কেমনে চিনমু…. শুধু নামটা জানি।
  • আরে ভাই…. এই মেয়ে এই খানের
    জমিদারের নাতনি।
  • তো আমি কী করমু।
  • আরে ভাই আপনি জানেন না,
    এই মেয়ের বাবা আর দাদা কী জিনিস।
  • ওরে ভাই…. আমি কী মেয়েটারে বিয়া
    করমু নাকি…. তাই তাদের সব
    কিছুু জানা লাগবে।
    নেহাত বাসের চাকাটা ফাঁটছে তাই।
    তা না হলে আমি এতক্ষণে সিলেট
    চলে যাইতাম।
  • এইটা মনে হয় ম্যাডামের চাদর।
  • হুমমমমম।
  • ভাই আপনার কপাল ভালো ওনার
    বাবা বা দাদু কেউ আসে নাই।
  • কেনো…. ওনারা আসলে কী হইতো।
  • সেটা আসলেই দেখতে পাইতেই।
  • ওরে ভাই রাতটা পার হলেই আমি
    সোঁজা সিলেট….. এবার চলেন।
  • আপনার কপালে যে কী আছেরে ভাই,
    সেটা একমাত্র আল্লাহ্ জানে।
  • হয়… এইবার চলেন…কপালে
    আমার অনেক কিছুই আছে সেটা আমি ও জানি।

    ড্রাইভার আর ঐ লোকটা সামনে।
    আমি আর নীলা পিছনের সীটে।
  • নীলা… তোমার চাদর।
  • হুমমমমম।
  • আচ্ছা বাড়িতে যখন নিয়েই যাচ্ছো
    একটু খাইতে ও দিও কেমন…. হি হি।
  • হা হা… ঠিকআছে।

    গাড়ি থেকে নামতেই দেখি…..
    ও মা গো এটা তো সত্যি সত্যি একটা
    জমিদার বাড়ি।
  • ঐ নীলা তোমার দাদু যে জমিদার
    আগে বলো নাই ক্যান।
  • আগে যদি বলতাম আমার সাথে তো
    ওমন দুষ্টুমি করতা না, আর আমার
    সাথে আসতা ও না।
  • আরে দূর…. আগে যদি বলতা যে
    তোমার দাদু জমিদার…আরো বেশি
    জ্বালাইতাম হি হি হি।
  • তাই বুঝি।
  • হুমমমমম।
  • ঠিকআছে…. ভিতরে আসো।
  • ওক্কে….. এই প্রথম কোন জমিদার
    বাড়িতে যাইতেছি বুঝলা।
    মনে হইছেতে রাজাদের আমলে আছি।
    এই সময়ে ও যে জমিদার আছে জানতামই না।
  • এখন তো জানলা… এবার ভিতরে চলো।
    .
    .
    চলবে…

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *