- আরমান… ঐ আরমান.. ওঠো।
- উমমমমম….কে।
- আমি… নীলা।
- ওহহহহ…. আমার এখনো বিয়ের বয়স হয় নাই, আপনি যান।
- মানে…..।
-…………. । - ঐ, ওঠো….. আরমান।
। - ভাই শয়তান তোর দুইডা পায়ে ধরি
আমারে একটু ঘুমাইতে দে… । - কী বলতেছো এই সব আবল তাবল।
- ওরে ভাই… তুই ভাবছিস
মেয়েদের কন্ঠে কথা বললেই আমি
উঠে পড়মু ।
কিন্তু আমি উঠমু না।
কারণ… এখনো যে আমি বিয়ে করি নাই
সেই হুস আমার আছে।
এবার ভাই তুই এখান থেকে যা, আর আমারে
ঘুমাইতে দে…তা না হলে খুব খারাপ
কিছু হয়ে যাবে হুমমমম। - ঠিকআছে…. ঘুমাও।
একটু পড়ে মজা দেখাইতেছি। - ঠিক আছে দেখা মজা,,
সিলেট গিয়ে মজা নিতে চাইছিলাম
সেইটা তো আর আমার খাঁটাস
বাপের জন্য হইলো না..।
এবার তুই দেখা মজা, বাট ভাই
সপ্নের মধ্যে একটু সিলেট টারে
আইনা দিস পিলিজ।
।
এমন সময় মনে হলো চোখে মুখে
ঠান্ডা জাতীয় কী জানি পড়লো।
লাফ দিয়ে উঠে চোখ বন্ধ করেই
চিল্লাইতেছি।
। - ওরে মা গো, মরে গেলাম গো,
এসিড মারছে আমার মুখে।
এবার আমার কী হইবো, আমার
তো আর বিয়ে হইবো না।
আমি কার কী ক্ষতি করছি, তাই আমার
সাথে এমন করলো।
আআআআআ…. কী ঠান্ডা লাগতেছে,
মনে হয় পুরে যাইতেছে। - ঐ…… চুপপপপ করো।
- তুমি তো চুুপ করতেই বলবা…. পুরে তো
আর তোমার যাচ্ছে না পুরে যাচ্ছে আমার।
ও মা গো… ঠান্ডাই ঠান্ডাই পুরে যাচ্ছে।
কে করলো এই আকাম। - আরমান….একটা থাপড়ানি
দিমু তোমারে।
এত্ত ড্রামাবাজ ক্যান তুমি।
আমি তোমার মুখে ঠান্ডা পানি দিছি বুঝলা।
একটু পানির জন্য বাড়ি একদম মাথাই তুলছে। - ঐ তোমার না রাগ নাই…. তুমি এমন
রাগতেছো ক্যান। - তোমার সাথে থাকলে, রাগ না থাকলে ও
চলে আসবে… বুঝলা…এবার ওঠো। - হুমমমমমমম।
। - আরো শুনো।
- কী?
- একটু আগে আমারে কী কী বলছিলা
বলতো। - আরে একটু আগে তো ঘুমাই ছিলাম
কেমনে বলমু। - তার মানে তুমি যা যা বলছো সব
ঘুমের মধ্যে। - হুমমমমম… হবে হয় তো।
- ঠিকআছে… এবার যাও, তোমার
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে খাবার
টেবিলে আসো। - ওকে।
।
রুমে গেলাম ফ্রেশ হলাম…।
নিচে খারার টেবিলে বসে আছি।
টেবিল ভর্তি খাবার কিন্তু আমি ছাড়া
আর কোন প্রাণী আসেপাশে নাই।
।
এক মনে বলতেছে খাবার সামনে
রেখে বসে থাকতে নেই…পাপ হয়,
ফটাফট খেয়ে না।
অন্য দিকে আর এক মনে বলতেছে একা একা
খাওয়াটা ঠিক হবে না, নীলা বা দরবেশ দাদু
কেউ একজন আসলেই খাওয়া শুরু করিস
কার কথা শুনমু আর না শুনমুু।
দূর ভাল্লাগেনা।
।
এই দিক ওই দিক ভাবতে ভাবতে
কখন যে একটা আপেল হাতে নিয়ে
খেতে শুরু করছি নিজে ও বুঝি না।
।
এমন সময় হঠাৎ কই থেকে একটা
লোক আসলো।
দেখতে মাসাআল্লাহ্ ভালোই,
আমার বাপের বয়সী হবে।
।
আস্তে আস্তে আমার কাছে আসলো।
। - এই ছেলে, কে তুমি, খাবার টেবিলে
বসে আছ কেনো। - এই যে কাকা হ্যালো,…
চক্ষু দুইটা কী আসমানে রেখেই
জমিনে নামছেন…আর আমারে দেখে
কী আপনার পাগল মনে হয় হ্যা। - এই ছেলে কী বলো এই সব।
- আমি আবার কী কইছি, দেখতেই তো
পাইতেছে চেয়ারে বসে আছি,
হুদাই ক্যান বলতেছেন খাবার টেবিলে বসে
আছি। - আমারে চেনো আমি কে।
- হু হা হা হা হা…. আমারে চেনেন আমি কে।
- তুমি কে শুনি।
- আপনি কে শুনি।
- এটা আমার বাড়ি বুঝলে।
- আর এটা আমার শ্বশুর বাড়ি বুঝলেন।
- হোয়াট।
- হোয়াট মানে হইতেছে কী?
এইটা যদি আপনার বাড়ি হইতে পারে,
তাহলে আমার শ্বশুর বাড়ি হইতে পারবো না ক্যান শুনি। - অনেক বেয়াদবি করে ফেলছো,
এবার তো তোমারে শিক্ষা দেওয়া দরকার। - ও মা তাই…. কোন স্কুলের
মাষ্টার আপনি বলেন তো। - রফিক…..ঐ রফিক….বন্দুকটা নিয়ে
আয় তো। - ও হু হু হু….. ভয়ে তো আমি হিসি
করে দিতেছি। - ঠাসসসসসসসসসসসসসস।
- কিহহ…. আমার বাপ আমারে
টাকা না দিক… জীবনে ও আমার গায়ে
হাত তুলে নাই।
আর তুই আমারে থাপড়ানি
দিছস… আজকে তো তোরে।
।
এর মধ্যেই রফিক নামের লোকটা
বন্দুক নিয়ে হাজির ।
।
এবার তো আমার অবস্থা সেই
লেভেল এর খারাপ।
ভয়ে তো আমি শেষ।
। - নীলাআআআআআআআআআ।
কই তুমি…একটা লোক এসে আমারে
বন্দুক দিয়ে গুলি কররতেছে।
।
আমার চিল্লানি শুনে.. উপর থেকে
নীলা দৌড়ে নিচে আসলো।
। - বাবা…বাবা…বাবা… দাঁড়াও।
- কে এই ছেলে।
- ওর নাম আরমান, কালকে বাসে আমরা দুইজন এক সাথেই আসছি।
ও খুব ভালো ছেলে… শুধু একটু শয়তান
টাইপের। - সেটা তো এসেই বুঝছি…কালকে
বাবার সাথে ও নাকি খুব শয়তানি
করছে।
আর বাবাকে নাকি দরবেশ, জ্বীন এই
সব বলছে। - সরি… বাবা।
- তুই সরি বলছিস কেনো…ওর
মুখে কথা নাই।
।
এদিক ওদিন একটু দেখে
ধরফর করে নীলার বাবা পায়ে
পড়ে গেলাম। - কাকুওওও না মানে সরি আংকেল,
আমারে মাফ করে দেন পিলিজ।
আমি যদি জানতাম আপনারাই এই
খানের জমিদার… তাইলে আমি জীবনে ও
আপনাদের মুখের উপরে কোন কথা
কইতাম না.. সত্যি বলতেছি।
আর বিশ্বাস করেন, কালকে আপনার
বাবা যেমনে ছোফার উপরে বসে আছিলো।
যে কেউ ওনারে দেখে জ্বীন বা দরবেশ
মনে করতো..এখানে আমার কোন দোষ
কই বলেন।
আর আপনি আমার কাছে এসেই
বলতেছেন…. এই ছেলে খাবার
টেবিলে বসে আছো কেনো।
আপনি বুকে হাত দিয়ে বলেন কেউ
খাবার টেবিলে বসে।
একটা পাগল ও বসে না।
আপনার বলার দরকার ছিলো যে,
এই ছেলে খাবার টেবিলের চেয়ারে
বসে আছ কেনো।
হায় হায় কী এই সব কইলাম।
ও আংকেল…. না মানে জমিদার বাবু
মাফ করে দেন না প্লিজ।
।
এমন সময় কে জানি লাঠি দিয়ে
পাছাই একটা বারি দিলো। - ওই কোন সালারে।
- আবার একটা বারি।
- সালারে তোরে তো আজকে।
মাথাটা তুলতেই দেখি।
দরবেশ দাদুু…..
খাইছে আমারে…. যদি ও একটু
মাফ করতো, এবার তো আর সেটা ও
করবে না।
।
নীলার বাবার পা ছেড়ে এবার দরবেশ
দাদুর পা ধরলাম। - দরবেশ দাদু গো….. না মানে
জমিদার দাদু গো… আমি না আপনারে
একটু ও দেখি নাই।
মাফ করে দেন না ।
আমার যদি পাছাই চোখ থাকতো
তাইলে বিশ্বাস করেন… আমি জীবনে ও
আপনারে সালা কইতাম না।
মাফ করে দেন….. দাদু।
অনেক কষ্টে আব্বার টাকা চুরি
করে সিলেট যাইতেছি।
এখন যদি মাইরা ফ্যালান আমি তো মরে ও শান্তি পামুু না। মাফ করে দেন না।
। - ঠিকআছে….ঠিকআছে, মাফ করছি।
- যাক বাঁচলাম।
।
উঠেই দৌড়।
। - এই ছেলে কই যাও।
- আংকেল….আমি আর এখানে এক
মিনিট ও নাই …অনেক কষ্টে মাফ ছাফ
নিছি।
এবার আমি সোঁজা সিলেট। - ঠিকআছে… কিন্তু খেয়ে তো যাবে।
- না আংকেল…. আমারে আর ফাঁসায়েন না।
খাবার বসে আবার মুখ ফসকে কারে কী বলমু
আল্লাহ্ জানে।
তার চাইতে বরং আমি যাই। - আর এক পা এগুলে গুলি করে দিবো কিন্তু।
- আচ্ছা বলেন কী করমু।
- খেতে আসো।
- খাইতে তো যামু, কিন্তু পেঁটের
ভিতরে খাবার না বন্দুকের গুলি ঢুুকবো। - কী বললে।
- না না আংকেল কিছু না ।
- ঠিকআছে…. আসো।
। - ঐ আরমান দাঁড়াই আছো কেনো… বসো।
- হুমমমমমমম।
- চুপচাপ বসে আছ কেনো খাও।
- এমন চাপের মধ্যে কী আর পেঁটে
খবার ঢুকে… (মনে মনে) ।
। - এই যে আরমান…. তোমারে না
চুপচাপ মানাইতেছে না…আচ্ছা যা ইচ্ছে
বলতে পারো। - না না…. কী বলতে কী বলমু… পরে আবার
গুলি করবেন। - আরে না…. গুলি করবো কেনো… তোমার
যা ইচ্ছে বলতে পারো। - দরবেশ দাদু আবার কিছু বলবে না তো।
- আমি বাদে সবাই হা হা করে উঠলো।
। - আরমান….তুই আসলেই অনেক
খবিস…..। - জ্বী দাদু।
- এই প্রথম কেউ আমাদের সাথে এমন
ফাজলামো করার সাহস করছে। - হুমমমমমমম।
- হুমমমম…. মনে…।
- না মানে আংকেল…সরি…দেখছেন
আমি বলছিলাম আমার মুখ ভালো না,
কখন কী বলি। - হা হা হা….. আরে ব্যাটা কিছু মনে করি নাই।
তোর অনেক সাহস আছে… মানতেই হবে।
এই প্রথম জমিদার বাড়িতে এসে কেউ
আমাদের হাঁসালো।
অন্য সবাই তো ভয়ে মরে। - আমার আবার সাহস….আমার মতো
অসাহসী অকর্মা এই দুুনিয়াই আর এক
পিছ নাই (মনে মনে)।
। - এই যে আবার চোরের মতো কোথায় যাও।
- আংকেল খাওয়া তো শেষ এবার আমি
যাই। - চুপপপপ…. বসো।
- হুমমমমমমম।
- তোমারে কখনো ফাজিলের মতো
লাগে আবার কখনো ভোলা ভালা। - আচ্ছা আংকেল আমি যাই।
- যেতেই হবে।
- হুমমমমমমমমম।
- আচ্ছা যাও…… তবে ঘুরে ফিরে সন্ধাই
আবার আসবা। - ঠিকআছে।
একবার যাইতে পারলে ভুলে ও আর এই দিকে
চামুু না (মনে মনে)। - এই আরমান শোনো।
- বলেন।
- গাড়ি নিয়ে যাও।
- না না আংকেল এমনি ঠিক আছে।
- ওকে যাও।
।
কারেন্টের মতো উপরে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম।
।
নিচে এসেই আবার এক ঝামেলা।
। - বাবা আমি ও আরমান সাথে যাই।
- ঠিকআছে।
- এই না না…. তুমি আবার যাবা ক্যান।
- আরমান তুমি চুপ করো।
বাবা যাবো। - আচ্ছা…. ভালো করে যাস।
আর গাড়ি নিয়ে যা। - ঠিকআছে…..উমমমমমম্মা…. থ্যাংকুু বাবা
। - আরমান চলো।
- হুুমমমমম।
।
সিলেট ঘুরা আমার হইছে।
কী ভাবছিলাম… আর কী হইতেছে !!!
চলবে….