-দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি
আংকেল, আন্টি দুই জনেই দাঁড়িয়ে আছে।
আর এদিকে নীলা আমাকে পাপ্পি দিয়ে দিলো!
- ভিতরে কী চলছে হ্যা।(আন্টি)
- বিশ্বাস করেন আন্টি আপনারা যা
ভাবছেন সেইটার ধারে কাছে ও কিছু
হয় নাই। - সেটা তো নিজের চোখেই দেখলাম।
- সব যখন দেখেই ফেলছেন এখন আর
কী বুঝামু।
।
-রাগি একটা লুক দিয়ে আন্টি আমার দিকে তাকালো।
তখনই সেখান থেকে দ্রুত রুমে চলে আসলাম।
আর সুযোগ বুঝে সবার চোখ ফাঁকি
দিয়ে… আমি উধাও…. কারণ, আমি তো
আবার আমিই….।
ওখান থেকে সোজা সিলেট…
চার পাঁচদিন ধরে বাঁদরের মতো
পুরো সিলেট ঘুরতেছি।
।
মাঝে মধ্যে নীলা আংকেল আন্টির কথা
মনে হচ্ছে তবে কোন পাত্তা দিচ্ছি না।
কারণ আমার কপালে আবার ভালোবাসা
জিনিটটা সয় না।
তাই আমি নিজেই ওনাদের সবাইকে
ফাঁকি দিয়ে চলে আসছি।
।
কয়েকদিনে নীলা কেও
একটু একটু ভালোবেসে ফেলছিলাম
হয়তো।
কিন্তু ও কই আর আমি কই…
“কোথায় আগরতলা আর কোথায় খাটের তলা”..
হুট করে ভালোবাসি বললেই তো
আর সব হয় না।
আমি ওকে ভালবাসি বললাম আর
ও আমাকে বন্ধু ভেবে বসে থাকলো..
।
তখন জিনিসটা কেমন হইতো?
ফ্রিজের পানি দিয়ে ঠান্ডাই গোসল করার
মতো অবস্থা হইতো।
।
তার থেকে ভাই চলে আসছি….
ভালো একটা কাজ করছি।
দুইদিন পরে বাসাই যামু,
আবার সেই আগের মতো আব্বার
গালি খামু….ঝাক্কাস লাইফ।
।
আরো কয়েকদিন ঘুরে ফিরে
বাসাই যাওয়ার জন্য।
স্টেশনে বসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা
করতেছি।
।
হঠাৎ সামনে দেখি।
নীলা, আংকেল, আন্টি সবাই এক
সাথে আমার দিকেই আসছে।
আস্তে আস্তে আমার কাছে এসে দাঁড়ালো।
। - হ্যালো…. আন্টি।।
- ঠাসসসসসসসসসসসসসস।
- আউউউউউওওওওও।
- এই যে আংকেল আবার কী
ঝগড়া লাগছেন!
আমি কিন্তু আর মিল করার কাজে নাই.. - ঠাসসসসসসসসসসসমসস।তিনিও
- ঐ নীলা……কাহিনীটা কী বলতো।
- এ আবার আরো এক ধাপ এগিয়ে,
ফটফট করে দুইটা দুইটা থাপড়ানি দিলো।
।
আচ্ছা সবাই কী আমারে থাপড়ানি
দেওয়ার কন্ট্রাক নিছো হ্যা।
মাড়ির দাঁত গুলা মনে হয় সব নড়ে গেলো।
কী করছি আমি সেটা তো কেউ বলবা নাকি।
। - সেটা বলার জন্যই তো তোমারে
এতদিন ধরে খুঁজতেছি।
এবার বাসায় চলো তারপরে তোমাকে দেখাচ্ছি (নীলা) - ওর কলারটা ধরে টেনে টেনে
নিয়ে চল (আন্টি) । - খুব বার বেড়ে গেছে ও…এবার
ওকে একটু সায়েস্তা করা দরকার (আংকেল) ।
।
নীলা খপ করে শার্টের কলারটা
ধরলো আর টেনে টেনে নিয়ে যেতে
লাগলো!
কেউ দেখলেই বলবে বড় কোন মাফিয়াকে পুলিশিনি ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
ওহহহহ আমারে… বাঁচাও… বাঁচাও।
টানতে টানতে বাসাই নিয়ে আসলো।
।
এখন বলো আমাকে এত্তোগুলা বকা কেনো খাওয়ালে!(নীলা)
কিহ!কিসের বকা!
-ঐদিন তুমি পালানোর কারণে মা বাবা আমাকে সন্দেহ করেছে।বকা দিছে এত্তোগুলা,এগুলোর কারণ তুমি বলেই হাতে লাঠি নিলো!(নীলা)
।
-আমিও কম কিসে!খপ করে নীলার হাত ধরে ফেললাম
-চিৎকার দিলাম,কে আছে বাঁচাও বাঁচাও, আমারে নিরীহ পোলা পেয়ে ইজ্জত নিতেছে…
।
-চুম!ড্রামাবাজি থামাও,আর শুনো(নীলা)
-হ্যা, বলো
।
-তোমার বাড়ির ঠিকানা দাও,একদিন বেড়াতে যাব।(নরম সুরে বললে)
-কিরে!১ মিনিটেই রাগি থেকে এতো নরম সুর মতলব কি!(মনে মনে)
-এই কি বিরবির করছো ঠিকানা দাও!(নীলা)
-সুন্দরী মাইয়া এতো নরম সুরে বললে তো
জীবনডাই দিতে পারি আর তুমি তো ঠিকানা চাইছোএই বলে ঠিকানা দিয়ে দিলাম।
।
-এইরে!হঠাৎ ঠিকানা কেনো?কারণ কি!আর চাইলো আমি দিয়ে দিলাম!নাকি বাপের টাকা চুরি ধরিয়ে দিবে বাবাকে (মনে মনে)
।
-ঐ মনে মনে বিরবির করতে হবে না, কাজ শেষ আমার।চলো ঘুরে আসি(রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো নীলা)
-চলো,বহুদিন পর একসাথে!(আমি)
-দাড়াও!আব্বুকে একটা সংবাদ দিয়ে আসি(নীলা)
।
-নীলা আসতেই গাড়ী নিয়ে তখনই ভৌ দৌড় দুজন।
-কতদূর এসে একটা সুন্দর জায়গায়
নামলাম।
দুজন ঘুরতে ঘুরতে বিকেল হয়ে গেছে তবুও নীলা ফিরে যাওয়ার কথা বলছে না খালি একটু পর পর ফোনে কি যেন দেখে…দুর ভাল্লাগে না।
।
-নীলা আমাকে ভালোবাসে কি না পরিক্ষা করা যাক(মনে মনে)
-যেই ভাবা সেই কাজ
।
-একটা মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে তাকে দেখিয়ে নীলাকে উদ্দেশ্য করে…
-এতো সুন্দর মাইয়াডারে বউ বানাতে পারলে
ফাজলামো সব ছেড়ে দিমু….বলতেই
-তখনই নীলা রাগি একটা লুক নিয়ে এসে
খপ করে কলার ধরে ফেললো।
-এইরে,এই মেয়ে কি রাগি নাকি শান্ত কিছু বুঝা যায় না
।
চল তুই গাড়িতে উঠ,তোর সময় শেষ(নীলা)
-কিসের সময় শেষ!আম আমি মানে এবার
বিয়া না করেই মরে যাব😧
।
গাড়ি নিয়ে বাড়ি পৌঁছে গেলাম।
।
কিন্তু এটা কার বাড়ি পুরা বাড়ি লাইট ফুল দিয়ে সাজানো।
-ওই নীলা তোমার কি বিয়ে নাকি গো
-হুম আজকেই
-ওও কিন্তু কার সাথে…?
-তোমার সাথে আমার বিয়ে
-কিইইইই
-হুম তুমি এইখানেই থাকো আমি আসছি
।
অই আমাকে এইখানে আটকিয়ে রাখলে কেনো।যাহ বাবা মাইয়াডা দেখি আমাকে ফেলই চলে গেল।।
।
একটু পর
।
-আরমান এই পাঞ্জাবি টা পরে আমার সাথে আসো
-আংকেল! পাঞ্জাবি কেনো?
-আজকে তোমার বিয়ে আর এখনই, এটাই তোমার পালানোর শাস্তি।
।
আপনি এই ছোড়ো পুলাডার বিয়া দিয়ে
সংসার নামক জেলখানায় বন্ধি করিয়েন না(পা ধরে)
-এই ছ্যাচড়া ছেলে!(কান ধরে)
তুমি এখন জমিদার বাড়ির মেয়ের জামায় হবে
এসব ছেড়ে দাও ফাজলামো।
।
এদিকে খুশিতে মনে মনে লাড্ডু ফুটতেছে
নীলার মতো সুন্দরী তাও জমিদার বাড়ির মেয়ে আমার মতো ফাজিলের বউ হবে(মনে মনে)
।
-ওকে আংকেল!কিন্তু সব ছেড়ে দেবো কিন্তু এভাবে বিয়ে করবো না।
-কেনো?(আংকেল)
-ভালো খারাপ যেমনই হোক
আমার জন্মদাতা বাবা ও মা কে ছাড়া এভাবে বিয়ে করতে পারি না।হ্যা আমি ফাজিল কিন্তু এতো খারাপ না যে পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করব।
।
-বাহ বাহ এই কথাতেই প্রমাণ হলো
তুমি আমার মেয়ের যোগ্য জামায়।
-যোগ্য অযোগ্য জানিনা আংকেল কিন্তু মা বাবাকে ছাড়া বিয়ে করব না এখন তবে এটা ঠিক যে নীলাকে খুব করে চাই বউ বানামু
।
-আমি যা বলি তাই হবে এখন, চলো(আংকেল)
-একপ্রকার জোর করেই বাহিরে নিয়ে গেলো
।
হাই হাই এখানেতো দেখি নিলা শাড়ি পরে বশে আছে।
-পাশে তাকাতেই দেখি অবাক
-বিশ্বাস করেন আমনের পোলা টাকা চুরি করার মতো ফাজিল হলেও তোমাকে না জানিয়ে বিয়ে করার মতো খারাপ না, মাপ কইরা দাও(আব্বার পা ধরে)
।
আরে ফাজিল ছেলে আমি জানি সব, ছাড় পা,(আব্বা)
-আব্বা এখানে কিভাবে!তাহলে কি নীলা এজন্য ঠিকানা নিলো?যাক সারপ্রাইজটা বেশ ভালোই ছিল(মনে মনে)
।
এদিকে এতোসব সারপ্রাইজের ভিড়ে ভাবতে ভাবতে হারিয়ে যাচ্ছি তখন…
-ঠাসসসস!ঐ ফাজিল!ভির ভির না করে কবুল বল(আব্বা)
-ওমাগো..বিয়ের দিনও মাইর খেতে হচ্ছে(আমি)
।
আমার আর নীলার বিয়ে দিয়ে দিলো জোর করে(আর আমার কিন্তু নীলাকে হেব্বি লাগে)
।
বাসর ঘরে ঢুকে দেখি নীলা ইয়া বরো ঘুমটা দিয়ে বসে আছে
।
আমি যেতেই আমার কাছে এসে আমার কলার ধরে
-ওই তুই কই চলে যাচ্ছিলি কেনো হে আমায় ফেলে
-কেনো ঘুরতে
-আমার জন্য কি তোমার কি ভালোবাসা নাই
-আছে তো।কি করবো বলো
-কি করবি মানে..আমিনা এখন তোমার বউ আমাকে ভালোবাসবে
-ওকে বাসবো।আসো গো আমার কাছে তোমাকে পাপ্পি দেই ঊম্মম্মম্মম্মম্মাহ উম্মম্মম্মম্মমাহ
-আরমান তুমি পাঠক পাঠিকা দের সামনে কি করছো এগুলো
-ও আমিতো ভুলেই গেসিলাম
আচ্ছা আপ্নারা এহন জানগা আমরা আমাদের কাজ করি টাটা ..
সমাপ্ত _