আম্মু খোদার দুহায় লাগে, আমি বিয়া করমু না
আম্মুঃ বাবা দেখ,, এটা তোর আব্বুর ডিসিশান,,, এখানে আমি কিছু করতে পারবো না,,,
আমিঃ আম্মুউউ,, আমি এখনো অনেক ছুডু,,,
আম্মুঃ আমি যাচ্ছি,,,
আমিঃ আম্মুউউউ…. আমাকে এতো ছুডু বেলায় বিয়া করাই দিলে, আমি মইরা যামু
এমন সময় কেউ একজন আমাকে ডাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিলো,,,
আমিঃ ওই কোন সালারে আমাকে,,, ডাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিছে,
কেউ একজনঃ আগে চোখটা তো খোল,,,
আমিঃ( চোখ খুলতেই) এএএ আমি বিছানায়!! তার মানে কি ? আমি এতোক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম,,, ( যাক বাবা, বেচে গেছি,,, অন্ততপক্ষে বিয়েটা তো আর করা লাগবে না,,,বিছানা থেকে উঠতে যাবো,,,, কি বেপার আমার কাপড় চোপড় ভেজা কেনো ) ওই রিয়ানি তুই আজকেও আমাকে পানি মারছোছ,,
রিয়াঃ তো কি আদর করবো নাকি,,,হুম,,, সেই কখন থেকে ডাকতেছি,,,, বার বার ঘুমের ঘোরে থেকেই বলছিস,,, আমি বিয়া করমু না,, আমি বিয়া করমু না,,,
আমিঃ তাই বলে পানি মারবি,,,
রিয়াঃ পানি মারছি বেস করছি,,, ( তারপর বালতিতে বাকি যতটুকু পানি অবশিষ্ট ছিলো,,, সেটাও মেরে দিয়েই,,, খেইচ্চা দৌড়)
উফফ এই মেয়ের জালায় আর পারি না,,,,
বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম,,,
(হেল্লো জনগণ,,, আসেন পরিচিত হয়ে নেই,,,,,আর আমাকে তো সবাই চিনেনই তার পোরেও বলি।।।। আমি (আরমান হোসেন হিমেল),,
ডাক নামঃ আরমাম,,,)
আর এতোক্ষন যার সাথে ঝগড়া করছিলাম ও হচ্ছে আমার একমাত্র চাচাতো বোন,,, আর আমরা দুজনেই,, ইন্টার মেডিয়েট ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী,,,,,, আর আমাদের এলাকায় সবাই আমাদেরকে জমজ ভাই বোন বলেই সম্মোধন করে,,,
আর এতোক্ষণ যে আমাদের ঝগড়াটা উপভোগ করলেন এটা,, আমাদের রোজকার ঘটনা মাত্র,,,, আসলে ওই পেত্নী টা আমাকে রোজ সকালে পানি মারবেই,,,, আরে রিয়াকে আমি পেত্নী বললাম বলে আপনারা আবার অরে পেত্নীই ভাইবেন না,,,,
সত্যি বলতে রিয়া কিন্তু অনেক সুন্দরী,,,
তার রুপের প্রশংসা করা শুরু করলে,,,, গল্প আর শেষ হবে না,,,,, তাই আর বাংলা সিনেমার মতো,, গল্পের নায়িকার এতো প্রশংসা করমু না
যাক বাবা ,, আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে ফ্রেশ হয়ে গেলাম,,,,
নাস্তা করে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি,,,
রিয়াঃ ( গলা ফাটাইয়া) কিরে আলু তোর হইছে,,,,
আমিঃ( রেডি হয়ে রিয়ার কাছে গিয়েই মাথায় একটা গুতা মাইরা) অই তোকে কতবার বলছি,,, তুই আমাকে আলু বলবি না,,
রিয়াঃ তুই বল্লেও আমি তোকে আলু বলেই ডাকবো,,,
আমিঃ এএএএএএহ,, নিজেতো দেখতে একেবারে কার্টুনের মতো,,,,
রিয়াঃ কিইইই তুই আমারে কার্টুন কইলি ,,,আমি এক্ষুনি ছোট আম্মুর( মানে আমার আম্মু) কাছে বিচার দিবো
আমিঃ তা,, যা না,,, মানা করছে কে!
(কথাটা বলারা সাথে সাথেই রিয়া বিদ্যুৎ গতিতে আম্মুর কাছে যেতে লাগলো,,,,, এইরে কাম সারছে,,, এখন আম্মুর কাছে বিচার দিলে তো,,,, আমার পকেট খরচের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেবে,,,, আমি ফুট কইরা মনডারে এক্কেবারে নরম কইরা রিয়ানিরে কইলাম) রিয়ায়ায়া,,,,
রিয়াঃ( মুহুর্তের মধ্যেই দাড়িয়ে গিয়ে) শোন,,, আজকে আর তোর এসব মিষ্টি কথায়,,, আমি গলে যাচ্ছি না,,,, তুই সবসময় আমার সাথে এমন করিস,,,, পরে ছোট আম্মুর কাছে বিচার দেওয়ার কথা বললেই , তুই আবার ঢং শুরু করিছ,,, আজকে আমি ছোট আম্মুর কাছে বিচার দিবোই,,,,
আমিঃ এই শোন না,, কলেজের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে,,, প্লিজ তারাতাড়ি চল,,,
রিয়াঃ না,, প্রয়োজনে আজকে কলেজে যাবো না,,,,, তারপরও তোকে আজকে শিক্ষা দিয়েই ছারবো,,,
( তারপর বহুত ঠেলাঠেলির পর, রিয়ানি,,,, আম্মুর কাছে বিচার দেওয়ার চেষ্টা স্থগিত করলো,,,,,।,, দুঃখের কথা কি আর কমুরে ভাই,,,, আসলে সত্যি কথা বলতে,, এই বাড়িতে আমার কোনো দামই নাই,,,, আমি কিছু করলেই, আমার হাত খরচের টাকা দেওয়া বন্ধ,,,, আর রিয়ানি যা কিছুই করুক তার কোনো বিচার নেই,,, যাউকগা সেসব কথা)
তারপর রিয়াকে নিয়ে কলেজে পৌছালাম,,,,
লাঞ্চের সময় রিয়া ওর বান্ধবীদের সাথে চলে গেলো,, আর আমিও হারামিগুলার সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে চলে গেলাম,,,,
রুবেলঃ কিরে তোকে আজকে এমন শুকনা শুকনা লাগছে কেন !
আমিঃ আর বলিস নারে ভাই,,, এই রিয়ানির জালায়,,, তোর এই ভদ্র আর ইনোসেন্ট বন্দুটা এক্কেবারে শেষ
কথাটা বলার সাথে সাথেই সব হারামিগুলা হাসতে হাসতে এক্কেবারে মংগল গ্রহে যাওয়ার অবস্থা,,,
আমিঃ ( এক বালতি রাগ মাথায় লইয়া) অই তোরা আমার এই দূরদষা দেখে মজা নিচ্ছিস,
রিমাঃ আরে দাড়া দাড়া,,, আরেকটু হেসে নেই,,,,, ,,,,,তু তুই,,, ভদ্র আর ইনোসেন্ট,,,,, সালা হারামি,,, রিয়া তো তকে সহ্য করে,,,,, আমি ওর জায়গায় থাকলে,,, তোরে প্রতিদিন নিয়ম করে ক্যালাইতাম,,,,,
আমিঃ এএএএহহহ,,,, ভাব লয়,,,, দেখিস তোর জামাইয়ে তোরে রুজ ক্যালাইবে,,,
রিমাঃ এই শোন,,, আমার জামাই আমারে,,, ক্যালাইবে না,,,, শুধু বালুপাসবে,,, আর তোর কপালে তো বিয়াই নাই
আমিঃ অই বেশি পাকনামি করলে,,, তর ছুডু বইনরে লইয়া ভাগা দিমু,,,
রিমাঃ এএহহ,,, আমার বইনেরে তোর কাছে বিয়া দিমু না,,,
ইকবালঃ এই তোরা থামবি
সোহাগঃ আরে বেটা থামাইলি কেন! ,, ফ্রি-তে তামিল মুভির কাহিনী উপভোগ করতেছিলাম,,, ভালোইতো লাগতেছিলো,,,
আমিঃ সালা হারামি,,,, দাড়া তোরে তামিল মুভির কাহিনি উপভোগ করাইতেছি,,,, (কথাটা কইয়াই)
ঢিসুম ডিসুম,,, অওঅঅই ডিসুম,,,
সোহাইজ্ঞাঃ ওওওয়া,, ওওওয়া,,, ওওওয়া
রুবেলঃ আচ্ছা ভাই,, অনেক কাহিনী হইছে,,,,, চল এবার কিছু খেয়ে আসি,,, খুব খুদা লাগছে,,
তারপর আমরা সবাই উঠে লাঞ্চ করতে যাবো,,,, এমন সময় পিছন থেকে কেউ একজন আমার শার্টের কলার ধরে টান মারলো,,,
আমিঃ অই কোন সালারে,,,, ( পিছনে তাকাতেই) রিয়া তুই,,
রিয়াঃ হুম,,,,আরমান চল ফুচকা খাবো,,,
আমিঃ না আমি যামু না,,,,, তুই ঝাল বেশি খাছ,,,
রিয়াঃ চল বলতেছি ( তারপর আমারে টাইন্না টুইন্না ফুচকাওয়ালা কাছে নিয়ে গেলো) মামা ঝাল দিয়া দু প্লেট ফুচকা দেন
আমিঃ (ফট কইরাই ফুচকাওয়ালাকে চোখে একটা ইসারা মারলাম,, আর কইলাম,,, আমার প্লেটে যেনো ঝাল না দেয়,, আর রিয়ানির প্লেটে ইচ্ছা মতো ঝাল দেয় ব্যাস কাম হইয়া গেলো। বাকিটা ইতিহাস )
তারপর কলেজ শেষ করে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে,,, বিকেলের দিকে আড্ডা খানায় চলে গেলাম,,,
রুবেলঃ কিরে চা খাবি,,
আমিঃ হুম,,, (এই যে পাঠক সাহেবরা,,, আমরা এখন চা খাচ্চি☕,,,, আপনারা কি খাবেন? ঢেলে দেইইই,,,,দেই একটু)
(সব সময় গল্প গ্রুপ এ দেয়া জাইনা।।। তাই আমার গল্প যারা পরেন। তারা আমাকে এড দিয়ে সাথে থাকেন থেক্স)
তারপর চা শেষ করে,,, বন্দুদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরলাম,,,
রাতের খাবার শেষ করে আমার রুমে এসে স্টাডি করতেছি,,,, এমন সময়,,
টুন টুন টুন টুনা টুন,,,,
এইরে রিয়ানি কল মারছে,,,,
আমিঃ(রিসিভ করে) কিরে,, এতো রাতে কল দিছিস কেন?
রিয়াঃ আরমান তুই একটু বাইরে আয়,,,
আমিঃ এএই,,, তোর মাথা খারাপ হইছে,, এখন রাত সাড়ে ১২ টা বাজে,,,, আমি আসতে পারবো না,,,,
রিয়াঃ প্লিজ,,,, তারাতাড়ি আয়,,,, খুব আর্জেন্ট ,,,
আমিঃ আচ্ছা আসতেছি,,,
(রিয়ার কাছে গিয়ে) হুম বল,, কি জন্য ডাকছিস৷
রিয়াঃ ( আমার হাতে ধরে টানতে টানতে) চল,,,
আমিঃ আরে কই যাবো,,
রিয়াঃ সাদেক দের বাড়ির আম গাছ টা দেখছিস,,,, এত্তোগুলা আমা ধরছে,,,, চল চুরি করমু,,,
আমিঃ কিহহ,,, এতো রাতে আম চুরি করবি,,, হাই আল্লা আমারে উঠায় নিয়া যাও,,,
রিয়াঃ আরে বেটা,,,, এটায় তো চুরি করার পারফেক্ট টাইম,,,,, চল।
রিয়াঃ (সাদেকদের আম গাছের নিচে গিয়ে) পরিবেশটা কতো সুন্দর না,,, কোনো হইচই আছে
আমিঃ এই তাহেরির ডাইলগ রাখ,,,,, সাদেইক্কার মা টের পাইলে না,,, চিল্লায়া মার্কেট ফাওয়ায়া লাইবো,,,
রিয়াঃ আরে বেটা টের পাবে না,,,, তুই নিচে চুপমেরে দাড়িয়ে থাক,, আমি বেগ নিয়ে গাছে উঠতেছি,,,,
আমিঃ হুম,,,সাবধানে,,
১০ মিনিট পর,,,,,
আমিঃ রিয়া,, তারাতাড়ি গাছ থেকে নাম,,,, সাদেইক্কার আম্মু টের পেয়ে গেছে,,,,
মুহুর্তের মধ্যেই রিয়া গাছ থেকে নেমে,, আমার হাতে ধরেই সেই লেবেলের দৌড়,
তারপর আমার রুমের পিছন দিকের দিয়ে আমি আমার রুমে প্রবেশ করে,, রিয়ানিরে একটা হেচকা টান দিয়ে ওই জানালা দিয়েই আমার রুমে প্রবেশ করালাম,,, কিন্তু দুর্ভাগ্য বসত রিয়া তার শরিরের ব্যালেন্স ঠিক রাখতে না পেরে,,, আমাকে নিয়ে,, বিছায় একেবারে আমার উপরে পরে গেলো,,,,
তারপর তামিল সিনেমার নায়ক নায়কাদের মতো,,, দুজন দুজনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছি,,,, রিয়া আস্তে আস্তে আমার মুখের একেবারে কাছে চলে আসছে,,,, এতোটাই কাছে যে,, আমি ওর প্রতিটা নিস্বাস অব্দি অনুভব করতে পারছি,,, তারপর রিয়া তার নিজেত ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁটের ছোয়া পেতে যাবে,, এমন সময় আমি রিয়াকে এক ধাক্কা দিয়ে আমার উপর থেকে সরিয়ে,,,,বললামঃ রিয়া কি করছিস!
মুহুর্তের মধ্যেই পরিবেশটা অন্যরকম রুপ ধারণ করলো,,,
রিয়া খাটের এক পাশে চুপচাপ হয়ে বসে আছে,,, আর আমি একপাশে,,,,
দুজনের মধ্যেই কঠোর এক নিরবতা বিরাজ করছে,,,,
কিছুক্ষণ পর রিয়া নিরবতা ভেঙে বললো,,,, আমি যাচ্ছি,,, বলেই আমার কথার কোনো উত্তরের উপেক্ষা না করে রুমের দরজা খুলে,, রিয়া তার নিজের রুমে পদার্পন করলো,,,
আমি বিছায় শুয়ে পরলাম,,,, আর ভাবতে লাগলাম,, রিয়া আমার সাথে এমনটা কেনো করতে চাইলো,,, আমিতো কোনো দিনি ওকে এমন চোখে দেখি নাই,,, তাহলে,, রিয়াকি আমাকে ভালোবাসে,,,,, না না,,, তা কি করে সম্ভব,,, এসব ভাবতে ভাবতে যে কখন ঘুমিয়ে গেছি,,, তা আর খেয়াল নেই,,,,
সকালে রিয়ার ডাকে ঘুম ভাংলো,,,
আমিঃ আজব!! তুই আজকেও আমাকে পানি মারছিস,,( দেখছেন নি কারবারটা,,,, রাতে যে এতোবড় একটা কাহিনি ঘটে গেছে তার,, কোনো প্রভাব ই তার মধ্যে উল্লেখ নাই,,)
রিয়াঃ তো কি করবো হুম,,,, তারতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হ,,,,, কলেজের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে,,,,( কথাটা বলেই ডেং ডেং করে আমার আমার রুম ত্যাগ করলো,,)
তারপর ফ্রেশ হয়ে প্রতিদিনের মতোই কলেজে চলে গেলাম,,,,
লাঞ্চের সময় হারামিগুলার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছি,,,
রিমাঃ কিরে আরমান,,, তুই আজকে এতো চুপচাপ কেন?
আমিঃ না,, এমনি
এমন সময় রিয়া এসে,,, কিরে তোদের সবার কি খবর?
হারামিগুলাঃ হুম ভালো,,, তোর?
রিয়াঃ হুম ফাটাফাটি,,,,
রিমাঃ বাব্বাহ,,,, আজকে এতো খুশি কেন?
রিয়াঃ ওমা,,, তোরা কিছু জানিস না,,,,
(সবাই এক বস্তা আগ্রহ লইয়া রিয়ারে জিজ্ঞেস করলাম) কই নাতো,,,,, কি?
রিয়াঃ আরে আগামী সপ্তাহে আমাদের কলেজ থেকে পিকনিকে যাচ্ছে,,,
( সবাই বদনার বদনা খুশী লইয়া) কিইইহ
রিয়াঃ হুম,,,,, আরমান কলেজ ছুটি দিয়ে দিছে,,, চল বাসায় যাবো,,,
তারপর হারামিগুলার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে,,, রিয়াকে নিয়ে বাসায় ফিরলাম,,,,,
রাতে আমার রুমে বসে স্টাডি করছি ,, এমন সময় রিয়া আমার রুমে প্রবেশ করলো,,,,
আমিঃ কিরে তুই এতো রাতে আমার রুমে,,,!
রিয়াঃ ( আমার বিছানায় বসে আমার দিকে একটা খাতা এগিয়ে দিয়ে একেবারে গুলুগুলু হয়ে ) এই আরমান অংকটা বুঝায়দে না,,,
আমিঃ কিরে আমি স্বপ্ন দেখতেছি না তো,,, ( হাতে একটা চিমটি কেটে) না না,, আমিতো ঠিকি দেখছি ( গলা ফাটাইয়া) আম্মুউউউগো,,, আমার রুমে ভুত ডুকছে,,,,
সাথে সাথেই রিয়া আমার মুখ চেপে ধরে,,, অই সালা,,, আমি ভুত না,,, আমি রিয়া,,,
পরক্ষণেই আম্মু এসে,,, কিরে আরমান ভুত কই,,, এটা তো আমাদের রিয়া,,, রিয়া মা,, তুই কি ওকে ভয় দেখাইছিস
রিয়াঃ ( কান্নাজরিত কন্ঠে) না,, ছোট আম্মু,,,, আমি একটা অংক বুঝতেছিনা,,, তাই আপনার ছেলের কাছে আসছিলাম অংকটা বুঝার জন্য,,, কিন্তু আপনার ছেলে,,,, ( কথাটা বলেই ছোট বাচ্চাদের মতো দু হাত দিয়ে চোখ কচলাতে কচলাতে)
ওওওয়া,,, ওওওয়া, , ওওওয়া
আম্মুঃ ( রিয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে) অলে বাবুলে,, কাদেনা কাদেনা,,, এই হারামজাদা,, রিয়াকে অংকাটা বুঝায় দে,,
আমিঃ না আম্মুউউ,, এইটা রিয়া না,,, ভুত,,,
আম্মুঃদেবো একটা কানের গুরায়,,,,, ওটা রিয়া ই,, ভুত হলে ওকে ছোয়া যেতো না,,,
কথাটা বলেই আম্মু আমার রুম ত্যাগ করলো,,,
রিয়াঃ কি বেপার ছোট আম্মু কি বললো,,, সেটা কানে যায় নায়,,, তারাতাড়ি আমার অংকটা বুঝায় দে,,,
আমিঃ অংক বুঝায় দিবো সমস্যা নাই৷ কিন্তু একটা বিষয় কিছুতেই আমার মাথায় ডুকছে না,,,,,তোকে বড়ো আম্মু( রিয়ার আম্মু) এতো বকাঝকা করেও একবার পড়ার টেবিলে বসাতে পারে না,,, আর সেই তুই কিনা,, নিজের ইচ্ছাতে আমার কাছে আসছিস অংক বুঝতে,,,,
রিয়াঃ হুম্ম , আসছি,,,,, আর এখন থেকে রুজই আসবো,,,
আমিঃ আফা গো,,,,আন্নের দুহায় লাগে,, আন্নে আরে আর জালায়েন ন,, ওওওয়া,, ওওওয়া
রিয়াঃ অই নেকামো ছারবি নাকি,,, ছোট আম্মুকে ডাকবো,,
আমিঃ না না,,,,,তোর যখন মনে চায় তখনই আসবি
রিয়াঃ হুম ,, গুড বয়৷
তারপর রিয়াকে অংক বুঝাতে লাগলাম,,, কিন্তু রিয়া খাতায় মনোযুগ না দিয়ে এক দৃষ্টিতে শুধু আমার দিকেই তাকিয়ে আছে,,,,
আমিঃ অই,,,,তুই অংক রেখে আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?………..
.
তারপর রিয়াকে অংক বুঝাতে লাগলাম,,, কিন্তু রিয়া খাতায় মনোযুগ না দিয়ে এক দৃষ্টিতে শুধু আমার দিকেই তাকিয়ে আছে,,,,
আমিঃ অই,,,,তুই অংক রেখে আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
রিয়াঃ এএএহ,,,, আমার ঠেকা পরছে,,,,
আমিঃ অই,, একদম চালাকি করবি না,,,
রিয়াঃ আমি কোনো চালাকি করতেছি না,,,,চুপচাপ অংক টা বুঝায় দে,,,
আমিঃ অংক বুঝানো শেষ,,,, যা আমার রুম থেকে ভাগ,,,
রিয়াঃ কেনো রে,,, তোর রুম থেকে ভাগবো কেনো,,,,, ( আমার একেবারে কাছে এসে ফিসফিস করে) কিরে girl friend আছে নাকি,,,,কথা বলবি
আমিঃ দেবো একটা কানের নিচে,,,,,, যা ভাগ,,,, আমি এখন ঘুমাবো,,,
রিয়াঃ হুম যাচ্ছি যাচ্ছি,,,, এতো চেত দেখাতে হবে না
উফফফ এই মেয়ের জালায় আর পারছি না,,,,, যে ভাবেই হোক এর একটা বিহিত করতেই হবে,,,,
যাই ঘুমিয়ে পড়ি,,৷ গুড নাইট,,,,
পরের দিন বিকেলের দিকে হারামিগুলার সাথে আড্ডা দিচ্ছি,,
রুবেলঃ কিরে বেটা আরমান,,,, তা পিকনিকে গিয়ে তো আমরা যে যার গফ নিয়ে ঘুরতে বেরোবো,,,, কিন্তু তুই কি করবি,,,,,তোকে এতো করে বললাম একটা প্রেম টেম কর,,, কিন্তু তোর তো নাকি,, এসবে কোনো ইন্টারেস্ট ই নাই,,,,
সোহাগঃ আরে বেটা সমস্যা কি,,, আমাদের রিয়া আপু আছে না,,,, আর তা ছাড়া রিয়া আর সাদের সাথে তো সামথিং সামথিং,, কিছু চলছে আর সেই জন্যই তো আমাদের হিরোর অন্য কোনো মেয়ের প্রতি কোনো ইন্টারেস্ট নাই
আমিঃ অই সোহাইজ্ঞা,, মাইর খাওয়ার শখ হইছে,,, ,,রিয়া আমার বোন হয়,,,
সোহাগঃ আরে বেটা রিয়া তো দেখতে হেব্বি
আমিঃ সোহাইজ্ঞা,,, মেজাজটা খারাপ করবি না বলে দিলাম,,,
ইকাবালঃ অই তোরা থামবি,,,, সবসময়ই শুধু ঝগড়া মারামারি এসব চলছেই,,,,,
রুবেলঃ আচ্ছা বাদ দে,,,,, আর সোহাইজ্ঞা,, সালা মিনারির জামাই,,, তুই কথা,, একটু কম বলবি,,,,
তারপর হারামিগুলার সাথে আড্ডা দিয়ে রাতে বাসায় ফিরলাম,,,,
ফ্রেশ হয়ে আমার রুমে এসে,,, বিছানায় শুয়ে ফেসবুকিং করছিলাম,,,,
এমন সময় রিয়া আমার রুমে এসে,,,, আমার সাথেই বিছানায় শুয়ে বলতেলাগলো,,,,, দেখি কি করছিস,,,, তারপর রিয়া আমার এতোটাই কাছে চলে আসলো যে,,,, অর শরীর আমার শরিরে বার বার স্পর্শ করছে,,,,
আমি মুহুর্তের মধ্যেই উঠে গিয়ে রিয়াকে বললামঃ রিয়া তুই এসব কি করিস।!
রিয়াঃ ওমা,,, আমি আবার কি করলাম,,,
আমিঃ দেখ রিয়া,, তুই এখন আর সেই ছোট নেই,,,,, এই যে তুই সারাক্ষণই আমার হাত ধরে টানাটানি করিস,,, আমি বিছায় শুয়ে থাকলে তুই,, আমার সাথে এসে শুয়ে পরিস,,,, এসব মানুষ দেখলে খারাপ কিছু ভাবে,,,, সমাজ এটা ভালো চোখে দেখে না,,,,
রিয়াঃ আরে রাখ তোর সমাজ,,,,, আমার যা ভালো লাগে আমি তাই ই করি,,, কে কি বললো না বললো,, এসব দেখার সময় আমার নাই,,,
আমিঃ দেখ রিয়া,, তুই বড়ো হয়ছিস,,,, কয়েকদিন পর তোর বিয়ে হবে,,,, কিন্তু তখন যদি বর পক্ষ এসে,,, তোর এসব ছেলেমানুষী গুলা জানতে পারে,,, তখন তো তোর বিয়ে হবে না,,,
রিয়াঃ ছেলেমানুষী মানে,,,,, এই আমি অন্য কোনো ছেলের সাথে কখনো এসব রঙ ঢং করছি,,,,, যা কিছু করি সব তো তোর সাথেই,,, আর তুই তো আমার ভাই, বন্ধু, সব কিছু,,,,, আর আমি তোর সাথে এসব করবোই,,,,, আর তা জেনে যদি কোনো সালায় আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়,,, তাহলেই আমি বিয়ে করবো,,, নয়তো ফোট,,,,,
আমিঃ ছি ছি ছি,,,,,, নিজের হবু বরকে কেউ সালা বলে,,,, এই প্রথম শুনলাম,,,,
রিয়াঃ শুধু সালা না,,,, রুজ রুজ ক্যালাবো,,,, তোর কোনো সমস্যা,,?
আমিঃ নারে ভাউ,,,, আমার আবার কিসের সমস্য,,,, কিন্তু তোর বর টার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে রে,,,,,, ওরে রিয়ানির বর,,,,, ভাই তোর যা ইচ্ছা আখাংকা আছে,, সব বিয়ার আগেই পূরণ করে নে,,,,বিয়ার পর তোর জিবনে সুখ বইলা আর কিছু থাকবো নারে ভাই,,,, এই মাইয়া,, তোর জিবন পোরা ত্যাজপাতা কইরা দিবো
রিয়াঃ অই,,, ফাইজলামি রাখবি,,,,, চল আম্মু খাবার নিয়ে বসে আছে,,,,
আমিঃ হুম চল,,,,
তারপর খাবার টেবিলে আমরা সবাই এক সাথে বসে খাবার খাচ্ছি,,,,,
আমি খেয়াল করলাম ,, রিয়া কিছুক্ষণ পরপরই কেমন ভাবে যেনো আমার দিকে তাকাচ্ছে৷ আমিও ফট কইরা,, জিব্বা বাহির কইরা একটা ভেংচি কেটে দিলাম,,,,
মুহূর্তের মধ্যেই অই ডাইনিটা আমার ওর পায়ের নোখ দিয়ে আমার পায়ে সজোরে আঘাত করলো,,,
আমি,,,, গলা ফাটাইয়া চিতকার করে উঠলাম৷
আব্বুঃ কি বেপার কি হইছে
আমিঃ ( নিজেকে একটু সামলে নিয়ে) কই,, কিক কিছু নাতো,,,
খেয়াল সবাই আমার দিকে কেমন ভাবে যেনো তাকিয়ে আছে,,, আর রিয়ানি হারামজাদি,,,, মুচকি মুচকি হাসতেছে,,,,
কেমনডা লাগে হুম
আমিঃ কি বেপার তুমরা খাচ্চো না কেনো,,,
তারপর সবাই এক বালতি রহস্য মাথায় লইয়া,, আবারও খাওয়া শুরু করলো,,,
সবাই যখন খাওয়া দাওয়াতে,, ব্যাস্ত,,, আমিও সুযোগ বুইঝা,,,,রিয়ানিরে পাকনামির ফল টা দিয়া দিলাম,,,
সাথে সাথেই রিয়া গলা ফাটায়াঃ ও মাগো,,,
সবাই আবারও খাওয়া দাওয়া রেখে হা হয়ে আছে
আব্বুঃ আরমান কি হচ্ছে এসব,,, কখনো এ চিতকার মারছে তো,,, কখনো ও চিতকার মারছে,
রিয়ার আব্বুঃ ( মুখে হাসি নিয়ে বললো) আরে বেটা তুই খা,,, অসব কিছু না ☺
খেয়াল করলাম রিয়ার আব্বু কখনো আমার দিকে আবার কখনো রিয়ার দিকে তাকিয়েই মুচকি মুচকি হাসছে,,,,
এইরে কাম সারছে,,,,বড়ো কাকু মনে হয়,, কাহিনিটা বুইঝঝালছে
তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে ,,,আমি আমার রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ স্টাডি করে,, তারপর ঘুমিয়ে পড়লাম,,,,
দেখতে দেখতেই আমাদে কলেজ থেকে পিকনিকে যাওয়ার দিনটা চলে এলো,,,,
ভোরে কাপড় চোপড় সব গুছিয়ে রেডি হয়ে,,,,, রিয়াকে ডাক দিলামঃ রিয়া তোর হইছে?
রিয়াঃ হুম,,,, একটু দাড়া আসতেছি,, ( আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি,,, রিয়া আমার কাছে এসে) হুম চল,,,,,
আমি রিয়ার দিকে তাকাতেই,,,পোরা হা হয়ে গেছি,,,,,, রিয়া আজকে শাড়ী পরছে,,, তাও আবার ব্লেক,,,আমার পছন্দের কালারের,,,,,,আমিতো রিয়ার দিকে তাকিয়েই আছি,,,, আর বস্তার বস্তা ক্রাশ খায়ালতাছি..আর তখনি রিয়া…….
.
চলবে……!!