ঐশী আমার সামনে দাঁড়িয়ে….
— প্রপোজ করতে এসেছিস প্রপোজ না করেই চলে যাচ্ছিস। (ঐশী)
— জবাব পেয়ে গেছি তাই এখানে আমার থাকাটা আর জরুরি না, পারলে আমায় ক্ষমা করে দিস। (আমি)
— ওহ আচ্ছা, তোকে আমি ক্ষমা করবো কেন? তুই আমার কে শুনি?(ঐশী)
— আমি কেউ না হলেও তো সেই ছোটো থেকে আমাদের ফ্রেন্ডশিপ সেই ফ্রেন্ডশিপের দোহাই।(আমি)
— ওহ তাই নাকি…..! তা তুই আমাকে কিছু কথার উত্তর দে তো দেখি?(ঐশী)
— জ্বি বল (আমি)
— তুই জানিস আমার আজ বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তবুও তুই আমায় প্রপোজ কেন করতে এলি?(ঐশী)
— আমি তোকে ছেড়ে থাকতে পারবো না তাই তোকে খুব মিস করবো।(আমি)
— ওহ আচ্ছা, তাহলে ভালোবাসিস না। শুধু ছেড়ে থাকতে পারবি না তার জন্যই। বাহ (ঐশী)
— ভালোবাসি কি না জানিনা।(আমি)
এটা শুনতেই আমার থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে…
— ভালোবাসিস না তো আমার সামনে এসেছিস কেন? তুই কি চাস না আমার সংসার হোক।(ঐশী)
— জ্বি চাই তো, সেটা আমাদের দুজনের সংসার হোক।
জান্নাত একটু গম্ভীরভাবে…(আমি)
— দুজনের মানে, ওহ বুঝেছি তুই আর তোর বৌ, আর আমি আর আমার বর।(ঐশী)
আমার এখন বুকটা ফেটে যাচ্ছে কষ্টে, আমি কষ্ট পেলেই ভীষন মাথায় রাগ উঠে যায়…
— ধুর, আমি আসি বাই গুড নাইট।(আমি)
এটা বলে আমি জানালা দিকে এগোতে লাগলাম, হঠাৎ ঐশী আমায় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে….
— সংসারটা তোর আমার আর আমাদের ছোট্টো সোনাটাকে নিয়ে হবে। (ঐশী)
আমি তো চমকে গেলাম, ঐশী আমায় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে, আগে কোনোদিন এমন ফিলিংস আসেনি যা এখন আসছে। ঐশী আমার কাঁধে মুখটা রেখেছে।
— মানে কি? (আমি)
— ফিউজবক্স কোথাকার? সংসারটা তোর আমার আর আমাদের ছোট্টো বেবিটাকে নিয়ে হবে।(ঐশী)
আমি মাথা নেড়ে ওকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম….
— ছাড় আমায়, আমি পাগলামি করে এসেছি আজ, তোর দুদিন পর বিয়ে।(আমি)
ঐশী আমাকে এবার সামনে থেকে জড়িয়ে ধরে….
— এই পিচ্চি লেখক আমাকে ছাড়া একা থাকতে পারবি তো।(ঐশী)
— জ্বি মানিয়ে নিতে হবে।(আমি)
— আমায় মিস করবি না, আমার ডিস্টার্ব করা গুলো(ঐশী)
— জ্বি মিস করবো, পরে ঠিক হয়ে যাবে।(আমি)
— ওহ তাই নাকি? তুই চাস না আমি তোর বৌ হই।(ঐশী)
— না এখন আর চাই না।(আমি)
এটা শুনে ঐশী যে কান্না করছে বুঝে গেলাম কারন আমার বুকে ও মাথা রেখে আছে আর আমি বুঝতে পারছি ওর চোখের জলে আমার শার্টটা হাল্কা হাল্কা করে ভিজে যাচ্ছে।
— তাহলে কি আমার সেই ছোটো থেকে তোকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাটা আজ মিথ্যা প্রমান হলো।(ঐশী)
— মানে?(আমি)
— মনে আছে ছোটোবেলায় আমরা দুজন বর বৌ খেলতাম, তুই আমায় বৌ বলে ডাকতিস আমি তোকে বর বলে ডাকতাম। বয়সের সাথে সাথে কখন যে তোকে ভালোবেসে ফেলেছি আমিও নিজেও জানিনা, আমার প্রতিটা স্বপ্নেতে তুই আছিস। (ঐশী)
ঐশী আমাকে সেই ছোটো থেকে ভালোবাসে আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছিনা।
— তুই আমাকে ছোটো থেকে ভালোবাসিস তো আমায় বলিসনি কেন?(আমি)
আমার শার্ট একটা বোতাম নখ লাগিয়ে মুখ ফুলিয়ে….
— তোকে তো খুব ভয় লাগে তাই বলিনি যদি আমায় মারিস।(ঐশী)
আমার তো ভাই খুশির সীমানা নাই, একটা মেয়ে সেই ছোটো থেকে তাহলে আমার জন্য সিঙ্গেল, যে মেয়ে কলেজের প্রায় পোলার ক্রাশ সেই মেয়ে আমাকে এতোটা ভালোবাসে।
— এখনও মারবো তো। (আমি একটু গম্ভীর ভাবে)
— ওহ বললাম বলে, জানি তো মারবি আমায় জানি তো। নে মার।(ঐশী)
গাল ফুঁলিয়ে বলে একটা গাল পেতে দিলো।
ভাইরে আমি এখন হাসবো না কান্না করবো কিছুই বুঝতেছিনা।
ঐশী এখন মাথা নিচু করে আছে। আমি পকেট থেকে গোলাপ ফুলটা বের করে সাথে সাথে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে আমি মাথা নিচু করে…..
— will u mry me…
ঐশী সঙ্গে সঙ্গে চমকে গেলো, মনে হয় বিশ্বাসই করতে পারছে না।
তাই মুখ ঢেকে…
— কিহহহহহহহহ (ঐশী)
— আমার অনুর আম্মু বানাতে চাই আমার এই চির শত্রুটাকে। (আমি)
— আমিও আমার অনুর আম্মু বানাতে চাই যে আমাকে চির শত্রুভাবে। (ঐশী)
এটা বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার কপালে একটা আলতোভাবে চুমু দিলো। আহ সত্যিই সব ব্যথা এখন নিরাময়ের এটাই একটা ওষুধ। আমাকে ঐশী খুব জোরে চেপে ধরে আছে।
কিছুক্ষণ পর….
— এই মোটি আমার এই রোগা শরীর ছাড় না রে লাগছে এবার। (আমি)
— হুম লাগুক, এগুলা সব তোর দেওয়া কষ্টের মাসুল। (ঐশী)
— তাই।
এটা বলে আমি ওর কপালে একটা আলতোভাবে ভাবে চুমু দিলাম। ঐশী লজ্জা পেয়ে গিয়ে আবারো আমার বুকে মাথা লুকালো।
আমি ঐশীর কানের নীচে থাকা চুল গুলো ঠিক করে দিলাম, আর ওর ঘাড়ে দেখি কয়েকটা চুল এলোমেলো হয়ে আছে। আমি ঘাড়ে হাত দেওয়ার সাথে সাথে ঐশী আমাকে খামচে ধরলো, আমি এবার একটা একটা করে চুল সরিয়ে দিলাম, ঐশী আমাকে এতোটা জোরে খামচে ধরেছে যদি শার্ট না থাকতো তাহলে দশটা নখের দাগ বসে যেতো।
আমি এবার ঐশীর ঘাড়ে কাছে আমার মুখটা নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে….
— ভালোবাসি তোকে অনেক রে ঐশী।(আমি)
— আমিও তোকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি আরফান। (ঐশী)
এটা বলে ঐশী আমার কাঁধে আরো যেন একটু জায়গা নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। মেয়েটা আজ সত্যিই অনেক শান্তি পেয়েছে মনে কারন মেয়েটা আজ জমিয়ে রাখা ২০ টা বছরের মনের কথা প্রকাশ করতে পেরে। জান্নাতের চুলের ঘ্রানে নিজেকে যেন কেমন ভাবে হারিয়ে ফেলছি। বুকের ভিতর হার্টবির্টটা আস্তে আস্তে বেড়েই চলেছে একে অপরের স্পর্শ পেয়ে।
আমি এবার ঐশীর মুখটা আমার সামনে নিয়ে আসতেই দেখি ঐশীর চোখে পানী। ওর চোখে পানী দেখে আমার চোখেও কেমন পানী এসে গেলো। আমি ওর চোখের পানী মুছে…
— এই পাগলি কাঁদছিস কেন? (আমি)
— আরফান এটা কান্না নয়, এটা হলো আমার চোখের একটা ফোঁটা পানীর মুল্য তোকে পাবার একটা সুখের এক একটা মুহূর্ত।
এটা বলে আরো কান্না করতে লাগলো। আমি ওর চোখ ভালোভাবে মুছে দিলাম…
— এই দেখ আমি তো তোর সামনেই আবার কাঁদছিস কেন এভাবে?(আমি)
— খুব ভয় করছে।(ঐশী)
— কিসের ভয়?(আমি)
— তোকে পেয়েও যদি তোকে আবার হারিয়ে ফেলি।(ঐশী)
— দূর পাগলি, আমি তোরই তো শুধু।(আমি)
— কথা দে আমায় সারাটাজীবন এই কথাটাই আমাকে বলবি।(ঐশী)
আমি এবার ওর দু চোখে কিস করে….
— হুম, কথা দিলাম।(আমি)
ঐশী খুশির চোটে আমায় আবার ঝড়ের বেগে আমাকে চোখে মুখে গালে চুমু খেতে লাগলো। আর আমার গালে হাত দিয়ে…
— খুব ভালোবাসিরে আরফান তোকে।
— হুম আমিও রে। কিন্তু…..(আমি)
— কি কিন্তু…(ঐশী)
— তোর যে দুদিন পর বিয়ে….(আমি)
এটা শুনেই ঐশী আমার কান ধরে….
— ওই কুত্তা কার বিয়ে? (ঐশী)
— কার মানে তোর তুই তো বিকালে কইলি?(আমি)
— কুত্তা, আমার বিয়ে টিয়ে কিচ্ছু নয়, আমি আর ওয়েট করতে পারছিলাম না তোকে পাবার জন্য, তোর ব্রেকাপ হবার পর তুই যা মেয়েদের পিছনে ঘুরাঘুরি করছিলি তাতে আমার একদম ভালো লাগতেছিলো না যদি আবার কাউকে লাইনে এনে বৌ বানিয়ে নিস তাহলে আমার বৌ হওয়ার স্বপ্নটা নষ্ট হয়ে যেত না। তারজন্য আমি আর রেদওয়ান আর রিফাত তিন জনে প্লান করেছিলাম।
আমি এবার ঐশীর দুটা কান ধরে…..
— ওরে হারামজাদি (আমি)
— এই লজ্জা করে হবু বৌকে হারামজাদি বলতে।(ঐশী)
— তো কি বলবো হুম(আমি)
— কেন জান বলবি, বাবু বলবি, ময়না পাখি টিয়া পাখি আরো কতো কি আছে।(ঐশী)
— ওহ তাহলে কাক পাখি বলে ডাকলেও হবে তাই না।(আমি)
ঐশী এবার আমার বুকে কিল ঘুষি মেরে….
— আরফান তুই না একটুও রোমান্টিক না।(ঐশী)
— জ্বি আমি তো আনরোমান্টিক।(আমি)
— তাহলে আমার স্বপ্নে এসে এতো রোমান্টিক হতিস কেন?(ঐশী)
— তা আমি কিভাবে জানবো।(আমি)
— হুম তুই আসতিস তুই জানবি না।(ঐশী)
— উম যদি রোমান্টিক হওয়া লাগে তাহলে তো রোমান্স করতে হবে তাই না।(আমি)
— উম খুব দুষ্টু হয়েছিস দেখি।(ঐশী)
— জ্বি দুষ্টু তো সেই ছোটো থেকেই (আমি)
এভাবে কথা বলতে বলতে প্রায় রাত ১ টা বেজে গিয়েছে কখন বুঝতেউ পারিনি।
— ঐশী আমি এখন আসিরে, অনেক রাত হলো। (আমি)
— না এখন যেতে হবে না সেই ভোরে চলে যাস ছাদ থেকে। (ঐশী)
— না এটা হয় না।(আমি)
— না না না না না তুই যাবি না।(ঐশী)
গাল ফুলিয়ে বললো, আর আমার হাত ছাড়তেই চাইছে না।
— আচ্ছা। আমার কিন্তু ঘুম পাচ্ছে কোথায় ঘুমাবো? (আমি)
— কেন বেডে?(ঐশী)
— আর তুই?(আমি)
— আমিও বেডে ঘুমাবো।(ঐশী)
— না হয় না।(আমি)
— না এভাবেই স্বামী স্ত্রী ঘুমায় আর এভাবেই হয়।(ঐশী)
আমি একটু মজা করে….
— এই ঐশী কি হয় রে(আমি)
— কুত্তা তুমি জানো না নাকি?(ঐশী)
— নাহ বল না কি হয়?(আমি)
এবার ঐশী আমার সামনে দাঁড়িয়ে…
— পাগল একটা চুপ।(ঐশী)
এবার আমি বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লাম আর ঐশী পাশে, ভাইরে বৌ বৌ ফিলিংস আসছে এখন ঐশীর পাশে থাকাতে
আমি ঐশীকে জড়িয়ে ধরলাম পিছন থেকে। ঐশী এবার আমার দিকে ঘুরে….
— বিয়ের পর আমাকে প্রতিদিন এভাবে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবি, আর হ্যাঁ আমি কিন্তু বালিশে মাথা রাখবো না।(ঐশী)
— তাহলে কোথায় রাখবেন শুনি মহারানী?(আমি)
— তোকে বুকে মাথা রাখবো।(ঐশী)
— আর শোন (আমি)
— হুম বল?(ঐশী)
— বিয়ের পর কিন্তু তুই হাফ কাজ আর আমি হাফ কাজ করবো।(আমি)
— আমি পারবো না কাজ করতে।(ঐশী)
এটা বলতেই ঐশী আমার দিকে রাগী লুক দিতেই…
— না না পারবো।(আমি(
পাঠক পাঠীকাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলতেছি আপনাদের জন্য এত কষ্ট করে গল্প লিখি আর আপনারা গল্প গুলা পরে চলে যান, এত কষ্ট করে গল্প লিখেছি আর আপনার কাছে আমার এই গল্পটা কেমন লাগছে তা মন্তব্য করে কমেন্ট বক্সে জানাবেন তাহলে আমি নেক্সট পার্বতীর আগ্রহী হব, লাইক কমেন্ট না আসলে আমি নেক্সট পর্ব আপলোড করবো না
ঐশী এবার আমার বুকেতে মাথাটা দিয়ে…
— আরফান…
— হুম বল…(আমি)
— আমি ভাবছি তোকে আর তুই দিয়ে কথা বলবো না।(ঐশী)
— কেন?(আমি)
— দুদিন পর তুই আমার বর হবি তখন লোকের সামনে তোকে লজ্জিত হতে হবে তো।(ঐশী)
— বাব্বাহ ভূতের মুখে রাম নাম।(আমি)
এটা শোনার পরই আমার গাল খামচে….
— ওই কথা গুলা মজাই নিবি না।(ঐশী)
— আচ্ছা বল না।(আমি)
শালা এখনই এতো শাসন বিয়ের পরে তো দেখি আমার বাসায় রাজত্বের ভার আমার আব্বু একেই তুলে দেবে
আমি একটু মজা করার জন্য আমি ঐশী কোমড়ে হাত দিয়ে কিলবিল করতে লাগলাম, ঐশী আমার দিকে তাকিয়ে….
— হিহিহি, এই ছাড়ো না, কাতুকুতু লাগে তো।(ঐশী)
আমি এবার ঐশীর উপরে চেপে গেলাম।
ঐশীর মুখে এবার ভয়ের ছাপ প্রকাশ পেলো। ঐশীর জোরে জোরে নিশ্বাস পড়ছে, আর আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে, আমি আমার ঠোঁটের সাথে ওর ঠোঁট মিলিয়ে দিতেই ও আমার চুল গুলো দুটো হাতে মুঠি বদ্ধ করে জোরে চেপে ধরলো। ঐশী এখন পুরাই কাঁপাকাপি শুরু করে দিয়েছে। এবার ঠোঁট ছেড়ে আমি ঐশীর বুকের দিকে হাত নিয়ে যেতে লাগলাম আস্তে আস্তে করে, ঐশীর আরো থরথর করে কাঁপুনি শুরু হয়ে গেলো, ঐশী চোখ বন্ধ করে কি যেন বলছে? আমি এবার হাত দুটোকে নীচের দিকে টেনে নাভীতে হাত দিলাম। সাথে সাথে ঐশী আমাকে জড়িয়ে ধরলো বুঝলাম ঐশীর উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। আমি এবার ঐশীর কপালে একটা করলাম, ঐশী আমায় খামচে ধরে আছে সাথে আমার বুকে মাথা গুঁজে কি যেন ভয়ে ভয়ে বিড়বিড় করছে। জান্নাতের হার্টবির্ট ধুকধুক করে আরো স্পিডে চলছে।
নেক্সট পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন সবাই আগামীকালকে নেক্সট পর্ব দেওয়া হবে