আমি আবার ফোন করলাম কিন্তু মহারানী তুললো না প্রায় ৮বার ফোন করার পর ফোন রিসিভ করেই…….
রিদি:- কি হলো আমায় ফোন দিয়েছো কেন? যাও না তার সাথে কথা বলো যাকে তুমি ভালোবাসো (রেগে রেগে)
আমি- আমি কাকে ভালোবাসি দেখতে চাও।
রিদি:- না চাই না।
আমি- কেন?
রিদি:- জানিনা।
আমি: তাই, তোমার রুমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়াও যাকে তুমি আয়নায় দেখতে পাবে তাকে আমি ভালোবাসি।
(এই গল্পের মধ্যে ফারিয়া নামের কেউ নাই, এইটা গল্প লেখার সময় ভুলে নামটা উঠে গেছে, ফারিয়া নামের জায়গায় রিদি হবে)
এই কথাটা শোনা মাত্রই রিদি অভিমানের সুরে…
রিদি:- ভালো।
আমি: জ্বি আমি তো অনেক ভালো তুমি জানো না।
রিদি:- ওই আমি কখন বললাম তুমি ভালো।
আমি- এই তো বললা যে তুমি ভালো।
রিদি এবার হেসেহেসে…..
রিদি:- এই তুমি এমন কেন? কিছুক্ষন রাগ অভিমান করেও থাকতে দেবে না নাকি?
আমি- উহু রাগ অভিমানী মুখটা দেখলে যে আমি বড্ড কষ্ট পাবো।
রিদি:- কেন?
আমি: তুমি রাগ অভিমান করলে কষ্ট পাবা তারজন্য।
রিদি:- তাই, এতো ভালো লাগে আমায় তোমাকে।
আমি- তুমি আমার ভালো লাগা নয় তুমি আমার বুকের ভালোবাসা।
রিদি এবার জোরে একটা শ্বাস ফেলে….
রিদি:- তাই…..
আমি– জ্বি।
রিদি:- ঘুমাবে না….
আমি: না ইচ্ছে করছে না।
রিদি: কেন?
আমি- তোমার ভয়েস কানে এলে যে ঘুমটাও বলে আগে বুককে একটু শান্তি দিই তারপর না হয় মাথাকে শান্তি দেবো।
রিদি:- হাহাহা তাই।
আমি- জ্বি, বুকের বামপাশে মাথাটা যদি কখনো রাখো বুঝতে পারবা এই পাগলটা তোমার ভালোবাসা পেতে কতখানি পাগল।
রিদি:- তাই।
আমি: রিদি….
রিদি: হুম….
আমি- আমি তোমায় দামী রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেতে পারবো কিনা জানিনা, তবে কথা দিচ্ছি তোমায় নিয়ে রাস্তার মোড়ে ফুচকা দোকানে নিয়ে যাবো, তোমার যদি ঝাল লাগে আমি তোমার ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে তোমার মুখের ঝাল দূর করার চেষ্টা করবো,,,,,,,,,,
ভাইরে রিদি তো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে কথাটা শোনার পর
রিদি এবার হাসতে হাসতে…
রিদি:- উম, ফাজিল একটা শুধু কিভাবে দুষ্টামি করবো তার উপায় বের করবা তাই না।
আমি- হিহিহিহিহি।
রিদি:- তা আমার দায়িত্ব নিতে পারবা তো আমি কিন্তু অনেক রাগী।
আমি: জ্বি পারবো তোমার রাগ অভিমানের দায়িত্ব ছাড়াও তোমার শাড়ির কুচি ধরার দায়িত্বটাও নিতে রাজি আছি, শুধু তুমি আমায় মাঝে মাঝে একটু চান্স দিও দুষ্টামি করার,,,,,
রিদি:- তাই নাকি।
কিছুক্ষন পর আমি বুঝলাম…
__রিদি কলে থেকেই ঘুমিয়ে পড়েছে, ওর শ্বাস প্রশ্বাস গুলো আমি শুনতে পাচ্ছি। আমিও কানের কাছে ফোন রেখে ওর প্রতিটা শ্বাসপ্রশ্বাস গুলো ফিল করার ট্রাই করছি। প্রতিটা বারেবারে এসে আমাত বুকে ধাক্কা মারছে হিমালয়ের বুক থেকে শীতল বাতাস বয়ে আসার মতো।
__আমার প্রতিটা লোমকূপ কেঁপে উঠছে বারেবারে, ফারিয়াকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন বুনছি এখনো। ওকে আমি রানী করে রাখবো আমি দুনিয়ার সব সুখ এনে ওর সামনে তুলে ধরবো।
_আমিও এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি কোনো খেয়ালই নেই।
সকালে উঠলাম পাগলিটার ফোনের রিং এর শব্দে…..
রিদি:- এই উঠো
আমি- উম আর একটু ঘুমাই।
রিদি: না ঘুমানো লাগবে না, আজ না…
আমি- আজ না মানে কি?
রিদি:- আজ তুমি আমায় প্রপোজ করবা বলেছিলে তাই না…
আমি ঘুমের ঘোরে….
আমি- উম আজ না, কাল, ঘুম পাচ্ছে খুব…
_এটা বলেই আমি ফোন বালিশের পাশে ফেলে দিলাম, কিছুক্ষন পর আমার ঘোর কাটতেই মাথায় এলো এইরে আমি রিদিকে এসব কি বললাম। আমি ফোনটা হাতে নিতেই এবার ম্যাসেজ দিয়েছে এরকম…
রিদি:- কুত্তা তুই যদি প্রপোজ করিস আমায় তুই দেখে নিস তোকে অফিস থেকে তো দূর করবোই আর তোর জন্য আমার মনে যে জায়গাটা ছিলো সেখান থেকেও,,,,,,,,
আমি- এই সরি, আমি ঘুমের ঘোরে উল্টাপাল্টা বকে ফেলেছি,,,,,,,
_কোনো রিপ্লাই এলো না ভাই ম্যাসেজের। আমি এবার কোনোরকম ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট না করেই রিদিদের বাসায় এলাম। বাসার দরজা খুলতেই টাকলুকে দেখতে পেলাম, দূর থুক্কু শ্বশুর আব্বা। টাকলু বললে ভালো দেখায় না, যতোই হোক আমার শ্বশুর তো।
টাকলু আমায় দেখে….
রিদির আব্বু:- কি চাই? (রেগে রেগে)
আমি- আপনার মেয়েকে চাই।
রিদির আব্বু: আমার মেয়েকে মানে (রেগে রেগে)
আমি- না না চাই ওনার সাথে একটু দেখা করতে চাই।
রিদির আব্বু:- ওহ আচ্ছা, ভেতরে আসো।
আমি এবার সাইড কাটিয়ে যাবো ঠিক তখনই ধমক দিয়ে…
রিদির আব্বু:- এই দাঁড়াও…
যাহ শালা কি হলো ব্যাপারটা
আমি- জ্বি বলুন….
রিদির আব্বু:- কি তোমার শরীরে দুর্গন্ধ? বাবা তুমি কয়দিন গোসল করোনি,,,,,,
_ভাইরে আমি তো পুরাই ফাঁইসা গেলাম রে। শালা মান ইজ্জতের পুরা ফালুদা হয়ে গেলো।
রিদির আব্বু: ধুর কি বলেন আঙ্কেল, আমি তো এই বাসা থেকে গোসল সেরে আসছি।
রিদির আব্বু:- না বাবা তুমি আগে গোসল করে আসো তারপর আমাদের বাসার ভেতরে ঢুকবা,,,,,,
_এটা বলেই আমায় বের করে দিলো বাসা থেকে।
কি হারামী মাইরি, গোসল করি নাই বলে বাসায় ঢুকতে দেবে না, দাঁড়াও টাকলু, আমি বাসায় গিয়ে আজ টানা ঘন্টা গোসল করে এখানে আসবো এই অপমানের শোধ নিতে,,,,,,,,,,
__আমি এবার বাইকে চাপতে যাবো ঠিক তখনই রিদিকে আমি ছাদের একটা কর্নারে দেখতে পেলাম, ওর চোখ আমার দিকে পড়তেই ও সরিয়ে নিলো। আর ভেতরে দিকে চলে গেলো। ওকে বাসার বাইরে আনতেই হবে, আর আনার নিঞ্জা টেকনিক এই পিচ্চি পণ্ডিতের মাথায় ভরপুর,,,,,,,,
আমি ম্যাসেজ দিয়ে….
আমি- পেত্নিরা কিন্তু ঠিকই সবসময় ছাদেই ঘোরাফেরা করে আবার কখনো কখনো গাছেতেও।
ভাইরে সাথে সাথে রেগে ছুটে এসে আমার বাইকে থাকা অবস্থাতেই কলার ধরে…..
রিদি- কিহহহহহ যাতা বলছিস হুম আর কি চাই।
আমি- তোমাকে।
রিদি- তোমাকে মানে
আমি: জ্বি তোমাকেই তো চাই, লুডোর কার্ডে ছক্কার গুটিটারই তো বেশি দাম,,,,,,,
রিদি- মানে কি?
আমি- না মানে লুডো খেতে হলে তো উম বুঝতেই পারছো।
রিদি আরো আমার কলারটা চেপে ধরলো…..
রিদি- বুঝতেই পারছো মানে কি হুম?
আমি- আরে এতো রাগ দেখাচ্ছো কেন?
রিদি- তো কি করবো?
আমি- একটা দুটা কিসও তো করতে পারো নাকি, ভালোবেসে না হোক রাগেই করো,,,,,,,
_ভাইরে রিদি আরো রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে, গালগুলো ফুলে গেছে আর লাল টুকটুকে হয়ে গেছে। আমার দিকে কড়াচোখে….
রিদি- খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু….
আমি- নাহহ খারাপের মাঝে একটু ভালো হওয়া উচিত।
রিদি আর না পেরে মাটিতে একটা লাথি মেরে….
————–চলবে না দৌড়াবে————–