অফিসের বস যখন রোমান্টিক বউ পর্ব-০৯


আমি মোবাইল বের করে গালে চাপড়াতে চাপড়াতে ভাবতে লাগলাম 143 এর মানে কি? আমি তো জানিনা তারমানে আমি আজ এই অফিস থেকে বরখাস্ত হবো। না এভাবে আমায় হারলে চলবে না।

_ক্যান্টিনে সবাই বসে গল্প করছে কেউ বা প্রেম করছে। সবাই যে যার মতো বিজি, কোনো টেবিলও খালি নেই সব কাপল দেখি। আমি চারিদিকে ঘুরে ঘুরে দেখলাম অবশেষে তিন নাম্বার টেবিলটাতে একটা সিংগেল মেয়ে বসে আছে। আমি এবার ওই টেবিলটার কাছে গিয়ে….
আমি: বসতে পারি।
মেয়েটা: জ্বি বসুন।
আমি এবার বসলাম, মেয়েটার দিকে হাল্কা হেসে….
আমি: আমার একটা হেল্প করবেন?
মেয়েটা:- জ্বি যদি করার মতো হয় অবশ্যই করবো।
আমি: 143 এর মানে কি?
মেয়েটা রাগী লুক দিয়ে….
মেয়েটা: মেয়েদের ইফটিজিং করছেন,,,,

যাহ শালা এটা আবার কেমন কথা, সামান্য একটা ক্লু জানতে চাইলাম তাতে নাকি আমি ইফটিজিং করছি।
আমি: কই ইফটিজিং করছি।
মেয়েটা: তাহলে 143 143 করছেন কেন?
আমি: না মানে আমায় একজন বলেছিলো এর মানে কি সেটা জেনে আস্তে, একটু বলে দিলে ভালো হতো।
মেয়েটা: অসহ্য ছেলে একটা, ছি (রেগে রেগে)

_এটা বলেই মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
শালা যেভাবে হোক আমার চাকরি বাঁচাতেই হবে, অপমান সহ্য করেও আজ জানতেই হবে। আমি হাল্কা হেসে….
আমি:- আমি খারাপ ছেলে নয়।
মেয়েটা:- আমার জানা আছে আপনাদের মতো সব ছেলেরাই মেয়ে দেখলে উথলে পড়ে।
আমি:- ওহ হ্যালো কোনো কোম্পানীর দুধ নয় ওকে যে উথলে পড়বো (আমিও উল্টা রেগে গিয়ে বললাম)
মেয়েটা এবার…
মেয়েটা:- আপনার সাহস তো কম নয় একটা মেয়ের সামনে এভাবে ব্যবহার করছেন।
আমি: আপনাকে তো কোনো এনগেল থেকে দেখে আমার মেয়ে মনে হচ্ছে না।
মেয়েটা এবার টেবিল চাপড়ে……
মেয়েটা: সাট আপ (রেগে রেগে)

এই শালা মেয়ে তো আগুন হয়ে গেছে রে, কি বলতে কি বলে ফেলেছি। যাহ,,,,,,

আমি- আরে আপনি তো মেয়ে নন আপনি তো পুরাই পরি।
মেয়েটা এবার চুল হাত দিয়ে ভাব দেখিয়ে…..
মেয়েটা: আপনাদের মতো ছেলেদের আমি খুব ভালোভাবে চিনি বুঝলেন তো।
আমি: জ্বি না চিনলেও তো আপনাকে সবাই চেনে যা আপনার রূপের ঝলক। আচ্ছা আপনার লিপস্টিকটা খুব দামী তাই না বেশ সুন্দর লাগছে আপনার ঠোঁটে।
মেয়েটা- জ্বি, আড়াই হাজারটাকা দাম নিয়েছে।

এহহহহহ, শালা রাস্তার পাশে বসা পাঁচ টাকার লিপস্টিককে এতো টাকা দাম বলছে। কিছু মেয়ে এমনিই হয়। দাঁড়া মেয়ে তোকে দেখাচ্ছি মজা, তোরে আজ আমি পাম দিয়ে উগান্ডা উড়িয়ে পাঠিয়ে দিমু।
আমি: তাই নাকি
মেয়েটা- জ্বি
আমি- আচ্ছা আপনার ঘড়িটা মনে হচ্ছে স্পেন থাকা আনানো তাই না, খুব দামী দেখে মনে হচ্ছে খুব সুন্দর।
মেয়েটা আবার ভাব দেখিয়ে…..
মেয়েটা: ইয়েস।
আমি: গুড, আপনি কি ক্রিম খান?
মেয়েটা: না কেন?
আমি: তাহলে এতো সুন্দরী কিভাবে?
মেয়েটা: জ্বি আমার এটা নেচারেল বিউটি
আমি: ওমা তাই, রাস্তায় যখন বের হবেন একটা বোরখা ঢাকা নিয়ে বের হবেন আপনাকে দেখে যে কেউ ক্রাশ খেয়ে যেতে পারে আর তাতে আপনারই বেশি প্রব্লেম হবে।
মেয়েটা হাল্কা হেসে….
মেয়েটা: হাহাহা তাই।
আমি: আচ্ছা, আপনি মডেলিং করেন না।
মেয়েটা- জ্বি না তবে ইচ্ছা আছে।
আমি: আপনাকে সত্যিই মডেলে হিট লাগবে, বিশ্বাস করেন।
মেয়েটা: তাই

শালা মেয়ে মনে হচ্ছে পটে গেছে এবার না হয় ক্লুটা জেনে নেওয়া যাক।
আমি: আচ্ছা এবার তো বলুন 143 এর মানে কি?
মেয়েটা হাল্কা হেসে….
মেয়েটা- i hate you…
আমি- কিহহহহ (অবাক হয়ে)
মেয়েটা- জ্বি আই হেট ইউ।

_এটা বলেই মেয়েটা চলে গেলো, যাহ শালা এটা সত্যি নাকিরে। তারমানে রিদি আমাকে লাভ করে না হেট করে তারমানে ওর হাসিটা অন্য কারোর জন্য আমার জন্য না। আমি আবারো আর একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম সেও বললো আই হেট ইউ। যাকে জিজ্ঞাসা করলাম সেও আমাদের কোম্পানীতেই কাজ করে নাম নাকি তার সুমনা, বেশ সুন্দরী। বাট রেগে কথাটা বলে চলে গেলো।

__আমি আমার অফিস রুমে এসে বসে আছি গালে হাত দিয়ে, কাজে মন বসতে চাইছে না। রিদি আমায় কেন আই হেট ইউ বলবে মানে কি? তবে বস আমিও এতো সহজে ছেড়ে দেওয়ার বান্দা নয়।

আমি রিদির কেবিনে না গিয়ে নিজের কেবিনে বসে বসে। লাঞ্চ টাইমেও বসে আছি আমি যেভাবে বসে ছিলাম।
আমি মন দিয়ে কাজ করছি এখন। এখন গেটে নক দিয়ে….
আমি- may i coming ….
আমি মাথা তুলতেই দেখি রিদি,
আমি হাল্কা হেসে….
আমি:- আরে আপনারই তো অফিস তাহলে আপনি পারমিশন চাইছেন।

রিদি এবার হাসতে হাসতে এলো আমার সামনে। টেবিলে হাত দুটো রেখে ঝুঁকে আমার দিকে….
রিদি: ওই লাঞ্চ করবা না,,,,,,,
আমি- না আজ করবো না আপনি কখন করবেন?
আমার দিকে রিদি আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে….
রিদি:- এই তুমি আমায় আপনি বলছো কেন? (একটু রেগে গিয়ে বলল)
আমি- পর করে দিয়েছে একজন তাই তাকে এখন তুমি দিয়ে বলতে ভয় করে।
এটা বলেই আমি মাথা নিচু করে রইলাম।
রিদি আমার চেয়ার পাশে এসে….
রিদি: কে পর করসে তোমায়? তুমি একবার নামটা বলো আমি তাকে খুন করে ফেলবো।
আমি রিদির চোখের দিকে তাকিয়ে…..
আমি: নিজেকে খুন করতে পারবেন।
রিদি: মানে?
আমি: কিছু না আপনি গিয়ে লাঞ্চ করে নিন।

__আমি এবার কেবিন থেকে বেরিয়ে চলে এলাম। রিদি কিছুক্ষন টেবিলে ঝুঁকে কি যেন ভেবে বেরিয়ে গেলো আমার কেবিন থেকে। আমি আবারো ঢুকে কাজ কর‍তে লাগলাম। লাঞ্চ টাইম শেষ হওয়ার পর রিদি আমায় বারেবার বেল টিপে ডাকছে আমি যাচ্ছি ও একটা একটা করে এটা ওটা কাজ করাচ্ছে। আমি আবারো ফিরে আসছি কেবিনে। চেয়ারে বসা মাত্রই আবারো বেল। আমি আবারো যাচ্ছি আবার একটা কাজ বলছে ফাইল খুঁজে পাচ্ছে না, পেন খুঁজে পাচ্ছে না অথচ সামনে তার সব কিছু আছে। আবারও আমায় ডাক দিলো আমি অফিসে ঢুকে….
আমি- জ্বি বলুন ম্যাম।

রিদির চোখগুলো কেমন লাল টকটকে হয়ে গেছে, আমি ইগ্নোর করে….
আমি: কি হলো বলুন? (আমি)
রিদি: বসো।
আমি: না ম্যাম বসলে হবে না, কাজ আছে তো ওগুলো সারতে হবে তো।
রিদি রেগে…
রিদি:- i said sit down (রেগে রেগে)
আমি ভয় পেয়ে বসলাম।
রিদি আমার দিকে না তাকিয়ে……
রিদি এভাবে ইগ্নোর করার মানে কি?
আমি: কই ইগ্নোর করছি না শুধুমাত্র আপনাকে ডিস্টার্ব করা অফ করে দিলাম আজ থেকে।
রিদি:- কেন ডিস্টার্ব করবা না তুমি?
আমি: চাই না কারোর মিথ্যা মায়ার শহরে ঢুকে স্বপ্ন দেখতে।
রিদি:- মিথ্যা মায়া মানে, আমাকে ডিস্টার্ব করেছো তুমি আর আমার মনটাকেও, এখন আমি কি করবো?
আমি- যেটা করার সেটা তো আপনি কালই বলে ফেলেছেন 143, মানে আই হেট ইউ।

এটা বলার সাথে সাথে রিদি আমার দিকে ঘুরে…..
রিদি:- কিছু জিনিস ইঙ্গিতে বোঝানো হয় যেটা সবাই পজেটভলি নিতে পারে না।
আমি হাল্কা হেসে মাথাটা নামিয়ে…..
আমি:- যদি আমায় এবার চাকরি খেতে বরখাস্ত করতে চান তো করতে পারেন অবশ্য বিনা ইন্টার্ভিউতে এই জবটা আমি পেয়েছিলাম।

রিদি মুখে পেন কামড়াতে কামড়াতে আমার সামনে এলো হাঁটে হাঁটতে, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমার চুলের মুঠিটা ধরে….
রিদি: তোমার কোন জিনিসটা বেশি প্রিয়?
আমি- মানে কি জব ছাড়াবেন আপনি আমায় ছাড়ান আমার প্রিয় কি জিনিস বা কোনটা সেটা জেনে আপনার লাভ কি?

এটা বলতেই রিদি কেমন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে দিলো আমার সামনেই।

আমি রিদিকে….
আমি- ম্যাম আপনি চুপ করুন।
(এই গল্পের মধ্যে ফারিয়া নামের কেউ নাই, এইটা গল্প লেখার সময় ভুলে নামটা উঠে গেছে, ফারিয়া নামের জায়গায় রিদি হবে)
এটা বলেই আমি বাইরে চলে এলাম। আমি আমার কেবিনে গিয়ে আঙুল মুখে নিয়ে বসে আছি। ভালো লাগছে না। মোবাইল বের করে ফেবুতে লগ ইন দিলাম, আমার ফ্রেন্ডলি একটা গ্রুপ আছে সেটাই দেখি অনেক গুলা ম্যাসেজ আসছে আমি এবার সেগুলাকে পড়তে লাগলাম, হঠাৎ একজায়গায় আমার চোখটা থেমে গেলো 143 দেখে, রিপ্লাই দিয়েছে আমার একটা ফ্রেন্ড লাভ ইউ টু বাবু। আবার মেয়েটা 143 আমার সোনাটা।
আমি মাথা খোঁচাতে খোঁচাতে দেখছি, তারমানে 143 এর মানে আই লাভ ইউ, রিদি আমায় লাভ করে।ওমাগো। আমি এবার ছুটে রিদির কেবিনে গিয়ে ওকে কোলে তুলে নিয়ে ঘুয়াতে লাগলাম,,,,,

হঠাৎ কে যেন চিৎকার করে……
লোকটি- স্টপিড, এটা অফিস কোনো পার্ক না।
আমি এবার রিদিকে নামাতেই দেখি এহহহ এহহহ এহহহহ তো রিদির আব্বু। যাহ শালা মাত্র পৌষমাস এলো, আর সাথে সাতেই সর্বনাশ।
রিদি আর আমি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছি।

————–চলবে না দৌড়াবে————–

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *