এক খান চুম্মা দে
কারেন্ট লাগাইলি
দুইখান চুম্মা দে
বোল্টিজ বাড়াইলি
তিনখান চুম্মাআআআআআআআআ
—ঠাসসসসসসসস ঠাসসসসসসসসসসস,
ফাজিল ছেলে!মাইয়া দেখলেই লুইচ্ছামি করতে মন চায়,আরেকবার যদি এমন করতে দেখি,একেবারে চোখ তো তুলে নিবোই,আর চাপার দাঁত একটাও চাপায় থাকবে না৷
লুইচ্চা কোথাকার।
–কথাগুলো বলেই মেয়েটা চলে গেল৷
কি ভাবছেন?কার সাথে এমন করেছে?আর কেন এমন করছে?তাহলে সব খুলেই বলি!
.
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখি লুঙ্গি ঠিক নাই৷তাড়াতাড়ি লুঙ্গি খুজে বের করলাম তারপর লুঙ্গি ঠিক করলাম৷ভাগ্য ভালো আমার রুমে আমি একাই থাকি,নাহলে প্রতিদিন ৩৬বার মান সম্মান ডুবে প্লাস্টিক হয়ে যেত৷যাই হোক তারপর হাতে ব্রাশ নিয়ে ব্রাশ করতে করতে বাইরে গিয়ে মনের সুখে গান গাইতে লাগলাম৷তারপর তো সব দেখলেনই৷
এই মেয়েটাকে আমি আগে কখনও দেখি নাই৷আর যখন গান বলছিলাম তখনও দেখিনি৷আর গান গাওয়ার পর দাত ব্রাশের সাথে মেয়েটার থাপ্পরটা ফ্রি পেলাম৷
এটা মানতে পারলাম না,অপরাধ না করে এমন থাপ্পর৷
আর তখনই পিছন থেকে এক হারামীর আগমন।
.
–কিরে মামা,প্রপোজ করছিলি নাকি?এমন কসাইয়া দুইটা মারলো?(সাকিব)
–আরে শালা,তোর এই বন্ধুর থুক্কু তোর এই বসের চেহারা কি এতই খারাপ নাকি ?যে ওই বান্দনির মত মেয়েকে প্রপোজ করমু?(আমি)
–তাহলে মারলো কেন?
–আর বলিস না,গান গাচ্ছিলাম তাতেই এমন!
–মামা ,সাবধানে থাকিস,বড়লোকের একমাত্র মেয়ে,বড্ড রাগি,এই এলাকায় বেড়াতে এসেছে৷সাবধান
–ধূরর কি যে বলস,তোর এই কিউট বন্ধুটা ওইরকম বান্দরনির সাথে????হাসাইলি৷আচ্ছা আমি বাসায় যাই,মুখ ধুইয়া খাইতে হইব৷
বলেই বাসায় চলে আসলাম৷ঘরে আসতে না আসতেই বাবা বলা শুরু করল
.
–এই যে নবাবের পোলা,কাম কাইজ কর এইবার,ঘুইরা ঘুইরা আর কয়দিন খাবি?(বাবা)
–বাবা,তুমি চিন্তা কইরো না,খালি একটা বিয়া কইরা লই,তারপর দেইখো আমি কি কি করতে পারি(আমি)
তখনই পিছন থেকে আওয়াজ আসল.
–কি বললি হারামজাদা?বিয়ে!!!খাড়া তোরে বিয়ে করাইতাছি(মা)
.
পিছনে তাকাইয়া দেখি,মায়ের হাতে পিছা,আর পিছা দিয়া নাকি আমার বিয়া করাইবো৷
মা পিছা নীয়া আসার আগেই৷দিলাম ভো দৌড়, খাওয়া আর কপালে জুটলো না৷
কোন বান্ধরের মূখ দেইখা আজ ঘুম থেকে উঠলাম৷হঠাৎ মনে হলো আজ তো সর্বপ্রথম ওই মাইয়ারেই দেখছি যে আমারে মারছে৷তার মানে ওই মাইয়া আমার আলক্ষি৷ওর সামনে আর যাওয়া যাইবোনা৷মনডায় কইতাছি দুইডা চড়ের বদলে ৪টা দিয়ে আহি৷ইসসসস একটা কথা তো ভুলেই গেছি,আমি তো এখনও আমার পরিচয় দেই নাই,পরিচয় আর কি দিমু?গ্রামের সহজ সরল,একদম ভদ্র একটা পোলা৷বাবা মা সখ কইরা নাম রাখছে আরমান ৷কিন্তু এলাকার সবাই কেন জানি ফাজিল আর শয়তান বলেই ডাকে৷বুঝিনা কেন যে তারা এমন করে?,
.
যাই হৌক বাসায় গেলাম দুপুরে আর তখনই আম্মু ডাক দিল
–তুই খাবিনা(মা)
–হুম খামু৷ভাত দাও
খাওয়া দাওয়া করে৷বাইরে গেলাম খেতে৷বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম৷হঠাৎ কেউ একজন বলে উঠল
–দোস্ত,আসাদ কাকার বাড়ির পিছনের পেয়ারা গাছে অনেক বড় বড় পেয়ারা হইছে,চল খাই গিয়া
–আরে শালা,তুই আগে কস নাই কেন৷চল এখনি খামু
.
এইযে আপনারা আবার ভাববেন না,নিজের কাকার গাছের পেয়ারা খামু৷গ্রামের নামধারি কাকা এগুলো৷আর পেয়ারা তো খামু চুরি কইরা৷
যেই ভাবা সেই কাজ৷গাছের পেয়ারা এক রাতেই শেষ করে দিলাম৷কেউ দেখে নাই৷কিন্তু সমস্যা একটাই গ্রামে কারও গাছের,কারও মুরাগীর ঘর থেকে মুরগী হারিয়ে গেলেই আমারে সবাইরে ধরে৷তো বুঝেনই হারামি বন্ধুগো লগে থাইকা কত্ত কিছু করি৷আজ এই বাড়ির গাছের ডাব,পরশু অন্য বাড়ির মোরগ,আবার পরের দিন অন্য বাসার এই ফল ওই ফল নাই হয়ে যায়৷আমার কিন্তু একটুও দোষ নাই,সব দোষ রনি,সাকিব,আসিফ আর হৃদয়ের৷কারও গাছের কিছু দেখলেই প্লান করে৷
যাই হোক আমি কিন্তু চোর না,বুঝেছেন?
তো ওই দিন পেয়ারা খাবার পর রাতে বাসায় যাবো.তখনি ঘরের ভিতর থেকে আওয়াজ আসলো.
,
–হারামজাদা,কুলাঙ্গার,তুই খালি আইজকা বাসায় আয়,তোর একদিন আর আমার যে কয়দিন লাগে(বাবার কন্ঠ)
–ওরে তো বসাইয়া বসাইয়া খাওয়াই ই,ওর একটা পা ভেঙ্গে ফেলো,আর মানূষের গাছে উঠতে পারবেনা(মায়ের কন্ঠ)
.
–আল্লাহ,কোন পাপে এমন শয়তান পোলা আমার ঘরে দিছো?আমার দাদাও মুন্সি ছিল,আমার বাবাও মুন্সি,আমিও মুন্সি,আর আমার ঘরে এইডা কি দিলা আল্লাহ,পুরো গ্রামের ভিতর ওর মত একটা ফাজিলও নাই,জরিমানা দিতে দিতে আমি ফকির হইয়া যামু.
.
বাইরে থেকে এগুলো শুনেই বুকটা ধুরু ধুরু করতে লাগল৷
বাসায় ডুকমু কেমনে?
তখনই বাসার পিছন দিক দিয়া জানালার কয়েকটা রড খুললাম৷যেই ডুকতে যাবো ওমনি.
.
–ও মা রে!কোন শালার পুত রে,কান ছাড় কইতাছি(অন্ধকারে কিছুই দেখতে পাইলাম না)
.–আমি শালার পূত????হারামজাদা তোরে আজকে বুঝামু শালার পুত কত খারাপ মানুষ।
(হায় আল্লাহ!বাবার কন্ঠের মত লাগতাছে কেন?বাবা নয়ত?)
তখন কানে টানতে টানতে জানালা থেকে বের করল৷আর বের করার পর ই দেখলাম৷এটা তো বাবা,আর মা আর বাবা মিলে আমার হাত পা বেধে ফেলছে৷আর তখনই বাবা বলা শুরু করল
,
–হারামজাদা,তোরে আইছকা লুলা বানামু,তোর জালায় আমি সমাজে মুখ দেখামু কেমনে?কেউ আমারে এখন পছন্দ করেনা৷শুধু তোর লাইগ্গা এগুলো হইছে(বাবা)
.–দেখো, বাবা একদম উল্টা কথা বলবানা,সমাজে তোমারে কেন পছন্দ করব?তুমি কি আবার বিয়া করবা নাকি? যে সবার পছন্দ করা লাগবো(আমি)
.–ঠাসসসস ঠাসসসস,হারামজাদা,তোর মুখে কি কিছু আটকায় না
.
–মাগো,ও মা,তোমার মাছুম নিষ্পাপ পোলাডারে এমনে বাইন্দা মারতাছে তোমার কি মায়া লাগেনা৷?.
.–হারাম জাদা তুই নিষ্পাপ?তোর মত রামছাগল একটাও এই এলাকায় নাই(বাবা)
.–পোলা রামছাগল হইলে বাবাও ,রামছাগল
.–আরমান খুব বেশি করে ফেলছিস কিন্তু,ফাজিল কোথাকার,আদর করি বলে কি তুই মাথায় উঠে পরছছ নাকি?(মা)
.–আমি আর এমন করমু না,শুধু আমারে একটা বিয়া করাইয়া দাও,এই শীতে একলা থাকতে খুব কষ্ট হয়
কথাটা একটু হাসানোর জন্য বলেছি,কারন আমি এটা বললেই বাবা,মা হেসে উঠে আর নতুন করে আড্ডা দেওয়া যায়৷কিন্তু বলার সাথে সাথেই
.
–ঠাসসসসসসসস,হারামজাদা তোরে কিন্তু এখন খুন কইরা ফালামু৷তুই এখনি আমার বাড়ি থেইকা বের হয়ে যাবি,যদি তোর বিন্দু পরিমানও লজ্জাবোধ থেকে থাকে,তাহলে এই মুহুর্তে বাসা থেকে বের হ,তোর মত কুলাঙ্গার পোলা আমার না থাকলে কোনো প্রবলেম হইবো না৷
হয় তুই এই বাসায় থাকবি নয়ত আমি?আর তুই এখান থেকে না গেলে আমি পরপারে চলে যাবো৷
.
বলেই বাবা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেল৷ঠিক তখনই মাথাটা কেমন জানি হয়ে গেল৷আমিও রাগের বসে জামা কাপড় নিয়ে বের হয়ে গেলাম৷মা অনেক আটকানোর চেষ্টা করেছিলো৷কিন্তু একটূও শুনলাম না৷বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম৷থাকব না আর এখানে৷সাথে যে কতগুলো টাকা ছিল৷ওই গুলো নিয়েই রাতের বেলাই শহরের দিকে রওনা দিলাম৷
বাসে উঠলাম”গাড়ি তার আপন গতিতে যাচ্ছে আর তখনই ভাবতে লাগলাম,
,,আসলে আমার যত বন্ধুই থাকুক না কেন?বাবা ছিল আমার সব চাইতে বড় বন্ধু,প্রতিদিনই বাবার সাথে এমন অনেক মজা করি৷আর বাবাও আমার সাথে অনেক মজা করে৷আর অনেক ভালোও বাসে৷কারন আমার আগে আমার আরও ৬টা ভাই মারা যায়,আর তারপরই আমি হলাম৷আর সেই থেকে অনেক আদরের সাথে বড় করে তুলেছে৷কিন্তু আজ হয়ত অনেক বেশিই করে ফেলেছি৷যার কারনে বাবা অনেক রাগ করেছে৷বাসে বসে বসে ভাবছিলাম৷কেন এত কিছু করি?ভাবলাম বাযায় ফিরে যাই কিন্তু পরক্ষনেই মনে হলো এমনিতেই বাবাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি,আর এখন বাসায় থাকলে বাবা নিজেকে শেষ করে দিবে৷না আমিই অনেক দূরে চলে যাবো৷আর যেদিন ভালো হতে পারব সেদিনই আবার ফিরে যাবো৷
পরেরদিন দুপুরে একটা নতুন শহরে পাড়ি জমালামা৷কাউকে চিনিনা৷শুধু মানুষ আর মানুষ,ঠিক তেমন প্রচুর বাযা আর গাড়ি৷
হোটেলৈ ডুকে কিছু খাবার খেলাম৷
দেখলাম পকেটে কয়েক হাজার টাকা আছে,এগুলো দিয়া ১০-১৫দিন চলতে পারবো৷তারপর কি করবো?তখনই ভাবলাম কাজ করবো৷শুরু করলাম কাজ খোজা৷আর ফোন টা তখন বন্ধ করে রেখেছি৷যেন বাসা থেকেও ফোন দিতে না পারে৷সারাদিন ঘুরলাম৷কোনো কাজ পেলাম না৷রাতের বেলা থাকার জন্য একটা হোটেলে ডুকলাম৷এক রাতের জন্য ৫শ টাকা৷শুনেই মাথায় আগুন ধরে গেল৷বলে কি একরাত থাকবো ৫শ????
আর আমাদের গ্রামে তো ৫শ টাকা হলে সারামাসই থাকা যায়৷উপায় না পেয়ে থাকতে হলো৷পরেরদিন সকাল বেলা আবারও কাজ খুজতে লাগলাষ৷ কিন্তু পেলাম না
৷এভাবে ৭দিন চলে গেল৷আর হাতে মাত্র ৭০টাকা আছে৷কি করব বুঝতেই পারছিনা৷এইদিকে কাজও পাচ্ছিনা৷একটা সময় টাকা দিতে না পারায় হোটেল থেকে বের করে দিল৷
রাতে থাকার জন্য একটু থাকার জায়গা পেলাম না৷প্রচন্ড শীত করছে৷তখন থাকা আর খাওয়ার জন্য আমার সখের ফোনটা বিক্রি করে দিলাম৷২৫হাজারের ফোন মাত্র ৫হাজার বিক্রি করে দিলাম৷
তারপর আবার হোটেলে গেলাম৷আর দিন পাচেক এই টাকা দিয়ে চললাম৷
১৫দিন হয়ে গেল অথচ কোনো কাজ পেলাম না৷আর ফোন বেচার টাকাও শেষ হয়ে গেল৷হোটেল থেকে বের করে দেবার আগেই রাস্তায় বের হয়ে গেলাম৷রাতের বেলা হাটা শুরু করলাম৷আর তখনই ভাবতে লাগলাম কেন বাসায় এমন করলাম?বাবা মায়ের কথা শুনলে আজ আমার এমন অবস্থা হয়তো হতোনা৷মাথার মনি হয়ে থাকত্ম৷ফোনও নেই ওদের খোজ খবর নিবো৷শোওয়ার জন্য জায়গা না পেয়ে অবশেষে রাস্তায় পথচারিদের সাথেই শুয়ে পরলাম৷নিজের এমন বেহাল অবস্থা দেখে একটু কান্না পাচ্ছিলো না৷বরং অনেক হাসি পাচ্ছিলো,বাবা মায়ের কাছে,এত সুখে থেকেও কেন এমন ভুল একটা সিদ্ধান্ত নিলাম৷কেন তাদের কথা শুনলাম না?
যাইহোক রাস্তায় শুয়ে আছি৷তখনই চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে আর ভাবছিলাম কেন এমন করলাম?
খিদের যন্ত্রনায় ঘুমও আসছিলো না৷
.
রাত প্রায় ২টা.
,
হঠাৎ কোনো একটা মানুষের চিৎকারের আওয়াজ পেলাম৷
প্রথমে ভুত ভেবে ভয় পেলেও পরে বুঝলাম একজন মানূষকে কয়েকজন আটকিয়ে ছিনতাই করছে৷আমি রাস্তার লাইটের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেলাম৷লোকটাকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে তখনও দৌড়ে ওনাকে বাঁচাতে গেলাম৷আর তখনই ছিনতাই কারিদের মধ্যে একজন আমাকেই পেটে ছুড়ি মেরে পালালো৷আমি যন্ত্রনায় লুটিয়ে পড়লাম
চোখ খুলতেই দেখলাম নতুন একটা পরিবেশে আমি৷চারদিকে তখন চোখ ঘূরাতেই অনেক দামি দামি আসবাব পত্র ,আর একদম রাজ প্রসাদের রুমের ভিতর যেন আমি শুয়ে আছি৷ভয় পেয়ে গেলাম৷আল্লাহ,এটা
কোথায় আছি আমি? যখনই উঠতে যাবো তখনই কারো আওয়াজ
.
–বাবা তোমার জ্ঞান ফিরেছে?আর তুমি উঠোনা,একদম চুপ করে শুয়ে থাকো,রেস্ট নাও(একটা ভদ্রলোক)
.–আপনি কে,আর আমি এখানে কিভাবে আসলাম?(কোনমতে বললাম)
.
–সেদিন রাতে তুমীই তো আমাকে গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচাইছো,আর আমাকে বাঁচাতে গিয়েই তোমার এই অবস্থা হইছে,তোমাকে গূন্ডারা ছুড়ি ডুকিয়ে দিয়েছিল৷ আর তখন অনেক রক্ত ঝরার ফলে তুমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলছো৷আর প্রায় আজ২৫দিন পর তোমার চোখে আলো ফুটেছে তোমার জ্ঞান ফিরেছে
.
(কিহহহহহহ ২৫দিন আমি অজ্ঞান ছিলাম????এতগুলি দিন কেটে গেছে অথচ আমার কাছে মাত্র একটা রাতের মতো মনে হইছে)
.–কি বলছেন?আমি ২৫দিন ধরে জ্ঞানহিন অবস্থায়? না এটা বিশ্বাস করিনা৷ঘতকালই তো আমি জ্ঞান হারিয়েছি
.
–না বাবা,তুমি দীর্ঘ ২৫দিন পরই জ্ঞান ফিরে পেয়েছো
.–তাহলে আংকেল এতগুলি দিন আপনাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি৷প্লীজ আমাকে মাফ করে দিবেন৷আর আপনার ঋন আমি কখনোই শোধ করতে পারবো না
.
–সে কি বাবা,এভাবে বলছো কেন?তুমি সেদিন আমার জীবন বাঁচিয়েছো,তুমি না থাকলে আমার জীবনের সাথে ২০কোটি টাকা গুন্ডারা নিয়ে নিত৷আর আমাকে বাঁচাতে গিয়েই তো তোমার এই অবস্থা,উল্টো তোমার ঋন কিভাবে শোধ করবো,সেটা আমি নিজেও জানিনা৷কিন্তু তুমি যা করেছো সত্যিই তা শোধ করার মত না
.–আচ্ছা আংকেল তাহলে ভালো থাকবেন৷,আমি চলে গেলাম
.
–আরে তুমি কি পাগল হয়ে গেছো নাকি?এই অবস্থায় চলে যেতে চাইছো?
আমি তোমাকে যেতে দিবো না।
.–না আংকেল,আমাকে যেতে হবে,আর আমি সূস্থ আছি,আর এখনি আমাকে কাজের জন্য বের হতে হবে
.–কাজ?কিসের কাজ?
.–কাজের জন্যই অনেকদিন ধরে ঘুরছিলাম,আর এমনিতেও অনেক দেরি হয়ে গেছে,আর কাজও পাচ্ছিনা
.–মনে করো কাজ হয়ে গেছে,তুমি এখন রেস্ট নাও
.–কাজ হয়ে গেছে?কোথায়?(অবাক হয়ে)
.
–তুমি সুস্থ হবার পর আমি নিজে তোমাকে কাজ দিবো৷আমার অনেক ফ্যাক্টরি আছে মিল আছে সেখানে তোমাকে একটা কাজ দিয়ে দিবো৷আর আমি আজকে একটু দেশের বাইরে যাবো৷ফিরতে সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগবে,আমি কাজের বুয়া আর রহিম ভাইকে বলে দিয়েছি,তোমার যা যা লাগবে তা তা ওদেরকে বলবে তারা তোমাকে তা এনে দিবে৷৷আর তুমি সুস্থ হলে যতটুকু পারো আমার বাসাটা দেখাশুনা করবা৷আমি বিদেশ থেকে না আসা আগ পর্যন্ত কোথাও যাবে ণা কিন্তু?ঠিক মত আমার কথাগুলো পালন করবা৷
.
(মনে মনে ভাবতে লাগলাম,এমনিতেও কোথাও কাজ পাচ্ছিনা,সাথে একটা টাকাও নেই,আর উনি আমাকে থাকতেও দিচ্ছেন আবার কাজও দিবেন,তাহলে সুযোগ কেন মিস করব?)
—কি হলো বাবা,চুপ কেন?
.–ঠিক আছে আংকেল,আপনি যেটা ভালো মনে করেন কিন্তু আমার কিছু কথা ছিল
.–হুম বলো বাবা
.–আংকেল,আপনি তো আমাকে চিনেন না জানেন না,আমিও তো অনেক বড় চোর বাটপার হতে পারি,আপনার সম্পত্তি দেখে লোভে পরে চুরি করতে পারি,তাহলে কোন ভরসায় আমাকে এত বড় দায়িত্ব দিচ্ছেন?
.
–হুম তা ঠিক,কিন্তু কেন জানি তোমাকে অনেক আপন মনে হচ্ছে,কেন জানি তোমাকে অনেক বিশ্বাসী মনে হচ্ছে,মনে হচ্ছে,তুমি আমার বিশ্বাস ভাঙবে না.
.
–দোয়া করবেন,আর আপনি আসার পর,আপনার বাসার যা যা আছে,সবকিছু গুনে গুনে আমার কাছ থেকে হিসাব নিবেন.
.
–হা হা হা,হাসালে,এই বাড়িতে কিছু আসবাব পত্র ছাড়া,তেমন কোনো টাকা পয়সা,বা মুল্যবান কিছুই নেই৷সবকিছুই সুরক্ষিত জায়গায় আছে৷আচ্ছা তাহলে তুমি এখন রেস্ট নাও
.আমার যাবার সময় হয়ে গেছে৷
.
বলেই উনি চলে গেলেন৷আর আমাকে রেস্ট নিতে বললেন৷আমি রেস্ট নিতে লাগলাম৷আর মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগল৷বাবা মা কেমন আছে?আজ নিজের ভুলের জন্য এত বড় শাস্তি পেলাম৷এর চাইতে বড় শাস্তি একটা সন্তানের কাছে কি হতে পারে,?নিজের বাবা কসম দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিল৷
এভাবেই কিছুদিন কেটে গেল৷এর ভিতর অনেকবার ডাক্তার এসেছিল,আমাকে অনেক চেক আপ করে অনেক ঔষধ দিলো৷আর আস্তে আস্তে আমি সুস্থ হয়ে গেলাম৷
সুস্থ হবার পর একদিন বেলকুনিতে বসে বসে হাওয়া খাচ্ছিলাম৷হঠাৎ নিচের দিকে চোখ গেল৷আর তখনই একটা শকড খেলাম৷চোখ দুটো আসমানে উঠে গেল৷কারন যে মেয়েটা আমাকে এর আগে অযথা থাপ্পর মারছে,সেই মেয়েটাই তো এই বাসার ভিতরে ডুকেছে৷
হায় আল্লাহ,গ্রাম থেকে আমাকে ধরার জন্য ওকে কেউ পাঠায়নি তো?আর এই মেয়েটা আমাকে দেখলেও তো প্রবলেমে পড়ে যাবো৷আগের ঘটনার মতই আমাকে ভুল বুঝে আবার মারবে৷না না আমি আর মাইর খাইতে চাইনা৷
তখন তাড়াতাড়ি বেলকুনি থেকে সরে গেলাম৷আর একটা রুমে গিয়ে লুকিয়ে পরলাম৷কোন রুমে ডুকছি বলতে পারব না৷তবে রুমটা অনেক সুন্দর আমি সোফার পিছনে বসে পরলাম৷আর তখনই সেই রুমেই একটু শব্দ শুনতে পেলাম৷আর আস্তে আস্তে চোখটা উপরে তুলতেই ভুত দেখার মত চমকে গেলাম৷কারন আমি যে ঘরে লুকাইছি মেয়েটাও তো দেখছি সেই ঘরেই আসছে৷এবার কি হবে আমার?আমাকে কি দেখে ফেলছে নাকি?ঠিক তখনই সব চিন্তার অবসান ঘটল৷কারন মেয়েটা রুমে এসে আলমারি খোলার চেষ্টা করতে লাগল৷তখনই আমার মনে হলো ,মেয়েটা মনে হয় চোর৷আর চুরি করতেই এই খালি বাসায় ডুকেছে৷না আর লুকিয়ে থাকলে চলবে না৷চোর ধরতে হবে৷আমাকে আমার দায়িত্ব পালন করতে হবে৷যেই ভাবা সেই কাজ৷হাতে একটা চাদর নিয়ে পিছন থেকে ওর মাথা আর চোখের মধ্যে দিলাম একটা প্যাচ৷তারপরই চোর চোর করে চিল্লানি দেওয়া শুরু করলাম৷কিন্তু দুঃখের বিষয় কাজের বুয়া আর রহিম চাচার কোনো সাড়া পেলাম না৷তাই মেয়েটাকে হাতে বাধা শুরু করলাম৷মূখে তখনও চাদর দিয়েই বাধা৷
ওর মুখ থেকে,শব্দ আসতে লাগল
,
–আউউউআ আ আআ,উমমমম উমম আ আ উ উ
.
—চোরনি কোথাকার,কি ভেবেছিলি,চুরি করে আরামে পালিয়ে যাবি?কিন্তু দেখেছিস এই আরমান কেমন?বিড়াল যেমন ইদুর ধরতে পারদর্শী ঠিক এই আরমান ও তাই
.
–আউ আ উমমম উমমমম আ
.
–অনেক মজা তাই না,এইবার কই যাবি?তোকে আমি শীতের ভিতর ঠান্ডা পানি দিয়া ভিজাইয়া দিমু৷শীতে আরও উহু উহু করবি,ইসসসসস কত মজা হইবো,,এটাই তোর চুরি করার শাস্তি হি হি হি
.
–উম উম উম(ইশারা দিচ্ছে ওর মুখের বাধন খুলে দিতে ও আমাকে কিছু বলতে চায়)
.–তোর মূখের বাধন খোলা যাবে না,খুললেই মিথ্যা বলা শুরু করবি.
.–উমমম উমম অমমম(কান্না করে দিছে,আর ইশারা করছে মুখের বাধন খুলতে)
.–যাককক,তোর প্রতি একটু মায়া লাগছে,মুখের বাধন খুললেও রাতের বাধন খূলবো না
.
বলেই মুখের বাধন খুলে দিলাম,আর তখনই রকেট গতিতে ওর মুখ থেকে বের হতে লাগল
.–নোংরা,ছোটলোক,কুত্তা ,বিলাই,হারামী
,বান্দর,ইভট,লুইচ্ছা ,বদমাইশ,খাটাই……… উমম উমমম অমম আমমমমমম
.–তোর মূখের বাধন খূলে দিছি বলে তুই এগূলো বলবি?আবার মূখের বাধন লাগিয়ে দিছি,এবার আমাকে গালি দে৷
হি হি হি
.
বলেই নিচে গেলাম৷খুব খুদা লাগছে৷কিন্তু গিয়ে তো বুয়া আর রহিম চাচাকে পেলাম না৷কোথায় গেল আবার ওরা?খিদে তে পেট চো চো করছে৷আজ এত বড় একটা কাজ করেছি,হাতে নাতে চোর ধরেছি আর যেই শক্তি ক্ষয় হইছে ওই মহিষের মত চোরটাকে ধরতে,খিদে তো পাবেই৷যাই হোক চোর মেয়েটাকে কিন্তু দেখতে একদম ঝাক্কাস,যেমন চেহারা তেমন তার রুপ৷কি কারনে যে এত সুন্দর চেহারা নিয়ে চূরি করে বুঝিনা৷
যাই হোক খাবার রুমে গেলাম৷দেখলাম অনেক খাবার আছে৷তাই পেটপুরে খেয়ে নিলাম৷ সময় গড়িয়ে রাত হয়ে আসছে৷আর যখন রাতে খেতে যাবো৷ঠিক তখনই চোরটার কথা মনে পড়ে গেল৷বেচারি চোর মেয়েটা তো দুপুর থেকে না খেয়ে আছে৷আগে ওকে খাইয়ে দিয়ে আসি৷
তারপর না হয় আমি খাবো৷
যেই ভাবা সেই কাজ৷খাবার নিয়ে ওপরে গেলাম৷দেখলাম ও ঘুমীয়ে আছে৷ইসসসস কত্ত সুন্দর লাগছে ওকে৷একদম মায়াবতি৷
যাই হোক খাবার সামনে নিয়ে ডাক দিলাম৷
.
–এই চোর,চোররররর,এই চোররররর
.
তখনি ও জেগে উঠল, আর আমাকে দেখেই আমার ওপর ঝাপিয়ে পরতে চাইল৷ভাগ্য ভালো হাত বাধা ছিল৷আর হাতে কিছু করতে না পেরে গরুর মতো মাথা দিয়া গুথা দিতে আসল৷একদম জঙ্গলি গরুর মত৷
.
–ওই মাইয়া,একে তো চুরি করতে এসেছিস,তার ওপর ধরা খেয়ে আমাকে গুতা দিতে আসছীস?তোর শিং থাকলে তো আমার পেট ফুটা করে ফেলতি.
,–আমমম উমম আমমঅ অঅঅমম
.–দাড়া খুলি দিচ্ছি
.বলেই মুখটা খুলে দিলাম৷কারন ওকে খাওয়াতে হলে মুখ খুলে দিতেই হবে৷
মুখ খূলতেই.
.
–এই ছোটলোক,তুই কে?আর আমাকে বেধেছিস কেন?
.–বাব্বাহহহহহহ,চোরের মূখে এত সুন্দর কথা,ওনাকে বেধেছি কেন?চুরি করে আবার বড় গলা,যাকে বলে চূরের মায়ের….
.—হাও ডীয়ার ইউ?
,–এইডার মানে কি গো?
.–মূর্খ ছোটলোক,আমাকে ছেড়ে দে,নয়ত তোকে আমি মেরে ফেলব
.
–ওরে বাবা রে ভয় পাইছি, হে হে হে,ওই চোরনি একদম চুপ৷খাবার খাবি না?
আর তখনই খাবারের কথা শুনে,অসহায়ের মত
–হুম খুব,খিদা পাইছে,আমাকে কিছু খেতে দে না
.–হুম,এই নে খাবার(খাবার বাড়িয়ে দিলাম)
.–হাতটা খুলে দাও,নয়ত খাবো কিভাবে?
.
–এহহহহ হাত খুলে দেই,আর তুই আমাকে মেরে পালা,দরকার নেই,দরকার পড়লে তোকে খাইয়ে দিবো৷তারপরও হাত খুলে দিব না
,–তোর ওই নোংরা হাতে আমি খাবো না
.–তাহলে বইসা.না খাইয়া মর
,–এই না,একদম এমন করবি না,আমার অনেক খিধে পাইছে৷আর তুই জানিস আমি কে?
.–হুম৷একটা চোর
.
–আমি চোর না,আমি এই বাড়ির মালিক
,–হা হা হা,ওই চুপ করে খাইলে খা,নয়ত আমি গেলাম৷মালিক আসছে আমার???হুহহহ
.-আমি সত্যি বলছী,আমি এই বাড়ির মেয়ে.
,
–আমার তো খাইয়া দাইয়া কাম নাই,
তোর কথা বিশ্বাস করমু৷চোর একটা তারপরেইতো…….
চলবে…………….