অফিসের বস যখন রোমান্টিক বউ পর্ব-০৭


রিদি আমার দিকে তাকিয়েই আছে।
আমি রিদির দিকে তাকিয়ে..
আমি: ম্যাম…

কোনো সাড়া না দিয়ে গালে হাত দিয়েই আছে।
আমি এবার হাত নেড়ে…..
আমি: ম্যাম….
এবার হুঁশ ফিরে গেলো রিদির
রিদি: জ্বি জ্বি।
আমি: কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলেন শুনি?
রিদি: আপনার কথার মাঝে।
আমি: তাই নাকি।

__রিদি এবার লজ্জা পেয়ে চোখের পাতাগুলো মিটিমিটি করে হাল্কা হেসে,,,,,,,
রিদি: জ্বি।
আমি: ম্যাম একটা কথা বলি….
রিদি: জ্বি বলেন তবে আমাকে ম্যাম বলবেন না প্লিজ।
আমি: কেন?
রিদি: আমি আপনার থেকে ছোটো তাই ম্যাম বলবেন না, আর আমাকে আপনি বলবেন না।
আমি: ওকে তবে তুমিও আমায় তুমি বলবে তাহলেই আমি বলবো।
রিদি: আচ্ছা বাবা (একটু হেসে বলল)

__আরো কিছুক্ষন কথা বলে এবার অফিসের দিকে রওনা দিলাম, অফিসের কিছু কাজ সেরে বাসায় এলাম, চেঞ্জ করেই শীতলের দোকানে গেলাম। রাত দশটার দিকে বাসায় ফিরে রান্নার আয়োজন কর‍তে লাগলাম, এদিকে ইউটুবে ভিডিও চলছে কুকিং এর। মানে ভাত কিভাবে করে,,,,,

_হঠাৎ ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠল, আমি মোবাইলের দিকে তাকাতেই দেখি রিদি কল দিয়েছে, আমি রিসিভ করে লাউন্ডে রেখে…..
আমি: হ্যালো…
রিদি: হুম কি করো?
আমি: এই তো রান্না করছি।
রিদি: বাহ, আমি তাহলে অনেক লাকি হবো তাই না বরের হাতে রান্না খাবো। কি মজা।
আমি: তুমি লাকি মানে?
রিদি: আরে না না ওটা ওটা ওটা বৌ মানে তোমার বৌ অনেক লাকি হবে।
আমি: জ্বি সেতো হবেই। আমার মতো বর পেলে কোনো মেয়েই আনলাকি থাকবে না। কারন আমি ভাত রান্নাও করি ইউটিউব দেখে,,,,,,,

সাথে সাথে রিদি হাহাহা করে হেসে….
রিদি: তাই নাকি।
আমি ফারিয়াকে….
আমি: উফফফ দেখলেন তোমার জন্য আমার হাত পুড়ে গেলো।
হিহিহি এটা পুরাই পাম, আমার কিছুই হয়নি।
রিদি: দেখে কাজ করবা তো, কি করে পুড়লো? উফ এতো টুকুও খেয়াল রাখতে পারো না নিজের।
আমি: তোমার হাসির মায়াবী শহরে ঢুকে গিয়ে স্বপ্ন বুনায় বিজি ছিলাম তো কখন যে হাতটা আগুনের কাছে চলে গেছে বুঝতে পারিনি।
রিদি: উফ খুব লেগেছে তাই না।
আমি: জ্বি অনেক।
রিদি: ওকে আমি তাহলে তোমাদের বাসায় যাচ্ছি।
আমি: কেন?
রিদি: লুডো খেলতে যাবো,,,,,,
আমি: সত্যি,,,,,,
রিদি: ফাজিল ছেলে একটা, রান্না করে দিয়ে আসবো।
আমি: ইশশ, আমি কতো লাকিরে, বসের মেয়ের হাতে স্পর্শ করা রান্না খাবো।
রিদি: উম এতো খুশি হওয়া লাগবে না।
আমি: কেন আসবা না নাকি?
রিদি: জ্বি না, আমি খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি ড্রাইভারকে দিয়ে।
আমি: অক্সিজেন না পেলে খাবার নিয়ে কি করবো শুনি (একটু মন খারাপ করে)
— মানে?
আমি: তোমায় দেখলে আমার শ্বাস প্রশ্বাস চলে তারমানে তোমার মায়াবী হাসির চেহারটা আমার হার্টে অক্সিজেনের থেকেও বেশি গুরুত্ব।
রিদি: হাহাহা তাই।
আমি: জ্বি, বলছি আসলে কিন্তু একটা সারপ্রাইজ আছে শুনি?
রিদি: কি সারপ্রাইজ?
আমি: উম আগে আসো তারপর।
রিদি: না নাঈম পসিবল না আব্বু বাসায় আছে তো?
আমি: আসো না আমি রান্না করতে পারছি না তো, তুমি যদি একটু শিখিয়ে দাও তাহলে বেশ হয়।
রিদি: হাহাহাহা পাগল একটা, আমি যেতে পারবো না সরি নাঈম।
আমি: তাহলে তখন কেন বললে (একটু রেগে গিয়ে বললাম)
রিদি: হিহিহি তোমায় রাগানোর জন্য।
আমি: রাখলাম বাই,,,,,,,,

__এটা বলেই আমি ফোন কেটে দিলাম, শালা আমার সাথে মজা,
কুকারে ভাত রান্না হচ্ছে। আমি কিচেনেই বসে PUBG লাগিয়ে দিলাম। আহা সব কষ্টের সুখ এই এক জায়গাতেই, শালা সিঙ্গেল মানুষকেও এ প্রেমিক বানিয়ে ফেলে, পাব্জি প্রেমিক,,,,,,

_টানা দুই ঘন্টা খেলার পর এনিমিকে ছান্তা ছুড়ে মারার সময় মনে পড়লো এইরে গ্যাসে তো ভাত রান্না হচ্ছে। আমি সাথে সাথে ফোন পাশে রেখে কুকারের কাছে যেতেই দেখি শালা ভাত কোথায়, এতো পুরাই ভাতের ফ্যান। ধুর শালা আবার রান্না করতে হবে, ধ্যাত খাবোই না। রেগে আমি বেডে বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়লাম। শালা খিদেই পেটটা চিনচিন করছে। আবারো কিচেনে গেলাম, কিছু বিস্কুট খেয়েও দেখি পেট বাবাজির এখনো শান্তি হল না। শালার পেটের ইঁদুর কুত্তা হারামি শালারা কম লাফাই না। ভাইরে পেটটাতে আমার এখন ডিজি গান বাজনা শুরু হয়ে গেছে, পুই পাই চু চাই শব্দে। এটা রেকর্ড করে র‍্যাপ বাজালে হেব্বি শুনতে লাগবে কিন্তু।

__আমি সোফায় এসে চুপচাপ বসে আছি মাথাটা উপর করে, শালা ভাত তো আর আমি বানাবোই না, কি করা যায় কি করা যায়। আইডিয়া….

__রিদি তখন ফোনে বললো ও নাকি খাবার পাঠাবে, ওকেই ফোন করে বলি ও যদি আনে। শালা রাতও অনেক হয়েছে, ফোন করলে রিসিভ করবে তো।
আল্লাহ আল্লাহ বলে ফোন লাগিয়ে দিলাম, দেখি কিছু রিং হওয়ার পরেই ফোন রিসিভ করলো…..
রিদি: হ্যালো… (ঘুমের ঘোরে)
আমি: জ্বি আমি নাঈম বলছি, মাইরি একটা বিপদে বড়ো গেছি প্লিজ উদ্ধার করো, আমায় না এরা মেরে ফেলবে প্লিজ (কেঁদো কেঁদো কন্ঠে)
রিদি কেমন ভয় পেয়ে….
রিদি: কি হয়েছে নাঈম তোমার, কারা মেরে ফেলবে? কি হলো বলো চুপ কেন?
আমি: বিপদ বলতে টানা দুইঘন্টা পাব্জি খেলার পর কুকারে গিয়ে দেখি ভাত নাই শুধু ভাতের ঝোল, আর এদিকে এই শালা পেড়ের ইঁদুর গুলো আমায় মেরে ফেলবে পেটের ভেতরে এমন লাফিয়ে লাফিয়ে ডিজে বক্সে রিমিক্স করা শুরু করেছে।

রিদি পুরাই রেগে আগুন হয়ে গেলো,
রিদি: এই কুত্তা, এভাবে বলার কিভাবে আছে হুম, জানিস আমি কতো ভয় পেয়েছিলাম। তুই না খেয়েই মর।
আমি: ও হ্যাঁ তাই তো, আমি তো ভুলেই গেছিলাম আমি তো তোমার অফিসের একজন ক্লাইন্ড, ঠিক আছে মরে যাবো, কচু গাছে গলায় দড়ি দিয়ে।
রিদি আর না হেসে পারলো না….
রিদি: আমি খাবার নিয়ে যাচ্ছি। ড্রাইভারও তো নেই আমাকেই যেতে হবে।
আমি: ওমা তুমি আসবা, দেখে আসবা কিন্তু।
রিদি: কেন?
রিদি: চাঁদকে সবাই দেখতে এই রাতে আজ আবার পূর্নিমা নয় আজ অমাবস্যা, আর এই অমাবস্যাতে আমিই একমাত্র চাঁদ দেখবো। আর হ্যাঁ কাঁচ লাগিয়ে আসবা কেউ দেখলে অসুবিধা আছে। মুখে পারলে রুমাল বেঁধে নিও।
রিদি: উফ রাখলাম, হিহিহি।

পাঠক-পাঠকীরা পর্ব টা কেমন হল কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন, আর লেখার মধ্যে ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,,,,,,

————–চলবে না দৌড়াবে————–

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *